খাগড়াছড়ির ইউপিডিএফএর মিঠুন চাকমা কে গ্রেফতার
করেছে পুলিশ, ইউপিডিএফ নিন্দা, মুক্তির দাবী
পার্বত্য চট্টগ্রামের আঞ্চলিক সংগঠন ইউপিডিএফের অন্যতম সংগঠক মিঠুন চাকমাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সোমবার রাত সোয়া ১টার দিকে খাগড়াছড়ি সদরের নিজ বাড়ি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে খবর পেয়ে খাগড়াছড়ি জেলা পুলিশের একটি দল সোমবার দিবাগত রাত ১২ টার দিকে শহরের অর্পনা চৌধুরী পাড়ায় মিঠুন চাকমার নিজের বাড়ি ঘেরাও করে তাকে গ্রেফতার করে। এসময় বাড়ির দরোজা খুলতে না চাইলে পুলিশ দরোজা ভাঙার হুমকি দিয়েছে । পরে স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলরের উপস্থিতিতে পুলিশের কাছে আত্মসমর্পন করে। মিটুন চাকমা আটকের পর পুলিশ তাকে খাগড়াছড়ি সদর থানায় নিয়ে যায়। তার বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীর গাড়ি বহরে হামলা, দিঘীনালায় বিজিবি ক্যাম্পে হামলাসহ খাগড়াছড়ি সদর সদর থানায় অন্তত ১২টি মামলা রয়েছে বলে থানা পুলিশ জানিয়েছে। এ ছাড়াও বিভিন্ন সামাজিক গণমাধ্যমে ও বর্গে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ে সাম্প্রদায়িক ও রাষ্ট্র ও সংবিধান বিরোধী প্রচারণা চালানোয় তার বিরুদ্ধে আইসিটি এক্টেও মামলা করার কথা বিবেচনা করা হচ্ছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। মিঠুন চাকমা পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ-পিসিপির সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি ছিলেন। তিনি রাজনীতির পাশাপাশি লেখালিখ করেছেন। সামাজিক মাধ্যম ও তিনি সক্রিয় ছিলেন।
এদিকে ইউনাইটেড পিপল্স ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় সদস্য ও খাগড়াছড়ি জেলা ইউনিটের প্রধান সংগঠক উজ্জ্বল স্মৃতি চাকমা গতকাল ১২ জুলাই মঙ্গলবার এক বিবৃতি দিয়েছে। তাতে বলা হয় ইউপিডিএফ-এর অন্যতম সংগঠক ও পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সাবেক সভাপতি মিঠুন চাকমাকে গ্রেফতারের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন এবং অবিলম্বে তাঁকে নিঃশর্ত মুক্তি দেয়ার দাবি করেছেন। বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘সোমবার দিবাগত মধ্যরাত আনুমানিক সাড়ে ১২টার সময় খাগড়াছড়ি জেলার এএসপি রইছ উদ্দিনের নেতৃত্বে ৪০-৫০ জনের একদল পুলিশ খাগড়াছড়ি জেলা সদরের অপর্ণাচরণ চৌধুরী পাড়ায় গিয়ে মিঠুন চাকমার বাড়ি ঘেরাও করার পর দরজা ভেঙে ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করে। এ সময় মুরুব্বী অথবা জনপ্রতিনিধির উপস্থিতি ছাড়া দরজা খুলে না দিলে পরে পুলিশ স্থানীয় পৌর কাউন্সিলর মাসুদুল হককে ডেকে নিয়ে এসে রাত ১টার দিকে মিঠুন চাকমাকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায়।’
ইউপিডিএফ নেতা মিঠুন চাকমার গ্রেফতারকে সম্পূর্ণ অগণতান্ত্রিক, ফ্যাসিস্ট ও মৌলিক অধিকারের পরিপন্থী আখ্যায়িত করে উজ্জ্বল স্মৃতি চাকমা বলেন, ইউপিডিএফের উপর চলমান রাজনৈতিক দমনপীড়নের অংশ হিসেবে তাকে আটক করে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে।তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘গণতান্ত্রিক যুব ফোরামেরও সাবেক সভাপতি মিঠুন চাকমা পার্বত্য চট্টগ্রামে জনগণের ন্যায্য অধিকার আদায়ের আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছেন। তাকে স্তব্ধ করে দেয়ার জন্য তাকে মিথ্যা মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে।’কোন ধরনের দমনপীড়ন, মিথ্যা মামলা, গ্রেফতার, হুলিয়া ও নির্য়াতন ইউপিডিএফকে তার অভীষ্ট লক্ষ্য থেকে বিচ্যুত করা যাবে না এবং জনগণের ন্যায়সঙ্গত গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে স্তব্ধ করা যাবে না বলে তিনি মন্তব্য করেন।উজ্জ্বল স্মৃতি চাকমা অবিলম্বে মিঠুন চাকমাকে নিঃশর্ত মুক্তি প্রদান এবং পার্বত্য চট্টগ্রামে সামরিক শাসন বন্ধ করে পূর্ণ গণতান্ত্রিক পরিবেশ ফিরিয়ে দেয়ার দাবি জানান।