চট্টগ্রাম মহানগরীর কর্ণফুলী থানাধীন চরপাথরঘাটা হতে গত ০৫/১০/২০১৭খ্রিঃ তারিখ সকাল ০৯.৩০ ঘটিকায় অপহৃত ইব্রাহীমকে চট্টগ্রাম মহানগর গোয়েন্দা বিভাগ টানা ১৭ ঘন্টা অভিযান পরিচালনা করে ভোর ০৫.০০ ঘটিকায় চট্টগ্রামের চান্দগাঁও থানাধীন পাঠানীয়া গোদাস্থ জান্নাত বেকারীর পার্শ্বে মার্কেটের পিছন হতে উদ্ধার করে এবং ১৫ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবীকারী অপহরণকারী চক্রের ০৪ সদস্যকে গ্রেফতার করতে সমর্থ হয়।
গ্রেফতারকৃত অপহরণকারী ঃ ১) মোঃ ফাহিম হোসেন(২১), পিতা-মোঃ ফারুক, সাং-খালাসী পুকুর পাড়, কুতুব তালুকদার বাড়ী, থানা-চান্দগাঁও, জেলা-চট্টগ্রাম, ২)মোঃ রাব্বি(২৩), পিতা-আবদুন নূর, সাং-গোলাম আলী নাজির পাড়া, ডাঃমোস্তাকের বাড়ি, পুরাতন চান্দগাঁও, থানা-চান্দগাঁও, জেলা-চট্টগ্রাম,৩) মোঃ ইমরান হোসেন(২০), পিতা-নজরুল ইসলাম, সাং-টেকস ঘর, ভোলা মাঝির বাড়ী, থানা-বোয়ালখালী,জেলা-চট্টগ্রাম, বর্তমানে-ভ্রাম্যমান আমড়া বিক্রেতা, নতুন ব্রীজ, কর্ণফুলী,জেলা-চট্টগ্রাম, ৪)মোঃ মফিজুর রহমান রিপন(২৩), পিতা-নূর আলম, সাং-গোলাম আলী নাজির পাড়া, ডাঃ মোস্তাকের বাড়ি, পুরাতন চান্দগাঁও, থানা-চান্দগাঁও, জেলা-চট্টগ্রাম।
গত ০৫/১০/২০১৭ইং তারিখ সকাল আনুমানিক ০৯.৩০ ঘটিকায় মোঃ ইব্রাহিম হেলাল(১৫), (সোবহানিয়া আলিয়া কামিল মাদ্রাসার দশম শ্রেণীর ছাত্র), পিতা-হাজী মোঃ ইদ্রিস, চর পাথরঘাটা, কর্ণফুলী তার নিজ বাড়ি হতে সিএনজি যোগে মাদ্রাসায় টেস্ট পরীক্ষায় অংশগ্রহণের উদ্দেশ্যে রওনা দিলে প্র্বূ থেকে কৌশলে সিএনজিতে অবস্থানকারী অপহরণকারী মফিজুর রহমান পরিকল্পিতভাবে সিএনজিতে উঠিয়ে নেন। সিএনজি নতুন ব্রীজ এলাকায় পৌঁছুলে সহযোগী অপহরণকারী ফাহিম ও রাব্বী সিএনজিতে উঠে। এরপর ইব্রাহিমের গলায় চাকু ঠেকিয়ে ইব্রাহিমের ফোন থেকে তার মাকে ফোন দিয়ে ১৫(পনের) লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবী করে এবং মুক্তিপণ না দিলে ইব্রাহীমকে জবাই করে হত্যা করে হবে হুমকি প্রদান করে। পরবর্তীতে তাকে নিয়ে কর্ণফুলী রিভারভিউ এলাকায় নিয়ে একটি নিরব জায়গায় ইব্রাহিমকে আটক রাখে। বিকাল ০৫.০০ টা পর্যন্ত সেখানেই অবস্থান করে। এরপর তাকে নিয়ে চান্দগাঁও এলাকায় শরফত উল্লাহ পেট্রোল পাম্পের পেছনের নির্জন এলাকায় জিম্মি করে রাখে এবং সেখান থেকে তাকে পাঠানিয়া গোদাস্থ জান্নাত বেকারীর পেছনে গলিতে আটক রাখে। গ্রেফতারকৃত অপর অপহরণকারী ইমরান হোসেন ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী পলাতক অপহরণকারী মোঃ আবু বক্কর’কে পুরো বিষয়টিতে সহায়তা করছিল।
অপহৃত ইব্রাহিমের মা শামিমা খাতুনকে মোবাইল ফোনে ১৫ (পনের) লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবি করার বিষয়টি অভিযোগ আকারে কর্ণফুলী থানায় জানানোর পর কর্ণফুলী থানা পুলিশ মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের সহায়তা কামনার প্রেক্ষিতে ০৫ অক্টোবর ২০১৭ খ্রিঃ তারিখ ১২.০০ ঘটিকায় মহানগর গোয়েন্দা বিভাগের অতিঃ উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিবি-পশ্চিম) জনাব এ এ এম হুমায়ুন কবীর ও সিনিয়র সহকারী পুলিশ কমিশনার(ডিবি-পশ্চিম) এর নেতৃত্বে সঙ্গীয় এসআই/শিবেন বিশ্বাস, এসআই/মোমিনুল হাসান, এসআই/আকরাম হোসেন, এসআই/জাকির হোসেন ভুঁইয়া, এস আই/সালাহউদ্দিন জাহেদ (কর্ণফুলী থানা) ও ফোর্সসহ অভিযানে বেরিয়ে পড়েন। প্রযুক্তির সহায়তা ও নানা ছদ্মবেশে উপরোক্ত গোয়েন্দা পুলিশ সদস্য গণ ফাঁদপেতে বহদ্দার হাট এলাকা হতে অপহরণকারী মোঃ ইমরান হোসেন’কে প্রথমে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। পরবর্তীতে গোয়েন্দা পুলিশের ফাঁদে পা দেয় রাব্বী। ইমরান ও রাব্বীকে জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে ভিকটিম ইব্রাহীমকে অপহরণপূর্বক আটক রাখার সম্ভব্য স্থান সমূহ সনাক্তকরণ পূর্বক পুনরায় ১৫(পনের) লক্ষ টাকা প্রদানের ফাঁদপেতে চান্দগাঁও থানাধীন পাঠানীয়া গোদাস্থ জান্নাত বেকারীর পার্শ্বে মার্কেটের পিছনের গলিতে অপহরণকারী ফাহিম হোসেন এর নিকট জিম্মিরত অবস্থায় ভিকটিম ইব্রাহীমকে সম্পূর্ণ সুস্থ ও অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। উল্লেখ্য যে, মূল পরিকল্পনাকারী অপহরণকারী মোঃ আবু বক্কর(২৫), পিতা-মোঃ রফিক, সাং-চর পাথরঘাটা, থানা-কর্ণফুলী, জেলা-চট্টগ্রামকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয় নাই। তাহাকে গ্রেফতারের জোড় প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
পরবর্তীতে গ্রেফতারকৃত অপহরণকারীদের স্বীকারোক্তি মোতাবেক চক্রের অপর সদস্য মফিজুর রহমান@রিপনকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তাদের নিকট থেকে অত্যাধুনিক ৩টি চাকু উদ্ধার করা হয়।
গ্রেফতারকৃত আসামীদের বিরুদ্ধে কর্ণফুলী থানায় নিয়মিত মামলা রুজু প্রক্রিয়াধীন।