দীঘিনালার দূর্গম এলাকাগুলোতে খাবার পানির সংকট চরমে

॥ সোহেল রানা, দীঘিনালা ॥ খাগড়াছড়ির দীঘিনালা উপজেলার দুর্গম এলাকাগুলোতে প্রচন্ড নিরাপদ পানির দেখা দিয়েছে, নেই কোন নিরাপদ পানির উৎস। এসব গ্রামের লোকজন ছড়া, ঝর্ণা এবং কুয়ার পানির উপর নির্ভর। বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ করার সুবিধা থাকলেও, শীত মৌসুমে ছড়া, ঝর্ণা কুয়াগুলো শুকিয়ে যাওয়ার ফলে চরম দূর্ভোগ পোহাতে হয় নিরাপদ পানির জন্য। এদিকে ছড়ার পানি পান করার ফলে শুকনাছড়া গ্রামেই শতাধিকলোক ডায়রিয়া রোগে আক্রান্ত হয়েছে। ফলে ওই গ্রামে গত সোমবার দীঘিনালা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর একটি মেডিক্যাল টিম স্বাস্থ্যসেবা পরিচালনা করেছে।
উপজেলার সীমানা পাড়া, মাইয়াপো পাড়া, বুদ্ধমা পাড়া, সহ বেশ কয়েক এলাকা ঘুরে দেখা যায়, এসব এলাকার কোথাও নলকুপ বা নিরাপদ পানির কোন সংস্থান নেই। সকলেই নদী, ছড়া, ঝিরি, এবং কুয়ার পানি ব্যবহার করছে। এ গ্রামের অধিকাংশ লোকজন নিরাপদ পানি কি জানে না। নদী, ছড়া, ঝিরি, কুয়ার পরিষ্কার পানিকেই নিরাপদ পানি হিসেবে জানে।
শুকনাছড়া গ্রামের রনিল বিকাশ চাকমা জানান, এ গ্রামে মোট ৭৫ পরিবারের বসবাস। সবাই ছড়া, কুয়া এবং রিং টিউবওয়েলে পরিস্কার পানি পান করে। গত বুধবার বৃষ্টি হওয়ার পর ছড়া, কুয়া এবং রিং টিউবওয়েলের পানি পান করার পর গ্রামের অধিকাংশ লোকজনই ডায়েরিয়া রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। কিছু চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়েছেন এবং এখনো নতুন করে আক্রান্ত হচ্ছে।
এব্যাপারে সীমানা পাড়া গ্রামের মতিবালা ত্রিপুরা (৪৫) জানান, ছড়া ঝর্ণা গুলো শুকিয়ে গেছে। অনেক দুূর থেকে এখানে পানি নিতে এসেছি। এ গ্রামে কোন নলকুপ নেই। যুগ যুগ ধরেই আমরা ছড়া, ঝর্ণার পরিষ্কার পানি পান করছি। তবে এসব পানি পান করার পর প্রায় সময় ডায়রিয়া, কলেরার মতো রোগ হয়, তার পরও পান করতে হয়।
শুকনাছড়ি গ্রামের কার্বারী (গ্রাম প্রধান) সুরেশ বিহারী কার্বারী জানান, আমাদের পরিবারের সবাই ছড়ার পানি পান করতাম। এক পর্যায়ে পরিবারের মধ্যে আমার শাশুড়ী, আমার স্ত্রী জয়শ্রী চাকমা(৪২) এবং মেয়ে ইয়ানা চাকমা (৭) ডায়রিয়া রোগে আক্রান্ত হয়েছে।
এব্যাপারে দীঘিনালা উপজেলা দূর্গম এলাকাগুলোতে নিরাপদ পানির সূব্যস্থা না থাকার কথা স্বীকার করে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো.জাহাঙ্গীর আলম সরকার জানান, সীমানা পাড়া, নয়মাইল, বুদ্ধমা পাড়া, মাইয়াপোপাড়া সহ দূর্গম পাহড়ি এলাকাগুলোতে আমরা নলকুপ বসাতে চেষ্টা করেছি। নলকুপ বসানোর জন্য কিছুদুর বোরিং করার পর পাথর পাওয়া যায়, যার ফলে ভালো পানির স্তর পাওয়া যায় না, যারফলে এসব গ্রামের কোথাও নলকুপ বসানো সম্ভব হয়নি।

Archive Calendar
Sat Sun Mon Tue Wed Thu Fri
 1234
567891011
12131415161718
19202122232425
262728293031