চালু হলো দেশের প্রথম এক্সপ্রেসওয়ে

যাত্রাবাড়ী-মাওয়া-ভাঙ্গা রুটে দেশের প্রথম এক্সপ্রেসওয়ের যাত্রা শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে দৃষ্টিনন্দন এ এক্সপ্রেসওয়ের উদ্বোধন করেন। আজই এই রুটটি যানবাহন চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হল। এর মাধ্যমে বাংলাদেশ যোগাযোগ ক্ষেত্রে এক নতুন যুগে প্রবেশ করল।

ভ্রমণ সময় কমানোর পাশাপাশি দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের জন্য আরামদায়ক ও নিরবচ্ছিন্ন যাতায়াত নিশ্চিত করার লক্ষ্যে আধুনিক সব সুযোগ-সুবিধা সংবলিত ৫৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এ এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ করা হয়েছে।

প্রকল্প কর্মকর্তারা বলছেন, আন্তর্জাতিক মানের এ এক্সপ্রেসওয়ে দুটি সার্ভিস লেনের মাধ্যমে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সঙ্গে রাজধানীকে যুক্ত করবে।

এখন মাত্র ২৭ মিনিটে ঢাকা থেকে মাওয়ায় যাওয়া যাবে।

এক্সপ্রেসওয়েতে ৫টি ফ্লাইওভার, ১৯টি আন্ডারপাস এবং প্রায় ১০০টি সেতু এবং কালভার্ট রয়েছে, যা দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়িয়ে জাতীয় অর্থনীতিতে অবদান রাখবে। এটিতে মাওয়া থেকে ৩৫ কিলোমিটার দীর্ঘ যাত্রাবাড়ী চৌরাস্তা এবং ২০ কিলোমিটার দীর্ঘ পানছার থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত দুটি এক্সপ্রেসওয়ে রয়েছে।

বরিশাল বিভাগের ৬ জেলা, খুলনা বিভাগের ১০ জেলা এবং ঢাকা বিভাগের ৬ জেলাসহ দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২২টি জেলার মানুষ সরাসরি এ আন্তর্জাতিকমানের এক্সপ্রেসওয়ে থেকে উপকৃত হবেন।

আধুনিক এক্সপ্রেসওয়ের দুটি অংশ ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ পদ্মা সেতুর মধ্য দিয়ে সংযুক্ত হবে, যা বর্তমানে নির্মাণাধীন রয়েছে। দেশের দীর্ঘতম পদ্মা সেতুর চার কিলোমিটার মঙ্গলবার ২৬তম স্প্যান বসানোর পর ইতোমধ্যে দৃশ্যমান হয়েছে।

এ হাইওয়েতে আগামী ২০ বছরের জন্য ক্রমবর্ধমান ট্রাফিকের পরিমাণ বিবেচনা করে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে প্রায় ১১০০৩ দশমিক ৯০ কোটি টাকা ব্যয়ে এক্সপ্রেসওয়েটি নির্মিত হয়েছে। সড়ক ও জনপথ বিভাগ এবং বাংলাদেশ সেনাবাহিনী যৌথভাবে ২০১৬ সালে চারটি জেলা- ঢাকা, মুন্সীগঞ্জ, মাদারীপুর ও ফরিদপুরে এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পের বাস্তবায়ন শুরু করে এবং নির্ধারিত সময়সীমার ৩ মাস আগে এর নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করে।

১৭ মার্চ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে মুজিববর্ষ উদযাপন শুরুর প্রাক্কালে এক্সপ্রেসওয়ে ট্রাফিকের জন্য উন্মুক্ত করা হল।

স্থানীয় ও ধীরগতিসম্পন্ন যানবাহনের জন্য এক্সপ্রেসওয়ের দু’পাশে দুটি পরিষেবা লেন রাখা হয়েছে যাতে দ্রুত যানবাহনগুলো নিরবচ্ছিন্নভাবে রাস্তায় চলাচল করতে পারে এবং এইভাবে দীর্ঘপথের যাত্রীদের ভ্রমণের সময় হ্রাস করতে পারে।

এক্সপ্রেসওয়ের পাঁচটি ফ্লাইওভারের মধ্যে একটি ২ দশমিক ৩ কিলোমিটার কদমতলী-বাবুবাজার লিংক রোড ফ্লাইওভার। অন্য চারটি ফ্লাইওভার হল- আবদুল্লাহপুর, শ্রীনগর, পুলিয়াবাজার এবং মালিগ্রামে।

৫৫ কিলোমিটার এক্সপ্রেসওয়েতে জুরাইন, কুচিয়ামোড়া, শ্রীনগর ও আতাদিতে চারটি রেলওয়ে ওভার ব্রিজ রয়েছে এবং চারটি বড় সেতু রয়েছে যার মধ্যে ৩৬৩ মিটার ধলেশ্বরী, ১৫৯১ মিটার ধলেশ্বরী, ২৪৬৬ মিটার আড়িয়ালখাঁ এবং ১৩৬ মিটার কুমার সেতু।

Archive Calendar
Sat Sun Mon Tue Wed Thu Fri
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031