প্রিয়জনদের সঙ্গে ঈদুল ফিতরের ছুটি কাটাতে দলে দলে চট্টগ্রাম ছাড়ছে মানুষ। রেলস্টেশন, বাসস্টেশন সবখানেই মানুষের চাপ।
সরকারি বন্ধ এবং ঈদের ছুটি মিলিয়ে গত চারদিনে অনেকেই নাড়ির টানে বাড়ি ফিরে গেছেন। তবে কাছের জেলা-উপজেলার মানুষগুলোও চট্টগ্রাম ছাড়তে শুরু করায় নগরী অনেকটাই ফাঁকা হয়ে গেছে।
আবার যাদের ঈদুল ফিতর পালনের ব্যস্ততা নেই তাদের অনেকেই ঈদের ছুটি কাটাতে বিভিন্ন পর্যটন স্পটের উদ্দেশ্যে চট্টগ্রাম নগরী ছেড়েছেন।
নগর পুলিশের বিশেষ শাখার সহকারি কমিশনার কাজেমুর রশিদ বলেন, মূলত সোমবার থেকেই লোকজন দলে দলে গ্রামে পরিবারের কাছে ফিরে যেতে শুরু করেছে। মঙ্গলবার আরও বেড়েছে। নগরীতে আস্তে আস্তে মানুষের চাপ কমছে।
মঙ্গলবার সকালে নগরীর রেলস্টেশনে গিয়ে ঘরমুখো মানুষের মোটামুটি ভিড় দেখা গেছে। ঘরে ফেরা নারী-পুরুষ, শিশুদের মধ্যে উচ্ছ্বাসের কমতি নেই। দেখা গেছে মোটামুটি স্বস্ত্বির পরিবেশও।
হালকা ভিড় এড়িয়ে পরিবার-পরিজন, লাগেজ নিয়ে মানুষ উঠছেন ট্রেনে। আর সঠিক সময়ে ট্রেনের যাত্রা শুরু হওয়ায় মানুষের মধ্যে তেমন ভোগান্তিও নেই।
রেল কর্মকর্তা মো. জাকির হোসেন যাচ্ছেন ঢাকায়। সেখান থেকে যাবেন টাঙ্গাইলে গ্রামের বাড়িতে।
তিনি বলেন, গ্রামে যাচ্ছি। ঈদের সময় গ্রামে গেলে সবার সঙ্গে একটু দেখাসাক্ষাৎ হয়। গ্রামের মানুষের সঙ্গে, পরিবারের লোকজনের সঙ্গে একটু আনন্দফূর্তি করতে পারি।
স্বামী, সন্তান নিয়ে সিলেট যাচ্ছেন গৃহিণী নাসরিন আক্তার। তিনি বলেন, সবার সঙ্গে মিলেমিশে ঈদ করতে যাচ্ছি। অনেক খুশি লাগছে। এবার পরিবেশ অনেক ভাল। ভালভাবেই যাত্রা করতে পারছি।
ঈদুল ফিতর পালন করতে বাসে রংপুরে গ্রামের বাড়িতে যাচ্ছেন নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ কমিশনার (দক্ষিণ) শাহ মো.আব্দুর রউফ। তিনি বলেন, আমার স্ত্রী-সন্তান আগেই বাড়িতে চলে গেছে। আমার ছুটি আজ (মঙ্গলবার) থেকে। আমিও রওনা দিলাম। বাড়িতে সবার সঙ্গে ঈদ পালন করব।
নগরীর বায়েজিদ বোস্তামি থানার ওসি মোহাম্মদ মহসিন স্ত্রী-সন্তান নিয়ে ঈদ করতে গেছেন গোপালগঞ্জে গ্রামের বাড়িতে। মহসিন বলেন, আমার বাবা নেই। বৃদ্ধা মা অপেক্ষা করে বসে থাকেন ছেলে ঈদে বাড়ি আসবে। গত ঈদেও রওনা হয়েছিলাম। কিন্তু পথে সড়ক দুর্ঘটনায় পড়ে মায়ের সঙ্গে দেখা করতে পারিনি। অনেকদিন পর মাকে একটু দেখব
সোমবার বিকেলে নগরীর লালখান বাজার থেকে পটিয়ায় গ্রামের বাড়িতে ঈদুল ফিতর পালনের জন্য গেছেন নারীনেত্রী ও সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মাজেদা বেগম সিরু। সঙ্গে নিয়ে গেছেন স্বামী এবং দুই সন্তানকেও।
মাজেদা বেগম সিরু বাংলানিউজকে বলেন, আমাকে নিয়মিত এলাকায় যেতে হয়। তবে লেখাপড়ার কারণে সন্তানদের তেমন একটা নিয়ে যেতে পারিনা। চাকরির কারণে আমার স্বামীও কমই যান। তবে প্রতি বছর ঈদটা আমরা গ্রামের বাড়িতেই পালন করি।
স্ত্রী স্কুলশিক্ষিকা ইভা গোমেজ এবং দুই সন্তানকে নিয়ে মঙ্গলবার খাগড়াছড়ির সাজেকের উদ্দেশ্যে চট্টগ্রাম ছেড়েছেন কারিতাস চট্টগ্রাম অঞ্চলের পরিচালক জেমস গোমেজ।
জেমস গোমেজ বলেন, পরিবার নিয়ে এর আগে কখনোই সাজেক যাওয়া হয়নি। তাই এবার সিদ্ধান্ত নিয়েছি সাজেকেই ঈদের ছুটিটা কাটাব।
জেমস গোমেজদের পাশাপাশি স্কুলশিক্ষিকা সুমি সরকার, আইনজীবী বিজয়শ্রী দত্তও স্বামী-সন্তানদের নিয়ে মঙ্গলবার সাজেকের উদ্দেশ্যে চট্টগ্রাম ছেড়েছেন।
