পাহাড়ে প্রাকৃতিভাবে উৎপাদিত মসলা জাতীয় চুইগাছ যাচ্ছে দেশের বাইরে বাণিজ্যিকভাবে চাষের সম্ভাবনা

পাহাড়ে প্রাকৃতিভাবে উৎপাদিত মসলা জাতীয় চুইগাছ
যাচ্ছে দেশের বাইরে বাণিজ্যিকভাবে চাষের সম্ভাবনা
॥ সোহেল রানা দীঘিনালা ॥ পার্বত্যাঞ্চলের পাহাড়ে প্রাকৃতিকভাবে উৎপাদিত হচ্ছে মসলা জাতীয় উদ্ভিদ চুই। একসময়ে এটি বন্য লতা নামে পরিচিতি থাকলেও বর্তমানে এটি সুস্বাধু খাবার হিসেবে বেড়েছে এর চাহিদা ও কদর। পাহাড়ের স্থানীয় জুমচাষীরা জঙ্গল থেকে সংগ্রহ করে নিয়ে আসছেন বাজারে। পাহাড়ের সংগ্রীগিত চুইগাছ যাচ্ছে সারাদেশে।
স্থানীয়রা চুইগাছ সর্ম্পকে জানাযায়, চুইগাছ মসলা জাতীয় অপ্রচলিত উদ্ভিদ। এটি লতা জাতীয় উদ্ভিদ। এর কান্ড ধূসর এবং পাতা পান পাতার মত সবুজ রঙের। এর কান্ডটিই মসলা হিসেবে ব্যবহৃত হয়। চুইগাছ সাধারনত দুই প্রকারের হয়। একটির কান্ড আকারে যা আকারে ২০ থেকে ২৫ সেন্টিমিটার  এবং অন্যটির আকার ২.৫ সেন্টিমিটার থেকে ৫সেন্টিমিটার পর্যন্ত মোটা হয়। চুইগাছ সাধারনত ৮ থেকে ১০ মিটার পর্যন্ত লম্বা হয়।
চুই গাছ জমিতে অথবা গাছের গুড়িতে চাষ করা যায়। এটি চাষের জন্য  দো-আঁশ ও বেলে দো- আঁশ মাটিতে পানি নিষ্কাশন সুবিধাজনক স্থানে ভালো জন্মায়। তবে পাহাড়েরর মাটিও চুই চাষের জন্য উপযোগী। বৈশাখ  জৈষ্ঠ মাসে এবং আশ্বিন-কার্তিক মাসে কাটিং পদ্ধতিতে কান্ড সরাসরি মাটিতে রোপন করা হয়। চুঁই চাষের জন্য আলাদা মাচা তৈরী করতে হয় না। যেকোন বৃক্ষ জাতীয় গাছ আম, কাঁঠাল, জাম, সুপাারি, নারিকেল ও জিয়ল গাছের গোড়ায় রোপন করলে এক বছরের মধ্যেই খাওয়ার উপযোগী হয়।
ঔষধিগুণ সম্পন্ন মুখরোচক এ চুঁইশ্লেষ্মানাশক, গায়ে ব্যথা উপশমে কার্যকর। এটি হজমিকারক হিসেবে বেশ সহায়ক। সাধারনত মাংসের সাথে এ চুইগাছ ব্যবহার করা হয়।
তবে পাহাড়ে বসবাসরত জুম চাষীরা, জুম চাষের সুবাদে প্রাকৃতিকভাবে উৎপাদিত এসব চুঁইগাছ সংগ্রহ করে থাকেন। পরে তা আটি বেঁেধ নিয়ে আসেন স্থানীয় বাজারে।
চুইগাছ বিক্রি করতে আসা দীঘিনালা উপজেলার যতিন ত্রিপুরা জানান, প্রতি বছর জুমের জমি তৈরীর সময় চুই পাওয়া যায়। এসব চুঁই প্রাকৃতিকভাবে উৎপাদিত।
স্থানীয় পাইকার ব্যবসায়ী মো. জামাল হোসেন জানান, স্থানীয় বিভিন্ন বাজার থেকে আমরা ৪০টাকাকেজি দরে ক্রয় করে থাকি। পরে তা আমরা শহরের অভিযাত হোটেলগুলোতে প্রতিকেজি ২০০/৩০০টাকা কেজি হারে বিক্রি করা হয়। পাহাড়ের চুইগাছ সমতলে ব্যপক চাহিদা রয়েছে।
দীঘিনালা হটিকালচার সেন্টারের উপ-সহকারী উদ্যান তত্ত্ব কর্মকর্তা মোঃ সেলিম জাবেদ জানান, পাহাড়ের মাটি ও আবহাওয়া চুইগাছ চাষের উপযোগী। প্রাকৃতিকভাবে উৎপাদিত চুই সংগ্রহ করে সারা দেশে নিয়ে যাচ্ছে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। চুইগাছ তামাকের বিকল্প হিসেবে এখানে বাণিজ্যিকভাবে চাষাবাদ করে লাভবান হওয়া সম্ভব। এতে কৃষকদের লোকসানের হওয়ার আশংক্ষা নাই।

Archive Calendar
Sat Sun Mon Tue Wed Thu Fri
 1234
567891011
12131415161718
19202122232425
262728293031