বিনা চিকিৎসায় অনুপ্রবেশকারী রোহিঙ্গা শিশুর মৃত্যু

বিনা চিকিৎসায় অনুপ্রবেশকারী রোহিঙ্গা শিশুর মৃত্যু
॥ মুহাম্মদ জুবাইর, টেকনাফ ॥ টেকনাফে অনুপ্রবেশ কারী এক রোহিঙ্গা শিশু লেদা শরনার্থী ক্যাম্পে বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুবরণ করেছে বলে খবর পাওয়া গেছে। তাকে লেদা টালস্থ কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। নিহত শিশুটির বয়স ৬ মাস। সে আরকান রাজ্যের উত্তর জামবইন্যা জামাল হোসেন ও নুর বেগমের সাড়ে ৬ মাস বয়সী শিশু পুত্র জানে আলম।
নিহত শিশুর মা নুর বেগম জানায়, মিয়ানমার থেকে রাতের আধাঁরে আসায় শীতের ঠান্ডায় শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত হয়। তাকে কোন চিকিৎসাসেবা দিতে পারেনি। শনিবার সকালে শ্বাসকষ্ট বেড়ে গেলে তার মৃত্যু হয়। তিনি আরো জানান মায়ানমার বাহিনীর অত্যাচারে অতিষ্ট হয়ে প্রাণ বাঁচাতে একমাত্র শিশুপুত্র জানে আলম ও অবিবাহিত এক বোনকে নিয়ে অর্ধাহারে-অনাহারে বনে-জঙ্গলে দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে ২০ জনের দলটি টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যং ইউনিয়নের উঞ্চিপ্রাং ঘাট দিয়ে গভীর রাতে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করতে সময় লেগেছে ১৫ দিন। স্বামী জামাল হোসেনকে মিয়ানমার বাহিনী ২০ দি আগে ধরে নিয়ে গিয়েছিল। আর ফিরে আসেনি। অপর ২ শিশুপুত্র মোঃ হাশিম (৫) এবং জাফর আলমকে (৩) মায়ের চোখের সামনে জ্বলন্ত অগ্নিকুন্ডে নিক্ষেপ করে হত্যা করেছে মিয়ানমার বাহিনী। বাংলাদেশে ঢুকে অন্যান্য রোহিঙ্গাদের সাথে টেকনাফের লেদা রোহিঙ্গা ক্যাম্পে (স্থানীয় ভাষায় টাল) আশ্রয় নিয়েছে ২৫ নভেম্বর সন্ধ্যায়।
অপর দিকে মায়ানমারের আরাকান (রাখাইন) প্রদেশে সহিংসতায় গুলিবিন্ধ হয়ে পালিয়ে আসা অনেক  রোহিঙ্গা এখন বাংলাদেশের ভিবিন্ন জায়গায় অবস্থান করছে বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে। বিশেষ করে তারা লেদা অনিবন্ধিত শরনার্থী ক্যাম্পে রয়েছে। অবস্থান রত গুলিবিদ্ব হয়ে পালিয়ে আসা মিয়ানমারের বড় গজিবিল এলাকার বশির আহমদের ছেলে রশিদ উল্লাহ। কিন্তু সে গ্রেফতারের ভয়ে কোনও চিকিৎসা নেননি।
গুলিবিদ্ধ রশিদ উল্লাহ জানান, মিয়ানমারের সেনাবাহিনী কর্তৃক হেলিকক্টার উপর থেকে বিচ্ছিন্নভাবে গুলি চালায় গ্রামগুলোতে। সে গুলিতে তার গাঁয়ে প্রায় পাঁচটি গুলি লাগে। তখন থেকে গুরুতর আহত হয়ে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে। ঘটনার দু-দিন পর তার স্ত্রীর সহযোগিতায় কোনমতে জীবন বাজি রেখে বরইতলী সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে। বর্তমানে সে লেদা অনিবন্ধিত ক্যাম্পে তার বোনের কাছেবাংলাদেশে আশ্রয় নেন তিনি।

Archive Calendar
Sat Sun Mon Tue Wed Thu Fri
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930