নতুন প্রজন্মের কাছে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ছড়িয়ে দেওয়ার আহ্বান

 

স্বাধীনতা মেলা পরিষদ স্বাধীনতা দিবস পালনোপলক্ষে ২৪ থেকে ২৬ মার্চ পর্যন্ত তিন দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালার কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে ২৪ মার্চ শুক্রবার বিকাল ৩টায় চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে তিন দিনব্যাপী স্বাধীনতার উৎসবের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন মেলা পরিষদের প্রধান পৃষ্ঠপোষক চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আ.জ.ম নাছির উদ্দীন। ২৫ ও ২৬ মার্চ থিয়েটার ইনস্টিটিউট চট্টগ্রাম টিআইসিতে প্রতিদিন বিকেল ৪টায় মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচারণ, আলোচনা সভা, মুক্তিযোদ্ধা স্মারক সম্মাননা প্রদান ও উদ্দীপনামূলক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানআলোচনা সভায় অংশগ্রহণ করবেন দেশবরেণ্য বুদ্ধিজীবী মুক্তিযোদ্ধা সাংবাদিক ও রাজনীতিকগণ। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন।

খ্যাতিমান ও উদীয়মান নব প্রজন্মের বেতার ও টেলিভিশন শিল্পীবৃন্দ। এ উপলক্ষে বুধবার সকালে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব সাংবাদিক সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে মেলা পরিষদের চেয়ারম্যান প্রবীণ রাজনীতিক মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হলো। তাই দু’দশকেরও বেশি সময় ধরে আমাদের এই দাবী ছিল। শহীদ মিনারে মশাল প্রজ্জ্বলনের মাধ্যমে ‘আলোর মিছিল’ করে আসছি আমরা। বছরের পর বছর ধরে যুদ্ধাপরাধীর বিচারের দাবী, গণহত্যার প্রতিবাদ এব্ং দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ার দাবী এবং নতুন প্রজন্মের কাছে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ছড়িয়ে দেওয়ার আহ্বানের জায়গা থেকে এটি নতুন মাইলফলক। আমাদের একাত্তরের গণহত্যা পৃথিবীর জঘন্যতম গণহত্যাগুলোর মধ্যে ৫ম স্থানে আছে। পুরো একাত্তরজুড়ে সারাদেশে যে গণহত্যা হয়েছে, তার শুরু হয়েছিল ২৫ মার্চ। আমরা একে কালরাত্রি বলি। কাল মানে যম। নির্মমভাবে বাঙালিদেরকে হত্যা করা হয়েছিল। শিক্ষক-বুদ্ধিজীবী-চিকিৎসক-চাকুরীজীবি সহ নানান পেশার মানুষ, শিশু, মা-বোনেরা বেঘোরে প্রাণ হারিয়েছেন। নির্বিচারে এদেশের স্বাধারণ মানুষকে মেরেছে পাকিস্তানীরা।

এমন করে আমাদের ইতিহাসে অনেক হারানোর ঘটনা আছে। একাত্তরই হোক আর ভাষা আন্দোলনের ঘটনাই হোক, অনেক হারানো আর শোক থেকে অনেক কিছু পাওয়া আর অর্জন আছে। এই নিয়ে আমরা গর্ব গরি। ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া মানে, গণহত্যায় নির্মমতার শিকার হয়ে প্রাণ হারানো মানুষের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের মতো এটিও ইতিহাসের একটি মাইলফলক হয়ে থাকবে। যে ইতিহাস নিয়ে অনেকেই দ্বিধা জানান, বিতর্ক করেন, এই স্বীকৃতি তাদের সামনে তুলে ধরল। মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হিসেবে এটা দেখে যাওয়াও আমাদের জন্য অনেক বড় প্রাপ্তি। যে আন্দোলনে আমরা সফল হলাম, তার সুফল পেতে হলে নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় গড়ে তুলতে হবে। এখন থেকে প্রতিবছরই গণহত্যা দিবস পালণ হবে। যেহেতু এটি শোকের দিন, তাই সবার প্রতি অনুরোধ থাকবে, আমরা এই দিনটি পালন করব, উদ্যাপন নয়।

তিনি আরো বলেন, বিগত ১৯ বছর ধরে আমরা এই স্বাধীনতা মেলা আয়োজন করে আসছি। এবারের স্বাধীনতা মেলার প্রতিপাদ্য বিষয় হচ্ছে ‘জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস, নৈরাজ্য, নাশকতা ও মাদকের’ বিরুদ্ধে ঘৃণার আগুন ছড়িয়ে দাও। সংবাদ সম্মেলনে স্বাগত বক্তব্য রাখেন মেলা পরিষদের প্রধান সমন্বয়কারী খোরশেদ আলম। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন মেলা পরিষদের কো-চেয়ারম্যান, নগর আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি নঈম উদ্দিন চৌধুরী, কো-চেয়ারম্যান শেখ মাহমুদ ইসহাক, মুক্তিযোদ্ধা আবু সাঈদ সর্দ্দার, যুগ্ম মহাসচিব মোস্তাকিম বিল্লাহ, আবুল মাসুদ, আবদুল মালেক, সংস্কৃতিক সংগঠক শওকত আলী সেলিম প্রমুখ।

Archive Calendar
Sat Sun Mon Tue Wed Thu Fri
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
31