বাবার কবরের পাশে শেষ ঘুমে মহিউদ্দিন চৌধুরী

দলীয় নেতাকর্মী ও অনুসারীরা চোখের জলে বিদায় জানালেন তাদের প্রিয় এই নেতাকে।  চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি খোরশেদ আলম সুজন জানান, শুক্রবার আসরের পর নগরীর লালদীঘি মাঠে হাজারো মানুষ মহিউদ্দিন চৌধুরীর জানাজায় অংশ নেয়। তার আগে এই মুক্তিযোদ্ধার প্রতি জানানো হয় রাষ্ট্রীয় সম্মান।  সন্ধ্যায় চশমা হিলে আরেক দফা জানাজার পর দাফন করা হয় এই রাজনীতিবিদকে।  চট্টগ্রামের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন, বন্দর রক্ষা আন্দোলন ও অসহযোগ আন্দোলনে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেওয়া মহিউদ্দিন চৌধুরী হৃদরোগ ও কিডনি জটিলতায় ভুগছিলেন। নগরীর ম্যাক্স হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার রাত ৩টার দিকে তার মৃত্যু হয়। তার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।  ষাটের দশকের ছাত্রলীগ নেতা মহিউদ্দিন একাত্তরে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে সংগঠকের ভূমিকা পালন করেন। পঁচাত্তরে বঙ্গবন্ধু সপরিবারে নিহত হওয়ার পর পালিয়ে প্রায় তিন বছর তাকে কলকাতায় থাকতে হয়। ১৯৯৪ সালে প্রথমবার চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর টানা তিন মেয়াদে তিনি ওই দায়িত্ব পালন করেন। চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব তিনি পালন করে আসছিলেন প্রায় এক যুগ ধরে।  তার মৃত্যুর খবরে সকালে তার চশমা হিলের বাড়িতে ভিড় করেন বিভিন্ন দলের রাজনীতিবিদ এবং বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ। সেখান থেকে দুপুরে কফিন নিয়ে যাওয়া হয় দারুল ফজল মার্কেটে দলীয় কার্যালয়ের সামনে। সেখানে দলীয় নেতাকর্মীরা শ্রদ্ধা আর ভালোবাসায় তাকে শেষ বিদায় জানায়।  মহিউদ্দিন চৌধুরীর জন্ম ১৯৪৪ সালের ১ ডিসেম্বর রাউজানের  গহিরা গ্রামের বক্স আলী চৌধুরী বাড়িতে। বাবা রেল কর্মকর্তা হোসেন আহমদ চৌধুরী এবং মা বেদুরা বেগম। বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে মহিউদ্দিন চৌধুরী বলিষ্ঠ নেতৃত্বের জন্য সারাদেশে পরিচিতি পেলেও মহিউদ্দিন সব সময় নিজেকে ধরে রেখেছেন চট্টগ্রামের রাজনীতির গণ্ডিতেই। ১৯৮৬ ও ১৯৯১ সালে দুই বার সংসদ নির্বাচনে অংশ নিলেও কখনও এমপি নির্বাচিত হতে পারেননি।
তার ছয় ছেলেমেয়ের মধ্যে ফৌজিয়া সুলতানা টুম্পা ২০০৮ সালের ১৭ অক্টোবর ক্যান্সারে মারা যান। বাকি তিন মেয়ের মধ্যে জেবুন্নেসা চৌধুরী লিজা গৃহিনী। যমজ বোন নুসরাত শারমিন পিয়া ও ইসরাত শারমিন পাপিয়া মালয়েশিয়ায় এমবিএ করেছেন।
মহিউদ্দিন চৌধুরীর বড় ছেলে মুহিবুল হাসান নওফেল আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক; আর ছোট ছেলে বোরহানুল হাসান চৌধুরী সালেহীন একজন ব্যবসায়ী।

Archive Calendar
Sat Sun Mon Tue Wed Thu Fri
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
31