ক্ষমা চেয়ে নেতৃত্ব টিকিয়ে রাখলেন কামাল

নিউজ ডেস্ক: হঠাৎ করেই ড. কামাল হোসেনকে নেতা বানিয়ে বিএনপি ক্ষমতায় যাবার এজেন্ডা বাস্তবায়নে মরিয়া হয়ে পড়েছিল। বিএনপি নেতাদের সম্মান আর শ্রদ্ধা পেয়ে ড. কামাল প্রধানমন্ত্রী হবার স্বপ্নে বিভোর ছিলেন। আর তারই প্রতিফলন পেলেন বুধবার সিলেটে জাতীয় ঐক্য ফ্রন্টের সমাবেশের পর। সামান্য ভুলে ড. কামালকে তীব্র ভাষায় ভৎর্সনা এবং আক্রমণ করলেন বিএনপির নেতারা। জানা গেছে, সমাবেশে খালেদা জিয়ার নাম না নেয়ায় তীব্র সমালোচনার মুখে ড. কামাল হোসেনকে দুঃখ প্রকাশ করতে বাধ্য করেছেন বিএনপি নেতারা। ড. কামাল ‘সরি’ বলে নিজের নেতৃত্ব এবারের মতো টিকিয়ে রাখতে পেরেছেন বলেও বিশ্বস্ত সূত্র নিশ্চিত করেছে।

বুধবার সিলেটে জাতীয় ঐক্য ফ্রন্টের সমাবেশ ছিল। প্রকাশের পর এটিই ছিল ঐক্যফ্রন্টের প্রথম কর্মসূচি। কর্মসূচির প্রধান অতিথি ছিলেন ড. কামাল হোসেন। ড. কামাল হোসেন তাঁর বক্তব্যে একবারও বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি চান নি। এমনকি তিনি তারেক জিয়া সম্পর্কেও কোন মন্তব্য করেন নি। সিলেটে তারেক জিয়ার প্রভাব অন্তত বেশি। এই আসন থেকে তারেক জিয়ার স্ত্রী ডা. জোবায়দা রহমানের নির্বাচন করারও গুঞ্জন রয়েছে। বর্তমান মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী তারেক জিয়ার একক ইচ্ছায় মেয়র পদে মনোনয়ন পেয়েছেন। তাই অনুষ্ঠান শেষ করেই সিলেটের মেয়র ড. কামাল হোসেনকে মঞ্চ থেকে নামাতে নামাতে বলেন ‘এ রকম একটা জনসভা করে দিলাম, একবার ম্যাডামের নাম নিলেন না, তাঁর মুক্তি চাইলেন না।’ ড. কামাল হোসেন প্রথমে বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে বলেন, ‘ফখরুল সাহেব তো চাইলেন?’ এবার সিলেটের মেয়র একটু চড়া সুরেই বলেন, ‘ম্যাডামের মুক্তি না চাইলে, কিসের ঐক্য ফ্রন্ট?’ ঘটনার এখানেই শেষ নয়, এরপর নেতারা এক সঙ্গে বসে চা পান করছিলেন তখন আমান উল্ল্যাহ আমান বলেন,‘ এরপর আমাদের জনসভায় যদি কেউ ম্যাডামের মুক্তি দাবি না করে, ভাইয়ার (তারেক জিয়া) মামলা প্রত্যাহারের কথা না বলে, তাহলে তাকে মঞ্চ থেকে নামিয়ে দেয়া হবে। এ সময় বিএনপি মহাসচিব বিষয়টি থামানোর চেষ্টা করেন। তিনি ছিলেন,‘এটা নিয়ে বাড়াবাড়ির দরকার নেই।’

কিন্তু বরকত উল্লাহ বুলু এবং জয়নাল আবেদীন এর তীব্র প্রতিবাদ করেন। তারা বলেন,‘ জনসভায় যে লোক এসেছে তার প্রায় পুরোটাই বিএনপির। জনসভায় খালেদা জিয়া এবং তারেক জিয়ার কথা না বললে কর্মীরা হতাশ হয়।’ জয়নুল আবেদীন ড. কামাল হোসেনকে ইঙ্গিত করে বলেন‘ উনি বঙ্গবন্ধুর নাম উচ্চারন করতে পারলে কেন শহীদ জিয়ার নাম উচ্চারণ করবেন না। করলে সবার নাম নেবেন অথবা কারো নামই নেবেন না।’ একপর্যায়ে তরুন নেতাদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। পরিস্থিতি সামাল দিতে এগিয়ে আসেন ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ। তিনি বলেন, ‘এটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নয়। কেবল প্রথম কর্মসূচি। আস্তে আস্তে সব ঠিক হয়ে যাবে। উনি শহীদ জিয়াও ডাকবেন, তারেক জিয়াকে নেতাও মানবেন।’ এরপর বিএনপি মহাসচিবের পরামর্শে ড. কামাল হোসেন বিএনপির বিক্ষুদ্ধ নেতাদের কাছে দুঃখ প্রকাশ করেন।

ড. কামাল হোসেনের ঘনিষ্ঠ একজন গণফোরাম নেতা বলেছেন, সাত দফার মধ্যে যেহেতু বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়টি আছে, তাই ড. কামাল এটা বলতেই পারতেন। এটা তিনি আসলে ভুলে গিয়েছিলেন। তিনি বলেন, ‘পুলিশের নির্দেশনা ছিল বিকেল পাঁচটার মধ্যে সমাবেশ শেষ করতে হবে, তিনি বক্তৃতাই করতে ওঠেন পাঁচটার পর। এজন্য তাড়া ছিল। তাই হয়তো এই প্রসঙ্গটি আসেনি।’

Archive Calendar
Sat Sun Mon Tue Wed Thu Fri
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930