জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু :: শতবর্ষের কর্মসূচি নিয়ে ওয়েবসাইট

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে নির্মাণ করা হয়েছে ‘http://www.mujib100.gov.bd’ ওয়েবসাইট। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের তত্ত্বাবধানে নির্মিত এই ওয়েবসাইটকে কেন্দ্র করেই মুজিববর্ষ উদ্যাপনের সব কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।

বাংলা ও ইংরেজি দুই ভাষার ইন্টারফেসের এই ওয়েবসাইটে কন্টেন্ট হিসেবে রয়েছে আয়োজনের যাবতীয় বিষয়াবলি।

যেমন, ‘মুজিব’ নামক ট্যাবে পাওয়া যাবে ১৯২০ থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত ক্রমপঞ্জি অনুসারে জাতির পিতার জীবনের বিভিন্ন ঘটনাবলির দুর্লভ আলোকচিত্র ও তথ্যাবলি। শুরু হয়েছে ১৯২০ সালে বঙ্গবন্ধু গোপালগঞ্জের যে বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন সেই বাড়ির একটি সাদাকালো আলোকচিত্র দিয়ে।

এরপর ১৯২৭ সালে গিমাডাঙ্গা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৎকালীন আলোকচিত্র ও কিশোর মুজিবের একটি আলোকচিত্রও স্থান পেয়েছে। ১৯৩৮ সালে জাতির পিতার ১৮ বছর বয়সে বিবাহ অনুষ্ঠান, ১৯৪২ সালে ম্যাট্রিকুলেশন পরীক্ষা কেন্দ্র, ১৯৪৩ সালে বঙ্গীয় প্রাদেশিক মুসলিম লীগের (অল ইন্ডিয়া মুসলিম লীগের শাখা) কাউন্সিলর নির্বাচিত হওয়ার সেই সময়ের আলোকচিত্র।

১৯৪৭ সালে ভারত বিভাজন পর্যন্ত তিনি সে দায়িত্ব প্রশংসার সঙ্গে পালন করে যান। ১৯৪৬-এ বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় কলকাতা ইসলামিয়া কলেজ ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৪৬ সালের ১৬ আগস্ট কুখ্যাত ক্যালকাটা কিলিং (সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা) শুরু হলে শেখ মুজিবুর রহমান সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি এবং শান্তি বজায় রাখার কাজে ঝাঁপিয়ে পড়েন, নিজের জীবন বাজি রেখে হিন্দু এবং মুসলমান উভয় সম্প্রদায়ের নিরীহ মানুষের জীবন রক্ষা করেন।

আরও সংকলিত হয়েছে, ১৯৪৭ সালে শান্তি মিশন চলাকালে মহাত্মা গান্ধীর সঙ্গে সাক্ষাতের তথ্যচিত্র। ভারত এবং পাকিস্তানের পাশাপাশি তৃতীয় রাষ্ট্র হিসেবে স্বতন্ত্র, স্বাধীন বাংলা প্রতিষ্ঠার জন্য হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর সঙ্গে শেখ মুজিবুর রহমানের আন্দোলনে যোগ দেয়ার সময়ের প্রামাণ্য। ১৯৪৮ সালে শেখ মুজিবুর রহমান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগে ভর্তি হন এবং ৪ জানুয়ারি পাকিস্তানের প্রথম বিরোধীদলীয় ছাত্র সংগঠন পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠা করেন, সে সংশ্লিষ্ট আলোকচিত্র।

জাতির পিতার মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ের সব বক্তৃতার ভিডিও স্থান পেয়েছে এই ওয়েবসাইটে। ৩ জানুয়ারি ১৯৭১-এর নির্বাচনের পর রেসকোর্স ময়দানে ভাষণের দুর্লভ সব সংগ্রহ। রয়েছে, মুক্তিযুদ্ধ শুরুর প্রাক্কালে শহীদ দিবস, ২১ ফেব্রুয়ারি, ১৯৭১ বঙ্গবন্ধু শহীদ মিনারে এক গুরুত্বপূর্ণ ভাষণ দেন। ভাষণে তিনি স্বাধিকার আদায় আন্দোলনের জন্য ঘরে ঘরে প্রস্তুত হতে জনগণের প্রতি আহ্বান জানান, স্থান পেয়েছে সেই ভাষণ। ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ১৮ মিনিট ৩১ সেকেন্ডের ভাষণসহ মোট ১৩টি ভাষণ স্থান পেয়েছে এই ট্যাবে।

ওয়েবসাইটে স্থান পেয়েছে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে বিশ্বনেতা ও খ্যাতিমান ব্যক্তিত্বদের যাবতীয় উক্তি ও মূল্যায়ন। যেমন, ইন্দিরা গান্ধীর ১৫ আগস্টের উক্তি- ‘শেখ মুজিব নিহত হওয়ার খবরে আমি মর্মাহত। তিনি একজন মহান নেতা ছিলেন। তার অনন্যসাধারণ সাহসিকতা এশিয়া ও আফ্রিকার জনগণের জন্য প্রেরণাদায়ক ছিল।’

‘আমি হিমালয় দেখিনি, কিন্তু শেখ মুজিবকে দেখেছি, ব্যক্তিত্ব ও সাহসিকতায় তিনি হিমালয়ের মতো’ কিউবার অবিসংবাদিত নেতা ফিদেল ক্যাস্ত্রোর মন্তব্য ও ‘আপসহীন সংগ্রামী নেতৃত্ব এবং কুসুমকোমল হৃদয় ছিল মুজিবের চরিত্রের বিশেষত্ব’- ফিলিস্তিনের স্বাধীনতা সংগ্রামে আত্মত্যাগী নেতা ইয়াসির আরাফাতের এই মন্তব্য থেকে শুরু করে শেষ হয়েছে ধানমণ্ডির বত্রিশ নম্বরে পরিদর্শকের খাতায় হলিউড অভিনেত্রী এঞ্জেলিনা জোলির- ‘এই বিশেষ বাড়িটিতে এসে আমি বেশ আবেগাপ্লুত! বাড়িটি যথাযথভাবে সংরক্ষণ করা হয়েছে জেনে আমি কৃতজ্ঞ’ মন্তব্য দিয়ে।

স্থান পেয়েছে জাতির পিতার জীবৎকালের অসংখ্য আলোকচিত্রের আর্কাইভ এবং জাতির পিতাকে নিয়ে সিআরআইয়ের নির্মিত বিশেষ গ্রাফিক নভেল ‘মুজিব’। ৬ পর্বের গ্রাফিক নভেলে জাতির পিতার জীবনী বাংলা, ইংরেজি ও চাইনিজ ভাষায় প্রকাশ করা হয়েছে। যে কেউ এখান থেকে গ্রাফিক নভেলটি দেখতে ও পড়তে পারবেন বিনা মূল্যে।

শতবর্ষ উদ্যাপনের বিভিন্ন আয়োজন এখনও সংকলিত হচ্ছে ওয়েবসাইটটিতে। তবে যে কেউ চাইলে সঠিক নাম-পরিচয় দিয়ে জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকীর এই ওয়েবসাইটটি সমৃদ্ধ করতে ভূমিকা রাখতে পারবেন- সেই ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে।

ইচ্ছে তালিকায় জন্মদিনে জাতির পিতাকে উদ্দেশ করে নিজের ইচ্ছার কথা জানাতে পারবেন। প্রকাশিত হয়েছে আয়োজক কমিটির বিস্তারিত তথ্য, এ পর্যন্ত যাবতীয় মিডিয়া আয়োজন ও যোগাযোগের বিস্তারিত।

Archive Calendar
Sat Sun Mon Tue Wed Thu Fri
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930