রাঙ্গামাটিতে আওয়ামীলীগের সংবর্ধনা ও কর্মী সভা পার্বত্য চট্টগ্রামকে অশান্ত করতে দেশী-বিদেশী গোয়েন্দা সংস্থা চক্রান্ত করছে ——ওবায়দুল কাদের এমপি

রাঙ্গামাটিতে আওয়ামীলীগের সংবর্ধনা ও কর্মী সভা
পার্বত্য চট্টগ্রামকে অশান্ত করতে দেশী-বিদেশী
গোয়েন্দা সংস্থা চক্রান্ত করছে
——ওবায়দুল কাদের এমপি
॥ নিজস্ব প্রতিবেদক ॥
সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এমপি বলেছেন, বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করে তুলতে পার্বত্য চট্টগ্রামকে অশান্ত করার দেশী-বিদেশী চক্রান্ত চলছে। একাত্তরের পরাজয়ের প্রতিশোধ নিতে কোন কোন বিদেশী গোয়েন্দা সংস্থা পাহাড়ে সংক্রিয় রয়েছে। তিনি বলেন, তিনি পাহাড়ে এই অশান্তি সৃষ্টিকারীদের প্রশ্রয় না দিতে সন্তু লারমার প্রতি আহবান জানান।
বুধবার (৩০ নভেম্বর) রাঙ্গামাটিতে সংবর্ধনা ও কর্মী সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
রাঙ্গামাটি পৌর সভা চত্বরে জেলা আওয়ামীলীগের উদোগে আয়োজিত সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও রাঙ্গামাটি জেলা সভাপতি দীপংকর তালুকদার। অন্যান্যর মধ্যে বক্তব্যে রাখেন আওয়ামীলীগের চট্টগ্রাম বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক এনামুল হক ও সংরক্ষিত মহিলা আসনের সাংসদ ফিরোজা বেগম চিনু প্রমুখ। এসময় জেলা আওয়ামীলীগসহ অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে সেতুমন্ত্রী জনসভা স্থলে পৌছলে জেলা আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দ তাকে সংবর্ধনা দেন। সমাবেশে শেষে তিনি বান্দরবানের উদ্দেশ্য রওনা দেন।
তিনি আরো বলেন, বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনা ছিলেন বলে পার্বত্য শান্তি চুক্তি সাক্ষরিত হয়েছে। পার্বত্য শান্তি চুক্তি আমরাই করেছি, আমরাই বাস্তবায়ন করবো। মাঝখানে পাঁচ বছরে বিএনপি’র সরকার শান্তি চুক্তি বাস্তবায়ন না করে পরিত্যক্ত অবস্থায় রেখেছিল।
তিনি সন্তু লারমার উদ্দেশ্য করে বলেন, যে মানুষের গাড়ীতে স্বাধীন বাংলার পাতাকা উড়িয়েছেন, এ সম্মান গোটা পাহাড়ের জন্য। পাহাড়ের পাহাড়ী-বাঙালীসহ সকল মানুষের প্রতিনিধিত্ব করছেন সন্তু লারমা। জননেত্রী শেখ হাসিনা তাকে এ সন্মানে বসিয়েছেন।
বিএনপিকে একটি নালিশ পার্টি নামে অবহিত করে তিনি বলেন, বিএনপি রাজনীতিতে আন্দোলন করার জন্য শক্তি নেই। বিএনপি রাজনীতি গাঙ-এর ন্যায় শুকিয়ে গেছে। তারা এখর রাজনৈতিকভাবে দেউলিয়া হয়ে বিদেশীদের কাছে দেনদরবার করছে। তিনি আওয়ামীলীগ জনগনের দল। জনগনের উপর আস্থা আসে বলে জনগনের শক্তি নিয়ে আওয়ামীলীগদেশের উন্নয়নের জন্য এগিয়ে যাবে বলে উল্লেখ করেন।
তিনি সন্তু লারমাকে জননেত্রী শেখ হাসিনার সাথে থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেন, আপনি ভূল বুঝবেন না। যদি পাহাড়ে উন্নয়ন চান, বৈষম্যর অবসান চান। ভূমি বিরোধ পার্বত্য চট্টগ্রামে এক নম্বর সংকট। তার সমাধানের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। একটু ধৈর্য্য ধরতে হবে। যারা দেয় সবকিছুই উজাড় করে দেয়। আর যারা দেবে না তারা উস্কানি দেবে। কিন্তু কিছুই দেবে না। কাজেই সমস্যা থাকলে আলোচনা টেবিলে বসুন। আলোচনা বসবো। তার জন্য আন্দোলন করার কোন প্রয়োজন নেই। শান্তি চুক্তি অক্ষরে অক্ষরে বাস্তবায়ন করা হবে। এর জন্য আন্দোলনের প্রয়োজনও হবে না।
পার্বত্য অঞ্চলে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে হলে অবৈধ অস্ত্র থেকে বেরিয়ে আসতে হবে উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, পাহাড়ে অশান্তি চাইলে অবৈধ অস্ত্র কাজে লাগবে। আর শান্তি চাইলে তাহলে অবৈধ অস্ত্র থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। শান্তি বাহিনীরা অস্ত্র সমর্পন করেছিল বলে এ অঞ্চলের মানুষ এখন শান্তিতে ঘুমাতে পারছে। তবে মাঝে মাঝে মধ্যে অশান্তি হয় এই অবৈধ অস্ত্রের কারণে। তিনি, পাহাড়ী-বাঙালী সবাইকে মিলেমিশে এক সাথে শান্তিতে বসবাস করতে হবে।
তিনি বলেন, নানিয়ারচর সেতু কাজের সমস্ত প্রক্রিয়া এ বছরের মধ্যে সম্পন্ন করা হবে এবং  আগামী বছর জানুয়ারী থেকে এ সেতুর কাজ শুরু করা হবে। এছাড়া ঠেগামুখ-রাজস্থলী-বিলাইছড়ি সড়কের ১৩০কিলোমিটারের কাজ এবং রাঙ্গামাটি-চট্টগ্রাম ও মানিকছড়ি-মহালছড়ির সড়কের কাজ করার পরিকল্পনা গ্রহন করা হয়েছে। তবে তিনি রাঙ্গামাটি-বান্দরবান সড়কের চন্দ্রঘোনা-রাইখালী সংযোগস্থলে কনর্ণফুলীর সেতুর উপর সেতু নির্মানের দাবী নাকচ করে দেন। তিনি বলেন, এই কর্ণফুলী নদীর ঐতিহ্য হারাতেদেবো না। কারণ চাকমার রাজামেয়ের কানের ঢুল হারিয়েছে এই কর্ণফুলী নদীতে। এছাড়া এ নদীর উপরসেতু নির্মাণ হলে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য হারাবে এবং সাম্পানের ঐতিহ্য  হারিয়ে যাবে। তিনি বলেন আমি যতদিন থাকবো ততদিন এই নদীর উপরসেতুন নির্মাণ করতে দেবো না।

Archive Calendar
Sat Sun Mon Tue Wed Thu Fri
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930