নগরীর নিম্নাঞ্চল প্লাবিত, জনদুর্ভোগ চরমে

দফায় দফায় ভারী বৃষ্টিতে নগরীর নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। আগ্রাবাদ এক্সেস রোড, পোর্ট কানেকটিং রোড, হালিশহর, সিডিএ আবাসিক, আরাকান রোড, চকবাজার, বাকলিয়াসহ বেশ কিছু এলাকার মানুষ সাময়িকভাবে পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন।
এতে রমজানের দিনে সীমাহীন দুর্ভোগে পড়েছেন নিচতলার বাসিন্দারা। অনেকে ঈদের কেনাকাটাসহ জরুরি প্রয়োজনে ঘর থেকে বের হলেও মাঝপথে হতাশ হয়ে ঘরে ফিরতে দেখা গেছে। ভারী বৃষ্টির কারণে নগরীর ফুটপাতের ঈদবাজার ক্রেতাশূন্য হয়ে পড়েছে।
সরেজমিন দেখা গেছে, আগ্রাবাদ এক্সেস রোড এলাকাটি পানির নিচে তলিয়ে গেছে। বন্দর রিপাবলিক ক্লাবসংলগ্ন এলাকায় পাম্পহাউসসহ অস্থায়ী বাঁধের কার্যকারিতা না থাকায় মহেশখালের দুকূল ছাপিয়ে নিচু এলাকা পানিতে তলিয়ে যায়। খালের আশপাশে বেশকিছু কাঁচা ঘরে হাঁটুপানি জমে যায়।
শান্তিবাগ আবাসিক এলাকার বাসিন্দা ইমরুল হাসান বাংলানিউজকে জানান, ঈদের কেনাকাটার জন্যে আখতারুজ্জামান সেন্টার যাওয়ার উদ্দেশে ঘর থেকে বেরিয়ে দেখি অ্যাক্সেস রোড এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। সবচেয়ে বড় কথা নোংরা পানিতে অনেক ময়লা-আবর্জনা ভাসছে। বাধ্য হয়ে ঘরে ফিরে যাচ্ছি।
পানি উঠে যাওয়ায় বেশি দুর্ভোগে পড়েছেন নারী ও শিশুরা। লাকি প্লাজার সামনে কথা হয় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মী আলেয়া বেগমের সাথে। তিনি বলেন, আষাঢ়ের প্রথম ভারী বৃষ্টিতেই অ্যাক্সেস রোড তলিয়ে গেল। সমস্যা হচ্ছে, পানি যত বাড়ছে রিকশাভাড়াও তত বেশি হাঁকছে চালকরা।
২৭ নম্বর দক্ষিণ আগ্রাবাদ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর এইচএম সোহেল বাংলানিউজকে বলেন, দুপুর ১২টা থেকে বেলা তিনটা পর্যন্ত সময়ের মধ্যে সিডিএ আবাসিক, আগ্রাবাদ মা ও শিশু হাসপাতাল, বেপারি পাড়া, এক্সেস রোড এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। এলাকাবাসীর দাবি মহেশখালের মুখে স্থায়ী স্লুইসগেট নির্মাণ করতে হবে।
জলাবদ্ধতায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন নিম্নআয়ের লোকজনের কলোনি হিসেবে পরিচিত কমভাড়ার কাঁচাঘরগুলো। অনেকের চুলাও ডুবে গেছে পানিতে।
পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিসের পূর্বাভাষ কর্মকর্তা মেঘনাদ তঞ্চ্যঙ্গা বাংলানিউজকে জানান, বিকেল তিনটা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ১৬১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড হযেছে।
তিনি জানান, বাংলাদেশ উপকূলের অদূরে উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎ সংলগ্ন এলাকায় লঘুচাপটি সামান্য উত্তর দিকে সরে গিয়ে বর্তমানে গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ ও তৎ সংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। এর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎ সংলগ্ন এলাকায় গভীর সঞ্চারণশীল মেঘমালা সৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে।
তিনি জানান, চট্টগ্রাম, মংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত রয়েছে। মাছধরার ট্রলার ও নৌকাকে উপকূলের কাছাকাছি থাকতে বলা হয়েছে।
এর আগে দুপুরে সহকারী আবহাওয়াবিদ মো. মুশফিকুর রহমান সোমবার (৪ জুলাই) বাংলানিউজকে জানিয়েছেন, সকাল নয়টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় ১৫৩ দশমিক ২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। দুপুর ১২টায় আগের ২৪ ঘণ্টায় রেকর্ড করা হয় ১৬৭ দশমিক ৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত।

Archive Calendar
Sat Sun Mon Tue Wed Thu Fri
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031