ভূমি কমিশন আইন-২০১৬ কার্যকর হলে জুম্ম ল্যান্ডের স্বপ্ন বাস্তবায়িত হবে- মে. জে.(অব.) সৈয়দ মুহম্মদ ইব্রাহীম বীরপ্রতীক

মন্ত্রীসভায় অনুমোদিত পার্বত্য ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন আইন-২০১৬ আইন কার্যকর হলে পার্বত্যাঞ্চলে তুমুল সংঘাতের আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা, নিরাপত্তা বিশ্লেষক ও বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) সৈয়দ মুহম্মদ ইব্রাহীম বীর প্রতীক। বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে পার্বত্য এলাকার পাঁচটি বাঙালী সংগঠন পার্বত্য নাগরিক পরিষদ, সমঅধিকার আন্দোলন. পার্বত্য গণপরিষদ. পার্বত্য বাঙালী ছাত্র পরিষদ. পার্বত্য বাঙালী ছাত্র ঐক্য পরিষদ আয়োজিত এক মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

পার্বত্য চট্টগ্রাম বাংলাদেশের মোট ভূখণ্ডের ১০ ভাগের এক ভাগ উল্লেখ করে বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) সৈয়দ মুহম্মদ ইব্রাহীম বীর প্রতীক বলেন, এই ভূখণ্ড নিয়ে অনেক আগ থেকে নানা ষড়যন্ত্র চলছে। এই সমস্যা দেশে চলমান অন্য ১০ টা সমস্যার মতো নয়। এই সমস্যা দেশের অখণ্ডতার সাথে সম্পর্কিত।

তিনি বলেন, ১৯৮৭ সালে পার্বত্যাঞ্চলের এসব দেশদ্রোহীরা সরকারকে প্রস্তাব দিয়েছিলো, পুরো বাংলাদেশ দু‘টি ভাগে ভাগ করার। এক ভাগের নাম বাংলাদেশ- যার রাজধানী ঢাকা। আর এক ভাগের নাম হবে জুম্মল্যান্ড- যার রাজধানী রাঙামাটি। এই দু’টি অংশ মিলে একটি ফেডারেল সরকার হবে। তখন আমরা রাজি হই নি। কিন্তু বর্তমান এই ভূমি আইন বাস্তবায়নের ফলে দেশদ্রোহীদের জুম্মল্যান্ডের সেই স্বপ্ন বাস্তবায়ন হবে।

সরকারের পাশাপাশি সরকারি নীতিনিধারক ও বুদ্ধিজীবীদের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে তিনি আরো বলেন, যাতে করে কোনভাবেই যড়যন্ত্রকারীদের অসংবিধানিক দাবির কাছে মাথা নত না করা হয়।

জে. ইব্রাহীম আরো বলেন, বর্তমান পার্বত্য এলাকায় অদৃর্শ সরকারের শাসন চলছে। যেখান বাঙালীরা প্রতিনিয়ত নির্যাতিত হচ্ছে। সেখানে এই আইন বাস্তবায়ন হলে আগুনে ঘি দেয়া মত অবস্থার সৃষ্টি হবে।

সমঅধিকার আন্দোলনের মহাসচিব মনিরুজ্জামানের সভাপতিত্বে উক্ত অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য নাগরিক পরিষদের চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার আলকাছ আল মামুন ভূইয়া, পার্বত্য গণপরিষদের কেন্দ্রীয় মহাসচিব এডভোকেট পারভেজ তালুকদার, পার্বত্য গণপরিষদের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এ্যাডভোকেট আলম খান, পার্বত্য বাঙ্গালী ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাব্বির আহমেদ, ঢাকা মহানগর কমিটির সভাপতি সাহাদাত হোসেন সাকিব প্রমুখ।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে পার্বত্য নাগরিক পরিষদের চেয়ারম্যান আলকাছ আল মামুন ভুইয়া বলেন, ১৯৯৭ সালে শান্তি চুক্তির মাধ্যমে বাঙালীদের ২য় শ্রেণির নাগরিকের পরিণত করা হয়েছে। আজ এই ভূমি আইন সংশোধনের মাধ্যমে পার্বত্য এলাকার বাঙালীদের ভূমি ছাড়া করা হচ্ছে।

তিনি আরো বলেন, এই আইন বাতিল করুন, অন্যথায় কঠোর আন্দোলনের মাধ্যমে পার্বত্য বাঙালীর্ তাদের অধিকার আদায়ে করে নিবে। তারা যখন রাজপথে নেমে আসবে, তখন যে অরাজকতা তৈরী হবে, তার জন্য সরকারকেই দায়ী থাকতে হবে।

সভাপতির বক্তব্যে সমঅধিকার আন্দোলনের কেন্দ্রীয় মহাসচিব মনিরুজ্জামান মনির বলেন, দেশ স্বাধীনের পর থেকে আজ পর্যন্ত শান্তি বাহিনীর হাতে অনেক সেনা সদস্য, পুলিশ, বিজিবি, আনসারসহ নিরীহ বাঙালীদেরকে জীবন দিতে হয়েছে। তারই ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে গত ১ আগস্ট ভূমি কমিশন আইনের সংশোধন করা হয়েছে। তিনি সরকারে প্রতি এই আইন বাতিলে আহ্বান জানান।

পার্বত্য গণপরিষদের কেন্দ্রীয় মহাসচিব এডভোকেট পারভেজ তালুকদার বলেন, যে বাংলাদেশের ভোটারই নন, তাকে প্রতিমন্ত্রীর মর্যাদায় আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান করা হয়েছে। আজ তার খায়েশ পুরণ করতে মন্ত্রীসভায় পাশ করা হয়েছে বিতর্কিত ভূমি আইন। কমিটিতে কোনো পার্বত্য বাঙালী প্রতিনিধি না থাকায় এক চেটিয়াভাবে যেকোনো ভুমির ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিয়ে নিতে পারবে উপজাতিরা। সেটা অবৈধ হলেও তার বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপীলের সুযোগ নেই। এখনো সময় এই আইন সংশোধন করা হোক।

Archive Calendar
Sat Sun Mon Tue Wed Thu Fri
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930