॥ ডেস্ক রিপোর্ট ॥ অস্বাভাবিক পরিস্থিতির কারণেই এভাবে এইচএসসির ফল প্রকাশ করতে হয়েছে উল্লেখ করে এই ফল প্রকাশ নিয়ে তিক্ততা সৃষ্টি করা উচিত না বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, এটা নিয়ে অনেকেই অনেক কথা বলেছেন। আমার মনে হয়, এটা নিয়ে বেশি কথা বলা বা তিক্ততা সৃষ্টি করা উচিত না। আমাদের ছোট ছেলে-মেয়েদের জীবনের দিকে তাকাতে হবে। তারা যেন কোনো ভাবেই হতাশাগ্রস্ত না হয়ে পড়ে।
তিনি বলেন, এমনিতেই তারা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেতে পারছে না। এটা তাদের জীবনে বিরাট বাধার সৃষ্টি করছে। সেখানে যদি ফল নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করা হয়, কিংবা পদ্ধতি নিয়ে কথা বলা হয়, এটাও কিন্তু মানসিক চাপ তৈরি করে। যারা এবারের পরীক্ষার ফলে নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করছেন তাদের এ ধরণের কথাবার্তা থেকে বিরত থাকার অনুরোধ করেন প্রধানমন্ত্রী।
শনিবার (৩০ জানুয়ারি) সকালে রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফল প্রকাশ ও হস্তান্তর অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে যুক্ত হয়ে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনা ভাইরাস এমনভাবে মহামারি আকারে বিশ্বব্যাপী দেখা দিয়েছে যে, সারাবিশ্বকে স্থবির করে দিয়েছে। প্রথমে ভেবেছিলাম অবস্থার পরিবর্তন হবে, আর পরিবর্তন হলে আমরা পরীক্ষা নিতে পারবো। আমরা দেখতে পাচ্ছি, এটা কোনোভাবেই বন্ধ হচ্ছে না; বরং নতুন করে সংক্রমণ ঘটাচ্ছে। আমাদের ছেলেমেয়েদের পড়াশোনা যাতে নষ্ট না হয়, সেদিক লক্ষ্য রেখে অস্বাভাবিক পরিস্থিতির কারণে ফল ঘোষণা করলাম। শুধু বাংলাদেশে না, অনেক দেশেই একইভাবে ফল ঘোষণা করা হয়েছে।
তিনি বলেন, বিভিন্ন দেশে যেসব পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, আমাদের যারা শিক্ষা বিশেষজ্ঞ আছেন তাদের সবার পরামর্শ নিয়ে সবদিক বিবেচনা করে এই পদ্ধতিতে ফল তৈরি করা হয়েছে। এটা একটা কঠিন কাজ ছিল। যারা এর সঙ্গে জড়িত ছিলেন, তারা অবশ্যই ধন্যবাদ পাওয়ার যোগ্য। তাছাড়া আমরা চাই না আমাদের শিক্ষার্থীদের জীবন থেকে একটি বছর নষ্ট হয়ে যাক। সে জন্য ফল ঘোষণা করলাম। করোনাভাইরাস আমরা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে যাচ্ছি। মহামারির থেকে মানুষ যখন মুক্তি পাবে তখন আবারও যথাযথ নিয়মে ক্লাস হবে। যারা প্রমোশন পাবে তারা পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারবে এবং পরবর্তী পরীক্ষার ফলাফলের ওপর তাদের ভাগ্য নির্ভর করছে।
শিক্ষার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবার জন্য ভ্যাকসিন নিশ্চিতের নির্দেশ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ফেব্রুয়ারি মাসটা আমরা করোনা পরিস্থিতি দেখবো। তারপর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবো।
তিনি আরও বলেন, ‘স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে সংশ্লিষ্ট সবাইকে ভ্যাকসিন দিতে হবে। সবাই যদি এটি মেনে চলেন তাহলে আমরা আরেকটু নিয়ন্ত্রণ করতে পারবো এবং খুব দ্রুতই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দিতে পারবো। আগামী মাসটা দেখবো। কারণ মার্চ মাসেই এই করোনা ভাইরাসের ব্যাপক সংক্রমণ শুরু হয়েছিল। আমরা ফেকব্রুয়ারি মাস নজরে রাখবো। পরবর্তীতে আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার ব্যবস্থা নেবো। সেই চিন্তা আমাদের আছে। কাজেই আমরা যত দ্রুত পারি ব্যবস্থা নেবো।
