ফাঁসির আসামির দণ্ড কমলো হাইকোর্টে

নাটোরের স্বাধীনকে অপহরণ করে হত্যা মামলায় বিচারিক আদালতের ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক এক আসামির দণ্ড কমিয়ে যাবজ্জীবন দিয়েছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে যাবজ্জীবনপ্রাপ্ত এক আসামিকে খালাস ও অপর আসামির দণ্ড বহাল রেখেছেন আদালত।
এ মামলার ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের শুনানি শেষে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও আমির হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চ বৃহস্পতিবার (০৯জুন) এ রায় দেন।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল শহীদুল ইসলাম চৌধুরী। পলাতক আসামির পক্ষে রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী মমতাজ বেগম শুনানি করেন।
মামলার নথি থেকে জানা যায়, নাটোর শহরের উত্তর তেবাড়ীয়া এলাকার জুমাউল রাব্বানী তালুকদার ওরফে স্বাধীন এর সঙ্গে মীর মাহবুবুর রহমান ওরফে রনিক, শহিদুল ইসলাম ও শৈলেশ কুমার রায় ওরফে কালু অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে ধান-চালের ব্যবসার করতেন।
এক পর্যায়ে এক লাখ ৫ হাজার টাকা নিয়ে তাদের মধ্যে সম্পর্কের চরম অবনতি ঘটে। ২০০১ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর রনিক টাকা দেয়ার জন্য স্বাধীনকে ডেকে নেয়। ওইদিন বিকেল থেকে স্বাধীন নিখোঁজ হয়।
স্বজনদের সন্দেহ হওয়ায় রনিককে আটক করে তারা পুলিশে সোপর্দ করে। তার বিরুদ্ধে অপহরণের মামলা করা হয়। পরে রনিকের দেওয়া তথ্যমতে, ঘটনার ৯ দিন পর ২ অক্টোবর বিকেলে শহরের বড়গাছা এলাকায় বদিউজ্জামানের ধানের চাতালের পাশে মাটিতে পুঁতে রাখা স্বাধীনের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় নিহতের চাচা আবদুস ছালাম তালুকদার বাদী হয়ে চারজনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন।
এ মামলায় ২০০২ সালের ৩১ জুলাই চারজনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেয় পুলিশ। বিচার শেষে ২০১০ সালের ২৬ জুলাই নাটোরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ দিলীপ কুমার দেবনাথ একজনের ফাঁসি, দু’জনের যাবজ্জীবন ও একজনকে বেকসুর খালাস দেন।
এর মধ্যে বগুড়ার সোনাতলা থানার মধ্য দিগলকান্দি গ্রামের ডা. সুধীর চন্দ্র রায়ের ছেলে শৈলেশ কুমার রায় কালুর ফাঁসি (পলাতক), নাটোর শহরের দক্ষিণ বড়গাছা এলাকার মীর আনিছুর রহমানের ছেলে মাহবুবুর রহমান রনিক এবং সিংড়া থানার বড় মাঝগ্রামের আবদুল মালেকের ছেলে শহিদুল ইসলামকে যাবজ্জীবন জেল দেওয়া হয়। অপর আসামি উজ্জ্বল হোসেন বেকসুর খালাস পান।
পরে মৃত্যুদণ্ডাদেশ অনুমোদন (ডেথ রেফারেন্স) এর জন্য এবং আসামিদের জেল আপিলের পর এ মামলাটি হাইকোর্টে আসে।
শহীদুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, শুনানি শেষে হাইকোর্ট শহীদুল ইসলামকে খালাস এবং শৈলেশ কুমার রায় কালু এবং রনিককে যাবজ্জীবন দণ্ড দেন।
আদালতে শহীদুল ইসলামের পক্ষে শুনানি করেন হেলাল উদ্দিন মোল্লা ও রনিকের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার আমিনুল হক।

Archive Calendar
Sat Sun Mon Tue Wed Thu Fri
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031