কাপ্তাই সুইডেন পলিটেকনিকের ছাত্র ও জনতার সংঘর্ষ: আহত-১৮

কাপ্তাই সুইডেন পলিটেকনিকের ছাত্র
ও জনতার সংঘর্ষ: আহত-১৮

॥ কাপ্তাই সংবাদদাতা ॥ রাঙ্গামাটি কাপ্তাই সুইডেন পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ছাত্র ও জনতার মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। দুই পক্ষের সংঘর্ষে ছাত্র, জনতা ও পুলিশসহ ১৮ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ, বিজিবি ও সেনা মোতায়েন করা হয়েছে।
সুত্রে জানা গেছে, শনিবার (৩ ডিসেম্বর) দুপুর ১২টা দিকে লগগেট পেট্রোল পাম্প এলাকায় ইনস্টিটিউটের কিছু শিক্ষার্থী ও নতুনবাজার এলাকায় জনতার মধ্যে কিছু বিষয় নিয়ে প্রথমে কথা কাটাকাটি হয়। কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে দুই পক্ষের হাতাহাতির মধ্যে জড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনা ইনস্টিটিউটে ছড়িয়ে পড়লে ছাত্ররা ইনস্টিটিউট থেকে বের হয়ে জনতার সাথে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। প্রায় পৌনে এক ঘন্টার মতো দু’পক্ষের মধ্যে ইট, পাথর, লাটিসোটা ও লোহার রড নিয়ে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া চলে। এ সময় সকল ধরনের দোকানপাট, যানবাহান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। খবর পেয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষ সামাল দিতে প্রথমে পুলিশ রাবার বুলেট, টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। পড়ে বিজিবি ও সেনাবাহিনী ছুটে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে।
এদিকে দুই পক্ষের সংঘর্ষ চলাকালে কাপ্তাই ইউপি চেয়ারম্যান প্রকৌশলী আব্দুল লতিফ আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। সংর্ঘষে ১৮ শিক্ষার্থী আহত হওয়ার খবর জানান ছাত্ররা। আহতরা হলো রবিউল, রূপক, জামশেদ, উমং, রাজিব, রফিক, শাহারিয়ার, ফিরোজ, সাজ্জাদ, শিফার, মোজাম্মেল,  আবদুল গনি, শরিফ হোসেন, বাধন, রানা, কৌশিক,  জাহেদ। আহতদের কেউ কেউ স্থানীয় হাসপাতালে আবার কেউ প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে চলে গেছে।
এ ব্যাপারে সিএনজি সমিতির সভাপতি সোবাহান বলেন, ছাত্রদের ঘটনা ঘটেছে অন্যদের সাথে কিন্তু  অন্যায়ভাবে আমাদের তিনটি সিএনজির গ্লাস ভাংচুর করে এবং আমাদের ৪জন চালক আরাফাত, রুবেল, ইকবাল ও ওসমানকে মারধর করে আহত করেছে। এর মধ্যে শাহ আলম নামের একজনের মাথায় পাথর নিক্ষেপ করে গুরুত্বর আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এদিকে দু’পক্ষের উত্তেজনায় পলিটেকনিকের কম্পিউটার বিভাগের দরজা-জানালায় পাথর নিক্ষেপ করে ভাংচুরের খবর জানান কম্পিউটার বিভাগের এক শিক্ষক।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রে আনার জন্য ১৯-বিজিবি অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল আশরাকুর রাহাত ছিদ্দিক, পলিটেকনিক অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান, সংরক্ষিত মহিলা এমপির প্রতিনিধি ইব্রাহিম খলিল, নতুনবাজার কমিটির সভাপতি কাজী সামসুল ইসলাম আজমির, সম্পাদক হাজী কবির আহমেদ, ছাত্রপ্রতিনিধি সাজ্জাদ, জোনায়েদ ও আইন-শৃঙ্খলাবাহিনীর নেতৃবৃন্দ ও শিক্ষকদের নিয়ে অধ্যক্ষর কক্ষে জরুরী সভা করে। সভায় মাদক নিয়ে কথাকাটাকাটির জের ধরে দু’পক্ষের সংর্ঘষ হওয়ার খবর ওঠে আসে। এলাকার মাদক ব্যাপকভাবে বিস্তার হওয়ার দরুন এ মাদক নিয়ে ঘটনার সূত্রপাত ঘটেছে বলে ছাত্র প্রতিনিধিরা উল্লেখ করেন।
ছাত্ররা বলেন, এলাকার কিছু উশৃঙ্খল যুবক মাদক নিয়ে এলাকায় ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। এতে ছাত্র ও এলাকার লোকজন বিপথগামী হচ্ছে। আমরা মাদক ব্যবসায় বাঁধা দিতে যাওয়ায় উক্ত ঘটনার ঘটে। আমরা এসব অভিযুক্তদের চিহ্নিত করে চিহ্নিত ব্যক্তিদের বিচার চাই।
বিজিবি অধিনায়ক বলেন, আমরা এর ব্যবস্থা নিব, তবে কোন ধরনের উশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি করা যাবেনা। আমরা পরিস্থিতি শান্ত রাখতে চাই। ছাত্রদের উদ্দেশ্য অধিনায়ক বলেন, তোমাদের কেউ কিছু বললে বা মাদক বহন করতে বাধ্য করলে সরাসরি আমাকে খবর দিলে আমি ব্যবস্থা নিব। এমনটা আশ্বাস দিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেন তিনি।
এদিকে কাপ্তাই থানার ওসি রঞ্জন কুমার সামান্ত’র নিকট জানতে চাইলে তিনি জানান, ঘটনাটি ঘটেছে বাজারে আশা যাওয়াকে কেন্দ্র করে স্থানীয় জনতার সাথে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে এবং যেকোন অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতি মোকাবেলায় এলাকায় সেনা, বিজিবি ও পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।

Archive Calendar
Sat Sun Mon Tue Wed Thu Fri
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930