ইউএস-বাংলা বিধ্বস্তের ঘটনায় নিহতের সংখ্যা ৫০ ছাড়াতে পারে : শঙ্কা

কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের জেনারেল ম্যানেজার রাজ কুমার ছেত্রিকে উদ্ধৃত করে দেশটির ইংরেজি নিউজ পোর্টাল মাই রিপাবলিকা বলেছে, ৭১ জন আরোহীর মধ্যে অন্তত ৫০ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে তারা আশঙ্কা করছেন। তারা এখনও উদ্ধার কাজ শেষ করতে পারেননি।

নেপালের একজন সেনা কর্মকর্তার বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্সও একই খবর দিয়েছে। বিমানবন্দরের নিরাপত্তাকর্মী ও নেপাল সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে উদ্ধার তৎপরতা চালাচ্ছে। কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিমান ওঠানামা আপাতত বন্ধ রাখা হয়েছে।

কাঠমান্ডুতে বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ওই উড়োজাহাজের যাত্রীদের মধ্যে ১৭ জনকে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। জরুরি যোগাযোগের জন্য একটি হটলাইন খুলেছে দূতাবাস কর্তৃপক্ষ।

ইউএস-বাংলা কর্তৃপক্ষ বলছে, ড্যাশ-৮ কিউ৪০০ মডেলের ওই উড়োজাহাজে ৭১ জন আরোহীর মধ্যে ৬৭ জন ছিলেন যাত্রী, বাকিরা ক্রু।

যাত্রীদের মধ্যে বাংলাদেশের ৩২ জন, নেপালের ৩৩ জন, চীনের একজন  ও মালদ্বীপের একজন যাত্রী ছিলেন বলে এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে জানানো হয়েছে।

ইউএস-বাংলার জনসংযোগ শাখার জিএম কামরুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা নেপালে যোগাযোগ রেখেছি। বিস্তারিত তথ্য আমরা পরে জানাতে পারব।”

উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হয়ে হতাহতের এ ঘটনায় গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি নিহতদের আত্মার মাগফিরাত ও শান্তি কামনা করেছেন এবং আহতের দ্রুত সুস্থতা কামনা করেছেন। শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি আন্তরিক সমবেদনা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।

ইউএস-বাংলার ফ্লাইট বিএস ২১১ ঢাকার শাহজালাল থেকে রওনা হয় বাংলাদেশ সময় দুপুর ১২টা ৫২ মিনিটে। নেপাল সময় বেলা ২টা ২০ মিনিটে কাঠমান্ডুতে নামার সময় পাইলট নিয়ন্ত্রণ হারালে উড়োজাহাজটি রানওয়ে থেকে ছিটকে পড়ে এবং আগুন ধরে যায়।

নেপালের বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের ডিজি সঞ্জিব গওতমের বরাত দিয়ে কাঠমান্ডু পোস্ট লিখেছে, ড্যাশ-৮ কিউ৪০০ মডেলের ওই উড়োজাহাজ ত্রিভূবনে নামার কথা ছিল রানওয়ের দক্ষিণ দিক দিয়ে। কিন্ত সেটি নামার চেষ্টা করে উত্তর দিক দিয়ে। ধারণা করা হচ্ছে, পাইলট কোনো ধরনের কারিগরি জটিলতায় পড়েছিলেন।

ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের মুখপাত্র প্রেম নাথ ঠাকুরের বরাত দিয়ে নেপালের ইংরেজি দৈনিক দি হিমালয়ান জানায়, উড়োজাহাজটি থেকে ২৫ জনকে উদ্ধার করে কাঠমান্ডু মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল। তাদের মধ্যে আটজনকে সেখানে মৃত ঘোষণা করা হয়।

বাংলাদেশের কোনো উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হয়ে হতাহতের সবচেয়ে বড় ঘটনাটি ঘটে ১৯৮৪ সালে। ওই বছর ৫ অগাস্ট বাংলাদেশ বিমানের একটি ফকার এফ-২৭ বিরূপ আবহাওয়ার মধ্যে ঢাকা বিমানবন্দরের কাছে বিধ্বস্ত হলে ৪৯ জন নিহত হন।

 

Archive Calendar
Sat Sun Mon Tue Wed Thu Fri
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031