ঢাকায় ‘সংবিধানের আলোকে পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন আইন’ শীর্ষক অলোচনা সভা

ঢাকায় ‘সংবিধানের আলোকে পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন আইন’ শীর্ষক অলোচনা সভা

সন্তু বাবুরা (সন্তু লারমা) কমিশনকে সহায়তা করলে সেখানকার সমস্যা সমাধান হয়ে যায়। কিন্তু ওরা কোন সহায়তা করছে না বলে মন্তব্য করেছেন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি ও পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান খাদেমুল ইসলাম চৌধুরী।
তিনি বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের ভূমি বিরোধ সমস্যা কোনো আদিবাসী সমস্যা না। বাংলাদেশে কোনো আদিবাসী নেই। সংবিধান ও চুক্তি অনুযায়ী পার্বত্য চট্টগ্রামে যারা আছেন তারা আদিবাসী নয়, উপজাতি হিসেবে ওখানে আছেন।
শুক্রবার (২৩ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘সংবিধানের আলোকে পর্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন আইন’ শীর্ষক এক অলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
সিএইচটি রিসার্চ ফাউন্ডেশন আয়োজিত আলোচনা সভায় ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মেহেদী হাসান পলাশের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম বীর প্রতীক। এছাড়া বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, সংসদ সদস্য ফিরোজা বেগম চিনু ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সারোয়ার হোসেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে খাদেমুল ইসলাম আরো বলেন, বাঙালিরা বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে সেখানে (পার্বত্য চট্টগ্রাম) বসবাস করছে। সেখান থেকে তাদের উৎখাত করার অধিকার কারও নেই। পাহাড়ে বাঙালি যারা আছে তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত করা যাবে না।
পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে বাঙালিদের উচ্ছেদে জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমার (সন্তু লারমা) ভূমিকার তীব্র সমালোচনা করে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. তারেক শামসুর রেহমান বলেছেন, সন্তু লারমা চান না, পার্বত্য চট্টগ্রামে বাঙালিরা থাকুক। তাকে (সন্তু লারমা) এই অধিকার কে দিয়েছে? ওই ব্যক্তি কিভাবে ওখান থেকে বাঙালিদের সরে যেতে বলে? তিনি কোন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি নন। তার বাংলাদেশের আইডেন্টিটি নেই। মুক্তিযুদ্ধের সময় তার ভূমিকা কি ছিল তাও কেউ জানে না।
তিনি বলেন, বাংলাদেশিদের পাহাড়ে থাকতে দিতে হবে, সেখান থেকে তাদের কোনেভাবেই উচ্ছেদ করা যাবে না।
সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম বীর প্রতীক বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি নিষ্পত্তি কমিশন আইনের বিভিন্ন ধারা সাংঘর্ষিক। এই আইন বৈষম্যমূলক ও বাঙালিদের স্বার্থ বিরোধী।
তিনি বলেন, কমিশন আইনের ৩(২) ধারার ফলে পার্বত্য ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশনে পার্বত্য বাঙালিদের অংশগ্রহণের কোন সুযোগ নেই। আইনের ১৩ ধারার ফলে পার্বত্য ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশনের সচিবসহ অধিকাংশ স্টাফদেরও উপজাতীয়দের মধ্য থেকে নিয়োগ করতে হবে, এটি বৈষম্যমূলক।
আইনের বিভিন্ন ধারায় এ ধরনের আরও বৈষম্য রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, পাহাড়ে বাঙালিদের বসবাসের অধিকার দিতে হবে। বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে একজন যেমন দেশের বিভিন্ন স্থানে বসবাসের অধিকার পায়, পাহাড়েও সেই অধিকার দিতে হবে।
সংসদ সদস্য ফিরোজা বেগম চিনু বলেন, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় তাদের (পার্বত্য চট্টগ্রামের উপজাতি) একটি বৃহৎ অংশ পাকিস্তানের পক্ষে ছিল। দেশ স্বাধীন হওয়ার পরও ১৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত তারা পাকিস্তানের পতাকা উড়িয়ে রেখে ছিল। সন্তু লারমা এখনো পর্যন্ত বাংলাদেশের ভোটার হননি। তিনি বাংলাদেশের নাগরিক কি না, তাও আমরা জানি না।

Archive Calendar
Sat Sun Mon Tue Wed Thu Fri
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930