খাগড়াছড়িতে প্রথম আলো পত্রিকায় আগুন

॥ মোহাম্মদ আবু তৈয়ব, খাগড়াছড়ি ॥ পার্বত্য বাঙ্গালী ছাত্র পরিষদের নামে মিথ্যা, বানোয়াট সংবাদ প্রকাশের প্রতিবাদে খাগড়াছড়িতে প্রথম আলো পত্রিকায় অগ্নিসংযোগ। গতকাল মঙ্গলবার পার্বত্য বাঙ্গালী ছাত্র পরিষদ খাগড়াছড়ি জেলা শাখা কর্তৃক খাগড়াছড়ি সরকারি কলেজ গেইট’র সামনে দৈনিক পত্রিকা প্রথম আলো কর্তৃক গত ১২/০৩/২০১৭ইং তারিখে পার্বত্য বাঙ্গালী ছাত্র  পরিষদকে নিয়ে চাঁদাবাজী সংক্রান্ত যে মিথ্যা, বানোয়াট ও উদ্দেশ্য প্রনোদিত সংবাদ প্রকাশ করে। তার প্রতিবাদে প্রথম আলো পত্রিকায় আগুন জ্বালিয়ে  পুড়িয়ে দিয়েছে এবং প্রতিবাদ সভা করেছে।
উক্ত প্রতিবাদ সভায় উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য বাঙ্গালী পরিষদ’র জেলা সাধারণ সম্পাদক এস.এম. মাসুম রানা, সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তফা কামাল, যুগ্ন সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম, দপ্তর সম্পাদক মৃদুল বড়–য়া, সরকারি কলেজ শাখার সাধারন সম্পাদক ইয়াছিন আরাফাত, সাংগঠনিক সম্পাদক ইউনুছ আলীসহ প্রমুখ।
উক্ত প্রতিবাদ সভায় পার্বত্য বাঙ্গালী পরিষদ’র জেলা সাধারণ সম্পাদক এস.এম. মাসুম রানা বক্তব্য দিতে গিয়ে বলেন, দেশের একটি জাতীয় দৈনকি প্রথম আলো পত্রিকা সম্পূর্ন উদ্দেশ্য প্রনোদিত হয়ে পার্বত্য বাঙ্গালী ছাত্র পরিষদকে নিয়ে মিথ্যা বানোয়াট সংবাদ প্রকাশ করেছে। তাদের সংবাদের ধরণ থেকে স্পষ্টই বোঝা যায় তারা উপজাতীয় সন্ত্রাসী সংগঠন ইউপিডিএফ, জে.এস.এস কর্তৃক কোটি কোটি টাকার চাঁদাবাজীকে বৈধতা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন।
অপরদিকে বাঙ্গালী ছাত্র পরিষদ’র উপর ইউপিডিএফ সংগঠনগুলোর অপকর্মগুলো চাপিয়ে দেয়ার চেষ্টা করেছেন। আমরা এহেন কর্মকান্ডের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানায়। অতি দ্রুত যদি তারা সংবাদ মাধ্যমে নিজেদের ভুল শিকার না করে তাহলে বাঙ্গালী ছাত্র পরিষদ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ পূর্বক সমোচিত জবাব দিতে প্রস্তুত রয়েছে। প্রতিবাদ সভায় সাংগঠনিক সম্পাদক মো: মোস্তফা কামাল বলেন, প্রথম আলো তাদের সংবাদে উল্লেখ করেছে তারা ইউপিডিএফ’র দুইজন নেতার সাথে মুখোমুখি বসে আলোচনা করেছে এবং সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতা সুদাসিন্ধু খিসার উদ্ধৃতি দিয়েছে। অপরদিকে বাঙ্গালী ছাত্র পরিষদের নেতৃত্বে যারা রয়েছেন অর্থ্যাৎ জেলা সভাপতি/সম্পাদক কিংবা সাংগঠনিক সম্পাদকের সঙ্গে প্রথম আলো কর্তৃক কোন আলোচনাতো দূরে থাক যোগাযোগও করেনি অথচ বাঙ্গালী ছাত্র পরিষদের নেতাদের সঙ্গে  নাকি তারা আলোচনা করেছে এমনকি ছদ্ধনামও ব্যবহার করেছে। ছাত্র পরিষদের চাঁদা আদায়ের নাকি দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। পার্বত্য বাঙ্গালী এবং প্রশাসন জানে পার্বত্য অঞ্চলে কারা চাঁদাবাজী করে, চাঁদার জন্য কারা মানুষ গুম,খুন- হত্যা করে। চাঁদা আদায়ের জন্য কাদের কালেক্টর রয়েছে। কোন সংগঠনের নেতার বাড়ি থেকে ৮০ লক্ষ টাকা উদ্ধার হয়েছে। মহালছড়িতে কারা ব্যবসায়ীদের গাড়িতে হামলা- অগ্নিসংযোগ করেছে অথচ প্রথম  আলো এসব সংবাদ সম্পর্কে নিশ্চুপ থেকে বাঙ্গালী ছাত্র পরিষদের নামে মিথ্যা বানোয়াট সংবাদ প্রকাশ করছে। আমাদের ধারণা ইউপিডিএফ’র চাঁদাবাজীর  একটা অংশ এই প্রথম আলো পত্রিকা পেয়ে থাকে। তাই এই সমস্ত দালাল মিডিয়া সম্পর্কে পার্বত্যবাসীকে আরো সতর্ক হওয়ার আহ্বান জানান। পাশাপাশি তিনি প্রথম আলো পত্রিকার সাংবাদিকদের হুশিয়ার করে বলেন ভবিষ্যতে যদি এধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটে তাহলে প্রথম আলোর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে এবং খাগড়াছড়ি এহেন সংবাদপত্রকে বয়কট করা হবে।
এদিকে, পার্বত্য বাঙ্গালী ছাত্র পরিষদের নেতারা এই প্রতিবেদককে জানিয়েছেন, খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার দীর্ঘ বছর ধরে প্রথম আলো পত্রিকা আসছে। এখানকার মানুষ পত্রিকাটি পড়ে। হাসিমুখে দেখলেও পড়ে ক্ষিপ্ত হয়ে যায়। মিথ্যা সংবাদ পরিবেশন করে পার্বত্য অঞ্চলের পাহাড়ী এবং বাঙ্গালীদের মধ্যে বিভ্রান্তি কর পরিবেশ সৃষ্টি করেছে তারা। গত ২০১০ সালে ২২ শে ফেব্রুয়ারী রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলার আওতাধীণ বাঘাইহাটে পাহাড়ী এবং বাঙ্গালীদের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। শুধু প্রথম আলো পত্রিকার সংবাদ দেখে এই সংঘর্ষের সূত্রপাত।  ২৩শে ফেব্রুয়ারী ২০১০সালে খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলায় পাহাড়ী বাঙ্গালীদের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। এতে পৌর কর্মচারী মো: আনোয়ার হোসেনকে জবাই করে হত্যা করেছে ঐ দিন। বর্তমানেও প্রথম আলো মিথ্যা সংবাদ পরিবেশন করে পাহাড়ের পাহাড়ী ও বাঙ্গালীদের মধ্যে সংঘর্ষ সৃষ্টি করছে। সংগঠনের নেতা এস এম মাসুম রানা প্রথম আলো সাংবাদিকদের হুশিয়ারী প্রদান করে ব,ে আর কোন দিন পার্বত্য অঞ্চল খাগড়াছড়ির ব্যাপারে মিথ্যা সংবাদ প্রচার করা হয় তাহলে খাগড়াছড়িতে প্রথম আলো সংবাদ বয়কট করা হবে।

Archive Calendar
Sat Sun Mon Tue Wed Thu Fri
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031