॥ মোহাম্মদ আবু তৈয়ব, খাগড়াছড়ি ॥ ‘ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন আইন জাতীয় সংসদে পাশ করে ৮ লক্ষ বাঙ্গালিকে পার্বত্য ভূমি থেকে উচ্ছেদের যে ষড়যন্ত্র চলছিলো, আজ তা বাস্তবায়ন করার সুযোগ তৈরি করেছে সরকার। এ আইনের ফলে পার্বত্য বাঙ্গালি জনগণকে তাদের ভিটেমাটির অধিকার হারাতে হবে’ বলে খাগড়াছড়িতে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশে করেছেন করেছে বাঙ্গালি ছাত্র পরিষদ পৃথক ২ গ্রুপ।
সমাবেসে বক্তারার বলেছেন, সময় পার্বত্য চট্টগ্রামকে রক্ষায় দলমত নির্বিশেষে সকল দেশ প্রেমিক সকল জনতাকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান বক্তারা। পার্বত্য ভূমি কমিশন সংশোধন আইন বাতিলের দাবী জানিয়ে বলেন যদি ‘এ সংশোধন আইন বাতিল করা না হয় তবে কঠোর আন্দোলনের ডাক দেওয়া হবে তবুও এক মুঠো মাটি ছাড় দেওয়া হবেনা বলে হুশিয়ার করে দিয়েছেন।
গত ০৬ অক্টোবর বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি বিরোধ নিস্পত্তি কমিশন (সংশোধিত) বিলটি ২০১৬ পাশ হয়। অপর দিকে একই দিন খাগড়াছড়ি আলুটিলা বিশেষ পর্যটন জোন প্রকল্প বাতিলের সিদ্ধান্তের কথা জানান পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব নব বিক্রম কিশোর ত্রিপুরা। ফলে দুই ইস্যুতে উত্তপ্ত পার্বত্য অঞ্চলে নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে। মূলত: পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন আইন (সংশোধনী) ২০১৬’ পাশ এবং খাগড়াছড়ি আলুটিলা বিশেষ পর্যটন জোন বাতিল’র প্রতিবাদেই শনিবার সকালে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা এই অভিযোগগুলো তুলে ধরেন।
সকালে কেন্দ্রীয় বাঙ্গালি ছাত্র পরিষদের সিনিয়র সহ-সভাপতি আব্দুল মজিদ ও পরে খাগড়াছড়ি জেলা সহ-সভাপতি মাঈন উদ্দিন এর নেতৃত্বে আলাদা আলাদা মিছিল বের করে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে শাপলা চত্বর প্রতিবাদ সমাবেশ করে। সমাবশে জেলা, উপজেলা, পৌর কমিটির নেতৃবৃন্দ বক্তব্য দিয়েছেন।
বক্তৃরা আরো বলেন, পর্যটন বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক খাত। এ খাতকে সমৃদ্ধি করতে খাগড়াছড়ি আলুটিলায় বিশেষ পর্যটন জোন করার জন্য ৭০০ একর জমি অধিগ্রহন করতে প্রস্তাব করা হয়েছে। কিন্তু কিছু দুষ্কৃতি কারী চক্রান্ত করে তা বানচাল করে দেয়। দুষ্কৃতি কারীদের নিন্দা জানিয়ে সরকারকে পর্যটন জোন করার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে।
এখানে উল্লেখ্য যে, খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসন জেলার পর্যটন খাতের উন্নয়নে সম্প্রতি সদর ও মাটিরাঙ্গা উপজেলার তিন মৌজার প্রায় ৭শত একর জমি অধিগ্রহন করে বাংলাদেশ ইকোনমিক জোন অথরিটির মাধ্যমে বিশেষ প্রকল্প গ্রহণ করে। এর পর থেকে জেএসএস ও ইউপিডিএফসহ আঞ্চলিক সংগঠনগুলো এ নিয়ে প্রতিবাদ জানিয়ে আসছিলেন।
গত বৃহস্পতিবার পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালযের সচিব নববিক্রম বিক্রম কিশোর ত্রিপুরা বান্দরবানে এক অনুষ্ঠানে জানিয়েছেন, স্থানীয় পাহাড়ি জনগোষ্ঠী তাদের জুম চাষের জমি থেকে উচ্ছেদ আতঙ্কের কারণে প্রতিবাদ করায় আমরা সম্ভবত আলুটিলার স্পেশাল পর্যটন জোন বাস্তবায়ন করছি না।
বাংলাদেশ ইকোনমিক জোন অথরিটির নির্বাহী চেয়ারম্যান পবন চৌধুরী এ খবরের সত্যতা নিশ্চিত করে জানিয়েছেন, বিভিন্ন উপজাতীয় জনগোষ্ঠী এই প্রকল্পের বিরোধীতা করায় আমরা প্রকল্পটি বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
