বাঙ্গালহালিয়াতে ভূমিহীন তিন পরিবারের নির্মানাধীন ঘর ভাংচুর ও লুটপাটের অভিযোগ

॥ হারাধন কর্মকার ॥ রাঙ্গামাটি জেলার রাজস্থলী উপজেলার ৩নং বাঙ্গালহালিয়া ইউনিয়নে চাঁদা না দেওয়ায় ভূমিহীন ৩টি পরিবারের নির্মানাধীন বসতঘর ভাংচুর ও লুটপাটের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনাটি গত ৭ এপ্রিল বিকাল ৪ ঘটিকার সময় ডাকবাংলা পাড়ার বাসিন্দা নুরুল ইসলাম এর জায়গায় ঘটেছে। সরজমিনে ঘুরে জানা যায়, ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের ডাকবাংলা মুসলিম পাড়ায় মোঃ নুরুল কবির (২৬), মোছাঃ আরাফা বেগম (৩০), মোঃ জোবায়েদ হোসেন (৪০) এই ভূমিহীন তিনটি পরিবার তাদের ক্রয় করা জায়গায় ঘর নির্মার করছেন। ঘর নির্মানে বাঁধা প্রয়োগকারীরা চাঁদা না পেয়ে নির্মানাধীন ৩টি ঘরই একেবারে ভেঁেঙ্গ চুরমার করে দিয়েছে নুরুজ্জামান, তার দুই ভাইসহ তার দলবল। নুরুজ্জামান রাঙ্গুনিয়া উপজেলার বাটা পাহাড় নামক এলাকার বাসিন্দা মৃত নুরুন্নবি প্রকাশ ননামিয়ার ছেলে বলে জানা গেছে। সরজমিনে পরিদর্শনকালে ক্ষতিগ্রস্থ আরাফা বেগম জানান, তার স্বামী একজন দিনমজুর। তার শশুর নুরুল ইসলাম (৯৫) ৭টি সন্তান নিয়ে বাঙ্গালহালিয়ার বাসিন্দা ক্যাজহ্লা মাষ্টারের জায়গায় গত ৩০ বছর যাবৎ জরাজির্ন কুড়েঘরে ছোটছোট ছেলেমেয়ে নিয়ে কোনরকমে বসবাস করে আসছেন। পরিবার পরিজনের প্রয়োজনে বিগত ২০১০ সালে তার শশুর পালা গরু-ছাগল বিক্রি করে ও এনজিও সংস্থা থেকে ঋন নিয়ে হামলাকারী নুরুজ্জামানের পিতা মৃত নুরুন্নবির নিকট থেকে ৩২০ নং কাকড়াছড়ি মৌজার এবং রাঙ্গুনিয়া সীমানায় অবস্থিত ৪ কানি ৩য় শ্রেনীর (পাহাড়) জায়গা ক্রয় করে। গত কয়েকবছরে জায়গাটিতে বিভিন্ন প্রকার ফলজ ও বনজ গাঁছ লাগিয়ে আসছেন। নিজের স্থায়ী একটি নিবাসের প্রয়োজনে জায়গাটিতে ঘর নির্মান শুরু করেন। কিন্তু হঠাৎ করেই গত শুক্রবার বিকাল ৪ ঘটিকার সময় হাতে দাঁ-লাঁঠি নিয়ে নুরুজ্জামানাসহ তার আরো দুই ভাই এবং তার দলবল এসে এলোপাথাড়ি ভাবে সবকিছু কেঁটে চুরামার করে দেয়। অনেক পরিশ্রমে জোগাড় করা ঘরের বিভিন্ন সামগ্রী যার আনুঃ মূল্য ৩০-৪০ হাজার টাকার ক্ষয়-ক্ষতির স্বীকার হযেছেন বলে জানান, ক্ষতিগ্রস্থ আরাফা বেগম সহ অন্যরা। কেঁটে চুরমার করার সময় ক্ষতিগ্রস্থরা বাঁধা দিতে গেলে তাদেরকেও দাঁয়ের কোপ দেয়ারও চেষ্টা করে হামলকারীরা। আরো জানা যায় গত ১ সপ্তাহ আগে ঘর নির্মানের জায়গাটি পরিস্কার করার সময় হামলাকারীরা আরাফা বেগম সহ আরো কয়েকজন মহিলাকে বেধড়ক মারধর করেছে বলে আভিযোগ করেন। এবিষয়ে চন্দ্রঘোনা থানায় একখানা লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে বলেও জানান আরাফা বেগম। আরাফা বেগমের শশুর নুরুল ইসলাম কান্নার বাঁধ ছেড়ে বলেন, দীর্ঘ অনেকবছর ছেলে ও ছেলের বৌসহ নাতিপুতনি নিয়ে ক্যাজহ্লা মাষ্টারের দয়াতে তার জায়গায় বসবাস করছি। মৃত্য্যূর আগ মূহুর্তে নিজের ক্রয় করা জায়গায় পরিবার পরিজন নিয়ে বসবাসের জন্য বসতঘর নির্মান শুরু করার সাথে সাথেই হামলাকারীরা আমার নিকট ২০ হাজার চাঁদা দাবি করে। চাঁদার টাকা দিতে না পারায় তারা আমার ছেলেদের ঘরগুলো ভাংচুর ও লুটপাট চালায়। ৬নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, বিষয়টি সাবেক মন্ত্রী ডঃ হাসান মাহমুদের ছোটভাই মোঃ এরশাদ মাহমুদ এর নিকট অবগত করা হলে তিনি হামলাকারীদেরকে তাৎক্ষনিক ভাবে ডেকে অসহায় পরিবারগুলো যাহাতে হয়রানীর স্বীকার না হয় সেজন্য আগামী দুই দিনের মধ্য বিষয়টি সমাধানের নির্দেশ দেন। চন্দ্রঘোনা থানার এসআই মোঃ ইলিয়াছ হোসেনের সাথে আলাপকালে তিনি হামলাকারীদে বিরুদ্ধে পূর্বের অভিযোগের কথা স্বীকার করে বলেন, ঘটনাটি অত্যন্ত ন্যাক্কার জনক। তদন্ত সাপেক্ষে হামলাকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যাবস্থা করা হবে বলে তিনি জাননা। এদিকে হামলাকারী ব্যাক্তিদের সাথে যোগাযোগের জন্য বেশ কয়েকবার চেষ্টা করা হলেও তাদের কোন মতামত নেওয়া সম্ভব হয়নি।

Archive Calendar
Sat Sun Mon Tue Wed Thu Fri
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930