রাঙ্গামাটিতে পার্বত্য ভূমি কমিশনের বৈঠক অনুষ্ঠিত * বৈঠকের প্রতিবাদে রাঙ্গামাটি ও খাগড়াছড়িতে বাঙ্গালীদের সড়ক অবরোধ

রাঙ্গামাটিতে পার্বত্য ভূমি কমিশনের বৈঠক অনুষ্ঠিত
* বৈঠকের প্রতিবাদে রাঙ্গামাটি ও খাগড়াছড়িতে বাঙ্গালীদের সড়ক অবরোধ
॥ নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ পাহাড়ের ভূমি বিরোধ নিস্পত্তি কমিশনের আবেদন জমা দানের সময় সীমা বাড়ানো হয়েছে। সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি এখন থেকে যে কোন সময় পার্বত্য ভূমি বিরোধ নিস্পত্তি কমিশনে আবেদন করতে পারবেন বলে জানিয়েছেন পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন চেয়ারম্যান সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মো. আনোয়ার উল হক।
তিনি বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন আইন অনুয়ায়ে কোন সম্প্রদায়ের প্রতি বৈষম্য করা হবেনা। চলতি বছরের ৮ সেপ্টেম্বর পার্বত্য চট্টগ্রামের বিরাজমান ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তির লক্ষ্যে ক্ষতিগ্রস্তদের ৪৫দিনের মধ্যে আবেদন চেয়ে গণবিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে ছিল। ওই সময়ের মধ্যে তিন পার্বত্য জেলা রাঙ্গামাটি, বান্দরবান ও খাগড়াছড়ি থেকে প্রায় ১৫ হাজার ৯৬৯টি আবেদনপত্রও জমা পরেছে। যারা আবেদন জমা দিতে পারেনি তারাও যেকোন সময় ভূমি কমিশন অফিসে আবেদনপত্র জমা দিতে পারবে। তার জন্য কোনো নিদিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়নি।
রবিবার (৩০ অক্টোবর) রাঙ্গামাটি সার্কিট হাউজে পার্বত্য ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশনের বৈঠক শেষে কমিশন চেয়ারম্যান সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মো. আনোয়ারুল হক সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
সকাল ১০টায় পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমিবিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন চেয়ারম্যান সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মো. আনোয়ারুল হক সভাপতিত্বে পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ চেয়ারম্যান ও জনসংহতি সমিতি সভাপতি জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা ওরফে সন্তু লারমা, রাঙ্গামাটির চাকমা সার্কেল চিফ রাজা ব্যারিস্টার দেবাশীষ রায়, খাগড়াছড়ির মং সার্কেল চীপ সাচিং প্রু চৌধূরা ও বান্দরবানের বোমাং সার্কেল উ ছ প্রু চৌধুরী, রাঙ্গামাটি জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বৃষকেতু চাকমা, বান্দরবান জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ক্যা শৈ হ্লা, চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনারের প্রতিনিধি অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার মমিনুর রশিদ আমিন, ও কমিশনের সচিব রেজাউল করিম উপস্থিত ছিলেন।
পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ চেয়ারম্যান ও জনসংহতি সমিতি সভাপতি জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা ওরফে সন্তু লারমা বলেন, খুব আন্তরিকার সাথে কমিশনের বৈঠকে সবাই আলোচনায় অংশ নিয়েছে। বৈঠকে পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন যে বিষয়গুলো তুলে ধরেছেন সে বিষয়গুলো আমি গ্রহণ করেছি। জনবলেন সঙ্কটের কারনে কমিশনের অনেক কাজ এগিয়ে নেওয়া সম্ভব হয়নি। কমিশন যে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন সে অনুসারে কাজ হবে।
রাঙ্গামাটি চাকমা সার্কেল চিফ রাজা ব্যারিস্টার দেবাশীষ রায় বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন বিধি প্রনয়ন, জনবল নিয়োগ ও লজিষ্ট্রিক সাপোর্ট দিতে সরকারকে তাগিদ দেয়া হয়েছে। এসব সহযোগিতা না পেলে এ কমিশনের কাজ যথাযথ অগ্রসর হতে পারবেনা। ভূমি বিষয়ে বিভিন্ন ধরনের অভিযোগপত্র জমা পরেছে। এসব আবেদনপত্র পর্যবেক্ষণ করার পর স্ব স্ব  সার্কেল চীফ ও চেয়ারম্যানরা তাদের সুনিদিষ্ট মতামত দিতে পারবেন। তার জন্য সময়ের প্রয়োজন রয়েছে। কমিশনের আইনের বাইরে কোন কাজ করা হবেনা। যার কারণে কোন সম্প্রদায়ের আতঙ্কিত হওয়ারও প্রয়োজন নেই।
উল্লেখ্য ভ’মি বিরোধ নিস্পত্তি কমিশন গত ৮ সেপ্টেম্বর থেকে ২৪অক্টোবর পর্যন্ত ৪৫ দিন মেয়াদে ভ’মি বিরোধের আবেদন আহবান করে গত বিজ্ঞপ্তি জারি করে। যার মেয়ার আজকের বৈঠকে বাড়ানো হয়েছে। গত ৬ অক্টোবর সংসদে পার্বত্য ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন সংশোধনী আইন পাশ হওয়ার পর এটা কমিশনের দ্বিতীয় বৈঠক।
এদিকে পার্বত্য ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন সংশোধন আইন বাতিল ও পার্বত্য ভূমি কমিশন বিরোধ নিস্পত্তি কমিশনের বৈঠকের প্রতিবাদে গতকাল রাঙ্গামাটি জেলায় বাঙ্গালীদের ডাকে সড়ক অবরোধ পালিত হয়েছে। পার্বত্য অঞ্চলের পাঁচটি বাঙ্গালী সংগঠন এ অবরোধের ডাক দিয়েছে।
অবরোধের কারনে শহরে অভ্যন্তরীন ও দুরপাল্লার সব ধরণের যান চলাচল বন্ধ ছিলো। যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকার কারণে আটকা পড়েছে শত শত যাত্রী। শহরে অটোরিক্সা বন্ধ থাকায় শহর বাসীর মাঝে দূর্ভোগ নেমে আসে। শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ। তবে অবরোধ চলাকালে কোথাও কোন পিকেটার দেখা যায়নি এবং কোন গলোযোগের খবর পাওয়া যায়নি।

Archive Calendar
Sat Sun Mon Tue Wed Thu Fri
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031