সিনহা কিছু সত্য কথা বলায় পদ ছাড়তে হয়েছে —খালেদা জিয়া

তিনি বলেছেন, “প্রধান বিচারপতি কিছু সত্যি কথা বলেছিলেন-এই যে নিম্ন আদালত নিয়ন্ত্রণ করছে সরকার, আবার উচ্চ আদালতের দিকেও তারা হাত বাড়াচ্ছে, একে নিয়ন্ত্রণ করতে চাচ্ছে। তাহলে মানুষ ন্যায়বিচার পাবে না।

“আজকে সেটাই সত্য হলো। কথা বললে যে দোষ এটা আজকে প্রমাণিত হলো। তিনি (এস কে সিনহা) সত্য কথা বলেছিলেন বিধায় তাকে আজকে বিদায় নিতে হয়েছে।”

ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায় নিয়ে ক্ষমতাসীনদের তোপের মুখে ছুটি নিয়ে বিদেশে যাওয়ার পর সেখান থেকেই পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছেন বিচারপতি এস কে সিনহা।

সংবিধানের ওই সংশোধনীর মাধ্যমে বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা সংসদের হাতে ফিরিয়ে আনা হয়েছিল। কিন্তু রায়ে তা বাতিল করে জিয়াউর রহমানের সামরিক শাসনামলে প্রতিষ্ঠিত সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল ফিরিয়ে আনে সুপ্রিম কোর্ট। ওই রায় এবং পর্যবেক্ষণ নিয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতা, এমনকি খোদ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও প্রধান বিচারপতির সমালোচনা করেন। রায়ের পর্যবেক্ষণে বঙ্গবন্ধুকে ‘খাটো করা হয়েছে’ অভিযোগ তুলে বিচারপতি সিনহার পদত্যাগের দাবি তোলেন ক্ষমতাসীন দলের অনেক নেতা।

দেশের ইতিহাসে প্রথম কোনো প্রধান বিচারপতির পদত্যাগের পরদিন রোববার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জনসভায় বক্তব্যে এই প্রসঙ্গে কথা বলেন খালেদা জিয়া, যিনি দুই মেয়াদে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন।

তিনি বলেন, “আজকে বিচার বিভাগের কী অবস্থা আপনারা দেখেছেন। প্রধান বিচারপতিকে পর্যন্ত জোর করে অসুস্থ বানিয়ে দেশের বাইরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। দেশের বাইরে পাঠিয়ে শুধু নয়, দেশের বাইরে এজেন্সির লোক পাঠিয়ে তার উপর চাপ সৃষ্টি করে তাকে পদত্যাগে বাধ্য করা হয়েছে।

“সে চেয়েছিল দেশে ফিরে আসতে। কিন্তু তাকে দেশে ফিরতে দেওয়া হয়নি। তার উপর চাপ সৃষ্টি করে তাকে বাধ্য করা হয়েছে পদত্যাগ করার জন্য।”

২০১৫ সালের ১৭ জানুয়ারি প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব পাওয়া বিচারপতি সিনহার চাকরির মেয়াদ ছিল আগামী ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত। তিনি শেষ অফিস করেন সুপ্রিম কোর্টের অবকাশ শুরুর আগে গত ২৪ অগাস্ট।

৩ অক্টোবর আদালত খোলার আগের দিন সরকারের তরফ থেকে অসুস্থতাজনিত কারণে তার ছুটিতে যাওয়ার কথা জানানো হয়। এরপর ১৩ অক্টোবর অস্ট্রেলিয়ার উদ্দেশ্যে দেশ ছাড়েন তিনি।

ঢাকা ছাড়ার সময় বিচারপতি সিনহা বলেছিলেন, তিনি অসুস্থ নন, ক্ষমতাসীনদের সমালোচনায় বিব্রত।

Archive Calendar
Sat Sun Mon Tue Wed Thu Fri
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930