চট্টগ্রামে যৌতুক ও মাদক বিরোধী মহাসমাবেশ : ইসলামের ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে জঙ্গী বানানোর চেষ্ঠা করা হয়—-তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ

॥ নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, অনেক ক্ষেত্রে ইসলামের ভুল ব্যাখ্যা দেয়া হয়, ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে অনেককে বিপথগামী করা হয়, অনেককে জঙ্গী বানানোর চেষ্ঠা করা হয়। এগুলোর বিরুদ্ধেও আলেম সমাজ কথা বলেন, আমি অনুরোধ জানাবো আরো কথা বলে এগুলোর বিরুদ্ধে সোচ্চার হবার জন্য।
তিনি বলেন, ইসলাম হচ্ছে শান্তির ধর্ম, ইসলাম অন্যের উপর জুলুমের কথা বলেননি। আমাদের নবী করিম (সা.) কখনো অন্যের ওপর জুলুম করেন নাই, করাকে প্রশ্রয় দেন নাই, কেউ করলেও তাকে শান্তি দিয়েছেন। সুতরাং জবরদস্ত করে কোন কিছু ছাপিয়ে দেয়া ইসলাম কোনদিন সমর্থন করেনা।
শনিবার (৬ মার্চ) বিকেলে চট্টগ্রাম জমিয়তুল ফালাহ মসজিদ কমপ্লেক্সে আন্জুমানে রজভীয়া নূরীয়া বাংলাদেশ আয়োজিত যৌতুক ও মাদক বিরোধী মহাসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
আন্জুমানে রজভীয়া নূরীয়া’র চেয়ারম্যান মাওলানা আবুল কাশেম নুরী’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন আর্ন্তাতিক মানবাধিকার সংস্থার যুগ্ন মহাসচিব এরশাদ মাহমুদ, তরুণ সংগঠক ফারাজ করিম চৌধুরী, চট্টগ্রাম কলেজের অধ্যাপক নূ ক ম আকবর হোসেন, রাজনীতিক ড. মাসুম চৌধুরী, আল্লামা মাসউদ হোসাইন আলকাদেরী, এডভোকেট আব্দুর রশিদ দৌলতি প্রমূখ।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, আমাদের এই জনপদে ইসলাম কায়েম হয়েছে কোন যুদ্ধ বিগ্রহের মাধ্যমে নয়, অলি আউলিয়াদের মাধ্যমে ইসলাম এখানে কায়েম হয়েছে। সুতরাং আজকে অনেকে ইসলামের ভুল ব্যাখ্যা দেই, ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে তরুণদেরকে বিপথগামী করে। সেগুলোর বিরুদ্ধে আলেম সমাজের সোচ্চার ভুমিকা রাখা প্রয়োজন।
তিনি বলেন, এই দেশ সবার, সব মত এবং দলের মানুষের, সবাই মিলে যুদ্ধ করে আমাদের এই দেশ স্বাধীন হয়েছে, আমরা সবাই মিলে এই দেশটাকে গড়তে চাই।
প্রতিবছর যৌতুক বিরোধী সমাবেশ আয়োজনের জন্য আন্জুমানে রজভীয়া নূরীয়া’র চেয়ারম্যান আবুল কাশেম নুরীকে ধন্যবাদ জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, এরকম সামাজিক আন্দোলন যদি আলেম সমাজের পক্ষ থেকে করা হয় তাহলে এটির বড় একটা প্রভাব সমাজের ওপর পড়ে। কারণ আলেম সমাজ হচ্ছে সমাজের স্বাভাবিক নেতা। সুতরাং একজন আলেম বা তাদের নেতৃত্বাধীন কোন সংগঠন যখন যৌতুক এবং মাদকের বিরুদ্ধে কথা বলেন, আমি দৃঢ়ভাবে বিশ^াস করি যৌতুক বন্ধ করার ক্ষেত্রে এবং আমাদের যুব সমাজের ওপর মাদকের যে হিংস্্রথাবা সেটি রোধ করার ক্ষেত্রে এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখবে।
তিনি বলেন, যৌতুক বিরোধী আইন আছে, কিন্তু আইন অনেকে মানেনা। শুধু আইন ও আইন শৃঙ্খলাবাহিনী দিয়ে যে সবকিছু হয়না সেটির প্রমাণ হচ্ছে যৌতুক। যৌতুক বন্ধ করার জন্য মাওলানা আবুল কাশেম নুরীর নেতৃত্বে সামাজিক যে আন্দোলন ডাকা হয়েছে সেটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এখন অবশ্য একটি কাজ হয়েছে কেউ আর আগের মতো যৌতুক দাবী করেনা।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, তরুণ সমাজ নানা কারণে মাদকাসক্ত হয়ে যাচ্ছে, বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার সরকার মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি নিয়ে এগুচ্ছে। শুধুমাত্র আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পদক্ষেপের মাধ্যমে মাদক নির্মূল করা সম্ভবপর নয়। এজন্য পরিবারকে দায়িত্ব নিতে হবে তরুন সমাজদের মনমানসিকতা গড়ে তোলার জন্য তাদেরকে সেভাবে পরিচালনা করা হয়। একই সাথে সামাজিক প্রতিরোধ ও আন্দোলন যদি থাকে তাহলে সবকিছুর সমন্বয়ে মাদকরোধ করা সম্ভব হবে।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, মাদকাসক্তির পাশাপাশি আমাদের কিশোর তরুণদের মাঝে ফেসবুক আসক্তি দেখা দিয়েছে। কিশোরদের হাতে হাতে মোবাইল ফোন, কিন্ত মা-বাবা খবর রাখেনা সন্তানরা মোবাইলে কি করতেছে। এজন্য আমি মনেকরি যৌতুক ও মাদকের বিরুদ্ধে কথা বলার পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের অতিরিক্ত আসক্তির বিরুদ্ধেও কথা বলা প্রয়োজন।

Archive Calendar
Sat Sun Mon Tue Wed Thu Fri
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031