আইনের সুশাসন প্রতিষ্ঠায় গ্রাম আদালতের কোন বিকল্প নেই–চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক

চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক মো. জিল্লুর রহমান চৌধুরী বলেছেন, আইনের সুশাসন প্রতিষ্ঠায় গ্রাম আদালতের কোন বিকল্প নেই। গ্রামাঞ্চলে অনেক গরীব-দুঃখী ও সাধারণ মানুষ নির্যাতন-নিপীড়নের শিকার হয়। তারা ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত হয়। আবার গ্রামে সুষ্ঠু বিচার না পেয়ে অনেকে আদালতের শরণাপন্ন হয়। ফলে আদালতে মামলার জট বাড়ে। বিচারকের আসনে বসে রাগ ও অনুরাগের বশবতী হওয়া যাবে না। ইউপি চেয়ারম্যান-মেম্বারেরা সৎ ও নিরপেক্ষ হয়ে সুষ্ঠু বিচার কার্যক্রম পরিচালনা করলে একদিকে গ্রাম আদালত প্রতিষ্ঠা হবে অন্যদিকে ভুক্তভোগী মানুষ থানা কিংবা আদালতের শরণাপন্ন হবে না। এলাকায় কারা সন্ত্রাসী, ঘুষ খোর, দালাল জনপ্রতিনিধিরা তাদেরকে ভালোভাবে চেনেন। সন্ত্রাস ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তুলতে গ্রামে শান্তি, সুশাসন প্রতিষ্ঠায় সবাই মিলে কাজ করতে হবে। পাশাপাশি স্থানীয় সরকার বিভাগকে আরো শক্তিশালী করতে হলে গ্রাম আদালতকে সক্রিয় করতে হবে। আজ ২৭ নভেম্বর ২০১৭ ইং সোমবার সকালে সার্কিট হাউসে জেলা প্রশাসন ও বাংলাদেশ গ্রাম আদালত সক্রিয় করণ (২য় পর্যায়) প্রকল্প আয়োজিত ‘গ্রাম আদালত প্রকল্পের চলমান কার্যক্রমের অগ্রগতি পর্যালোচনা এবং করণীয়’ শীর্ষক অর্ধ-বার্ষিক সমন্বয় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) নুরে আলম মিনা পিপিএম বলেন, সমাজের সুশৃঙ্খল পরিস্থিতি বিরাজের জন্য গ্রাম আদালতে চেয়ারম্যান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকেন। গ্রাম আদালতে সুষ্ঠু বিচার পরিচালনায় অনেক সময় রাজনৈতিক প্রভাব পড়ে। এগুলো যাতে না হয় সে দিকে সর্তক দৃষ্টি রেখে সৎ ও আন্তরিকতার সাথে কাজ করলে সমাজে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা হবে। পাশাপাশি আদর্শ সমাজ ও রাষ্ট্র গড়ে উঠবে। ইউপি চেয়ারম্যানগণ যদি সঠিক ব্যক্তি না হয় তাহলে গ্রাম আদালতের উদ্দেশ্যে সফল হবে না। তাই গ্রামের সকল সমস্যা ও অভিযোগগুলো গ্রাম আদালতে দ্রুত নিষ্পত্তি করতে পারলে মানুষ আদালতের দিকে ঝুঁকবে না। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যানদের আন্তরিক হতে হবে। অনুষ্ঠানটির সহযোগী সংস্থা ছিলেন ব্লাস্ট।
জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের উপ-পরিচালক (স্থানীয় সরকার) মো. নায়েব আলীর সভাপতিত্বে বাংলাদেশে গ্রাম আদালত সক্রিয়করণ ২য় পর্যায় প্রকল্পের ডিস্ট্রিক্ট ফ্যাসিলিটেটর উজ্জ্বল কুমার দাস চৌধুরীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত গ্রাম আদালত বিষয়ক সমন্বয় সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক মো. জিল্লুর রহমান চৌধুরী। বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা পুলিশ সুপার নুরে আলম মিনা পিপিএম। স্বাগত বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার (মূল্যায়ন) উজালা রানী চাকমা।
সভায় চট্টগ্রাম জেলার গ্রাম আদালত প্রকল্প কার্যক্রমের সামগ্রিক চিত্র, অগ্রগতি ও চ্যালেঞ্জ সমূহ মাল্টিমিডিয়ার মাধ্যমে উপস্থাপন করেন গ্রাম আদালত সক্রিয়করণ প্রকল্পের ডিস্ট্রিক্ট ফ্যাসিলিটেটর উজ্জ্বল কুমার দাস চৌধুরী। উন্মুক্ত আলোচনায় অংশ নেন সন্দ্বীপ উপজেলা চেয়ারম্যান মো. শাহজাহান, সাতকানিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মোবারক হোসেন, লোহাগাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মাহবুবব আলম, সমাজসেবা অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক বন্দনা দাশ, সন্দ্বীপের সহকারী-কমিশনার (ভূমি) মো. সাইদুজ্জামান চৌধুরী, সীতাকু-ের সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. কামরুজ্জামান, ব্লাস্টের সমন্বয়ক সাজেদুল আনোয়ার ভূঁইয়া, সাংবাদিক রনজিত কুমার শীল, লোহাগাড়ার পদুয়া ইউপি চেয়ারম্যান মো. জহির উদ্দিন, চরম্বা ইউপি চেয়ারম্যান মাস্টার মো. শফিকুর রহমান, সীতাকু-ের বাড়বকু- ইউপি চেয়ারম্যান ছাদাকাত উল্ল্যাহ, ভাটিয়ারী ইউপি চেয়ারম্যান মো. নাজিম উদ্দিন, বাঁশবাড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যান মো. শওকত আলী, ভাটিয়ারী ভিসিএ দিলশাদ তামান্না, ফটিকছড়ির বক্তপুর ইউপি চেয়ারম্যান মো. সোলায়মান, সন্দ্বীপের হারামিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মোহাং আলী কামরু, সাতকানিয়া মাদার্শা ইউপি চেয়ারম্যান আবু নঈম মোহাম্মদ সেলিম, এওচিয়া ইউপি চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম, আমিলাইশ ইউপি চেয়ারম্যান এইচ এম হানিফ, বাজালিয়া ইউপি চেয়ারম্যান তাপস দত্ত, কালিয়াইশের প্যানেল চেয়ারম্যান মো. নবী হোসেন,  লোহাগাড়ার চুনতির প্যানেল চেয়ারম্যান আব্দুল মন্নান সিকদার প্রমুখ। সভায় জেলা প্রশাসনের বিভিন্নস্তরের কর্মকর্তা, জেলার বিভিন্ন ইউপি চেয়ারম্যান, মেম্বার ও গ্রাম আদালতের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। সভা শেষে সার্কিট হাউজে অস্থায়ীভাবে স্থাপিত গ্রাম আদালতের প্রকল্প পরিদর্শন করেন জেলা প্রশাসক মো. জিল্লুর রহমান চৌধুরী ও জেলা পুলিশ সুপার নুরে আলম মিনা।

Archive Calendar
Sat Sun Mon Tue Wed Thu Fri
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930