‘ইসরায়েলের বসতি নির্মাণে মধ্যপ্রাচ্যের শান্তি প্রচেষ্টা বিপন্ন’
ফিলিস্তিনের দখলকৃত এলাকায় ইসরায়েলের বসতি নির্মাণে মধ্যপ্রাচ্যের শান্তি বিপন্ন হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের বিদায়ী পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি।
বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে দেওয়া ৭০ মিনিটের এক বক্তৃতায় কেরি যুক্তরাষ্ট্রের দীর্ঘদিনের মিত্র ইসরায়েলের বিভিন্ন পদক্ষেপে হতাশা ব্যক্ত করেন।
মেয়াদ শেষের মাত্র তিন সপ্তাহ আগে দেওয়া এ বক্তৃতায় কেরি বলেন, ইসরায়েলি ও ফিলিস্তিনিরা তাদের নিজ নিজ রাষ্ট্রে বসবাস করবে, এ বিষয়টি ইসরায়েল মেনে না নেওয়া পর্যন্ত তারা কখনোই আরবদের সঙ্গে শান্তিতে থাকতে পারবে না।
তিনি বলেন, “কয়েক বছর ধরে আমাদের সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা সত্বেও দুই রাষ্ট্র সমাধান এখন একটি গুরুতর ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। শান্তির আশা বিলীন হয়ে যাচ্ছে দেখেও আমরা কিছু না বলে বা করে থাকতে পারছি না।”
“বিবেকের তাড়নায় আমরা বসতি স্থাপনের বিষয়ে যারা চরমপন্থি তাদেরকে সমর্থন করতে পারছি না, কারণ এটি দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধানকে ধ্বংস করার চেষ্টা করছে। ঘৃণা ও সহিংসতা ছড়ানো ফিলিস্তিনিদের পদক্ষেপের দিকেও আমরা চোখ বন্ধ করে রাখতে পারি না। একক রাষ্ট্র গঠনে কাউকে সহায়তা করায় যুক্তরাষ্ট্রের কোনো স্বার্থ নেই।” -বলেন কেরি।
এর প্রতিক্রিয়ায় তড়িঘড়ি করে দেওয়া এক বিবৃতিতে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু কেরির বিরুদ্ধে পক্ষপাতের অভিযোগ আনেন।
তিনি বলেন, বিদেশি নেতাদের লেকচারের দরকার নেই ইসরায়েলের। যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে কাজ করার জন্য সামনে তাকিয়ে আছে ইসরায়েল।
কেরির মন্তব্য ও নেতানিয়াহুর জবাবে প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা প্রশাসনের অধীনে যুক্তরাষ্ট্র-ইসরায়েলের তিক্ত সম্পর্কের শেষটা চিহ্নিত হয়ে থাকল। ফিলিস্তিনের দখলকৃত এলাকায় ইসরায়েলের বসতি নির্মাণ ও ইরানের সঙ্গে পরমাণু চুক্তি নিয়ে ওবামা-নেতানিয়াহু প্রশাসনের মধ্যে বিভেদ দেখা দেয়।
দুই প্রশাসনের সম্পর্ক সবচেয়ে নাজুক পর্যায়ে নেমে যায় যখন দখলকৃত এলাকায় ইসরায়েলি বসতি নির্মাণ বন্ধ করার দাবি জানিয়ে গেল শুক্রবার একটি প্রস্তাব পাস করে জাতিসংঘ। অতীতে জাতিসংঘের এই ধরনের পদক্ষেপে যুক্তরাষ্ট্র ভেটো দিলেও এবার তা করেনি।
এর প্রতিক্রিয়ায় ওবামা ও কেরিকে সরাসরি তীব্র আক্রমণ করে কথা বলেন ইসরায়েলি কর্মকর্তারা।
যুক্তরাষ্ট্র প্রকাশ্যে ও গোপনে বহুবার ইসরায়েলকে বসতি নির্মাণ বন্ধের অনুরোধ করেছে বলে জানিয়েছেন কেরি।
ওবামা প্রশাসনের বিদায়কালীন কেরির এসব কথাবার্তা ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের মধ্যে পরিস্থিতি পরিবর্তনে কোনো ভূমিকা রাখবে না বলেই ধারণা পর্যবেক্ষকদের।