স্বপ্নবাজ তরুন মোঃ সালাহউদ্দিন কাদের মানিক

এক প্রতিভা, যিনি নিজ প্রচেষ্টা ও সাধনায় নিজেকে করেছে অলংকৃত, শ্রোতা সাধারণকে করেছে বিমোহিত। যার নাম হয়ত ভবিষ্যৎ শ্রোতাদের মাঝে আন্দোলিত হতে পারে। চট্টগ্রামবাসী যাকে নিয়ে একদিন গর্ববোধ করবে বলে দৃঢ় বিশ্বাস। একদিন হয়ত যার কন্ঠে বিমোহিত হতে পারে সারা বংলার শ্রোতা সাধারণ।
তিনি প্রত্যন্ত অঞ্চলে জন্ম নেওয়া এক স্বপ্নবাজ তরুন – মোঃ সালাহউদ্দিন কাদের মানিক। ১৯৮৪ সালে চট্টগ্রামের বাঁশখালী থানার অন্তর্গত সরল গ্রামের সম্ভান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। বরকত আলী মাঝির বাড়ীর মরহুম হাজী জমির উদ্দিন এবং পশ্চিম বাঁশখালীর খ্যাতিমান জমিদার মরহুম হাজী নবাব আলী চৌধুরীর ৫ম কন্যার ৫ম সন্তান। গ্রামে যার শৈশব কৈশোর কাটে। স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কৃত্বিত্বের সাথে প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করে একই এলাকার সরল আমিরিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে মাধ্যমিক শিক্ষা সফলভাবে শেষ করে।
মাধ্যমিক পরিক্ষা সম্পন্ন করার পর চট্টগ্রাম শহরে পাড়ী জমায় উচ্চ শিক্ষা অর্জনের তাগিদে। চট্টগ্রাম কলেজ হতে ¯œাতকোত্তর এবং চট্টগ্রাম আইন কলেজ থেকে এল.এল.বি সম্পন্ন করে বর্তমানে একটি স্বনামধ্যন্য ব্যংকে অফিসার পদে কর্মরত আছে।
সালাহ উদ্দিন কাদের মানিকের গ্রামে সরেজমিনে খোজ নিয়ে জানা যায়, এলাকায় তিনি মানিক নামে পরিচিত। গ্রামবাসী ও এলাকার গণ্যমাণ্য ব্যাক্তিদের সাথে আলাপ কলে জানতে পাির “ছোট বেলা থেকে মানিকের গানের প্রতি অধম্য আগ্রহ ছিল। যে কোন পরিস্থিতিতে তড়িৎ নিজের ভাষার গান গাওয়ার সক্ষমতা ছোট বেলা থেকে তাঁর ছিল। এলাকার যে কোন সংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে মানিকের উপস্থিতি ছিল শতভাগ। যার সুবাধে বিভিন্ন সময় গান করার সুযোগ সৃষ্টি হত তার। প্রাণ ভরে শ্রোতারা উপভোগ করত মানিকের গান।
এলাকাবাসী ও বন্ধ বান্ধবের আক্ষেপ, যদি যথাযতভাবে প্রশিক্ষনের ব্যবস্থা করা হত, তাহলে এতদিনে সত্যিকার অর্থে নামকরা একজন শিল্পি হিসাবে নিজেকে গড়ে তুলতে পারত।”
চট্টগ্রাম শহরে পাড়ি জমানোর পর মানিক আবার গানের প্রতি মনোযোগী হয়। যার প্রচষ্টোয় অনেক সাধনার পর প্রথমবারের মত ঈদুল ফিতরে নিজের কথা ও সূরে ৫টি গান জনপ্রিয় অনলাইন ভিডিও মাধ্যম ইউটিইবে প্রকাশ পায়। গান গুলো যথাক্রমে:

১) আমার ভাগ্য চাকা ঘুরছে

২) ও মাইয়্য

৩) তুমি এতো বিবেকহীনা

৪) দেখো সুখের পাখি

৫) সন্ধ্যবেলায় সাগর পাড়ে।

গানের বিষয়ে তাঁহার সাধনা ও সফলতা নিয়ে তরুন শিল্পি মানিকের সাথে একান্ত আলাপ কালে বলেন, “ গানের প্রতি একটি টান ছোট বেলা থেকে আমার ছিল। যে কোন ধরেন গানের শব্দ আমার কানে পৌছলে আমি যেন ঐ সুরে হারিয়ে যেতাম। প্রত্যন্ত অঞ্চলে জন্ম নেওয়ায় যথাযথ সুযোগ সুবিধা না পাওয়ায় সেভাবে আর নিজেকে গড়ে তুলতে পারিনি। যখন মাধ্যমিক পরিক্ষা শেষে চট্টগ্রাম শহরে পাড়ি জমাই, তখন থেকে আমি মনে প্রাণে চেষ্টা করতে থাকি গান নিয়ে কিছু একটা করার।
বিভিন্ন গানের অনুষ্টানে যাতায়তের সুবাধে অনেকের সাথে আস্তে আস্তে পরিচিত হই। তাদেও সাথে আলাপ করে এটি বুঝতে পারি- একজন উস্তাদ ছাড়া সামনে এগুনোর সুযোগ নেই। তাই একজন মনের মত উস্তাদ খুজতে আরম্ভ করি। অবশেষে পেয়ে যায় এক স্বনাম ধন্য উস্তাদ, যার হাতে প্রথম কোন গানে ভিন্ন মাত্রা যোগ করলাম। তিনি হচ্ছে বাংলাদেশ বেতার চট্টগ্রাম কেন্দ্রের মিউজিশিয়ান উস্তাদ সৈয়দুল হক। যার হাতে দীর্ঘ ৭ বৎসর ধরে গানের তালিম নিচ্ছি এবং পাশাপাশি খ্যাতিমান  শিল্পি চট্টগ্রাম বাঁশখালীতে জন্ম নেওয়া ফকির সাহাবউদ্দিন এর নিকট তালিম নিচ্ছি।  যদিও বা গ্রামে থাকাকালিন কিছুদিনের জন্য উস্তাদ জিতেন্দ্র লাল  এর কাছে তালিম নিয়েছিলাম।
যদিও ছোট বেলা থেকে গান গাওয়ার চেষ্টা করতাম। কিন্তু ২০০১ সাল হতে মূলত গান নিয়ে চুড়ান্ত ভাবে ভাবতে আরম্ভ করি। তখন থেকে আমি বেশ কয়েকটি গান নিজে নিজে রচনা করি।
দীর্ঘ প্রচেষ্টা পর গানগুলোতে নিজেই সূর দিয়ে নিজের কন্ঠে রেকর্ড করাতে সক্ষম হই। যা এই ঈদুল ফিতরে জনপ্রিয় অনলাইন ভিডিও মাধ্যম ইউটিউবে প্রকাশ করি।
গানগুলো প্রকাশ হওয়ার পর শ্রোতাসাধরনের যথেষ্ট সাড়া পাই। শ্রোতাদের উচ্ছাসিত আবেগ আমাকে আরো বেশী অনুপ্রেরণা দেয়। যার ফলে সিদ্ধান্ত নিয়েছি- আগামী ঈদুল আযহায় গানগুলোকে নতুন আঙ্গিকে মিউজিক ভিডিওর মাধ্যমে শ্রোতা সাধারণকে পৌছে দিব। সবার কাছে দোয়া কামনা করছি।”
পরিশেষে বলতে হয়, বাংলাদেশের সংগীত অংগনে নিজের কথা ও সূর এবং কন্ঠে গান করা শিল্পির ক্ষুদ্র তালিকায় হয়ত আরেকটি নাম রেকর্ড হতে চলছে।

Archive Calendar
Sat Sun Mon Tue Wed Thu Fri
 1234
567891011
12131415161718
19202122232425
262728293031