পার্বত্য দূর্গম গ্রামগুলোতে বন্যহাতির তান্ডব,আতংকে নির্ঘুম রাত গ্রামবাসী

॥ ফাতেমা জান্নাত মুমু ॥ রাঙ্গামাটির প্রত্যন্ত অঞ্চলের দূর্গম পাহাড়ি গ্রামগুলোতে বন্যহাতি তান্ডব বৃদ্ধি পেয়েছে। বন্যহাতির আতঙ্কে র্নিঘুম রাত কাটাচ্ছে লংগদু এলাকার ভাসান্যাদম ইউনিয়নের ৯টি ওয়ার্ডের বসবাসরত প্রায় ৮ হাজারও বেশি মানুষ। সূর্য্য ডুবলেই বন্যহাতি আতষ্ক শুরু হয় পাহাড়ি গ্রামগুলোতে। হাতির আক্রমনের আশংকায় গ্রামের লোকজন প্রাণে বাঁচতে বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। এ মধ্যে ভাসান্যাদম ইউনিয়নের ৭টি ওর্য়াড মানুষ শূন্য হয়ে পড়েছে। পাহাড়ি অঞ্চলের গ্রামগুলোতে বন্যহাতির আতঙ্কে ভয়াবহ পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
অন্যদিকে রাঙ্গামাটির কাপ্তাই উপজেলার নৌ বাহিনী এলাকা, জীবতলী সেনানিবাস, নাবিক কলোনী, ফরেষ্ট কলোনী, বিএফআইডিসি রেষ্ট হাউজ, রাম পাহাড়, কাপ্তাই প্রজেক্টের ব্রিক ফিল্ড, কাপ্তাই খালের মুখ, চিৎমরমের আড়াছড়ি, রাইখালী ইউনিয়নের ডংনালাসহ বিভিন্ন এলাকায় অবাধে ঘুরে বেড়াচ্ছে বন্যহাতি।
রাঙ্গামাটির বগা চত্বরের স্থানীয় গ্রামবাসি মো. কবির হোসেন জানান, দীর্ঘ বছর ধরে রাঙ্গামাটির লংগদু উপজেলার বিভিন্ন পাহাড়ি গ্রামে বন্যহাতির তান্ডব বেড়েছে। লংগদু উপজেলার ভাসান্যাদম ইউনিয়নের চাইল্যাতলি গ্রামের পাশ্ববর্তী পাহাড় গুলোতে বন্যহাতির অবস্থান। দিনের বেলায় পাহাড়ে অবস্থান করলেও সন্ধ্যা নামার সাথে সাথে হানা দেয় লোকালয়ে। তান্ডব চালিয়ে ধ্বংস করে বসতঘর, ধানসহ চাষীদের কষ্টের ক্ষেত খামার। বিশেষ করে জুন ও জুলাই মাসের দিকে বন্যহাতির উপদ্রব বাড়ে। জুমের ধান পাকলে পাহাড় থেকে নেমে আসে এসব হাতির দল।
রাঙ্গামাটি লংগদু উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান তোফাজ্জল হোসেন জানান, লংগদু উপজেলার ভাসান্যাদম, বগা চত্বর, গুলশাখালি, রাঙ্গীপাড়া, কাপ্তাই উপজেলার জিপতলীসহ বিভিন্ন্ এলাকায় বন্যহাতির তান্ডব বেড়েছে। উপজেলার ভাসান্যাদমের বেশ কয়টি গ্রামে হামলা চালিয়ে শতাধিক ঘরবাড়ী ভেঙ্গে তছনছ করে দিয়েছে। হাতির তান্ডব থেকে রক্ষাপায়নি চাষীদের ফসলী জমি। হাতির আক্রমনের ভয়ে অনেক আগেই মানুষ গ্রাম ছেড়ে নিরাপদ স্থানে সড়ে গেছে। আবার অনেকে রাত জেগে পাহাড়া বসিয়েছে।
পার্বত্য চট্টগ্রাম দক্ষিণ বনবিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মোঃ সালাহ উদ্দিন জানান, বছরের একটা সময় বন্যহাতি চলাচল করতে প্রছন্দ করে সেটা হচ্ছে জুন ও জুলাই মাস। এছাড়া জুমের ধান পাকলেও পাহাড় থেকে নেমে আসে বন্যহাতির পাল। এসময় হাতি ধারা কৃষকদের ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়। অন্যদিকে পার্বত্যাঞ্চলে জনসংখ্যা বৃদ্ধি ও নতুন নতুন জায়গায় জুম চাষসহ বৃক্ষ নিধনের ফলে হাতির খাদ্য সঙ্কট দেখা দিয়েছে। যার কারণে বন্যহাতি বন ছেড়ে লোকালয়ে প্রবেশ করছে। মানুষ বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলে হাতি আক্রমন করে। এতে শুধুমাত্র মানুষ ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেনা হাতিও ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। এ সমস্য থেকে উত্তলনে জন্য একটি বিশেষজ্ঞ দল কাজ করছেন। এছাড়া হাতি ধারা ক্ষতি গ্রস্থ পরিবারদের আর্থিক সহায়তা দওেয়া হবে বলে জানান তিনি।
স্থানীয় এলাকাবাসির অভিযোগ, ২০১২সালে সরকারের পক্ষ থেকে বন্যহাতির আক্রমনে ক্ষতিগ্রস্থ কিছু পরিবারকে সাহায্য সহযোগিতা দেওয়া হলেও এ পরবর্তিতে যারা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে তাদের খোঁজ রাখেনি কেউ। বর্তমানে বন্যহাতি মানুষের প্রাণহানী, বাড়ি ঘর এবং ক্ষেত খামারের ক্ষয়ক্ষতি হলেও ক্ষতিগ্রস্থদের সাহায্যে এখনো এগিয়ে আসেনি সরকারী বা বেসরকারী সংস্থা।

Archive Calendar
Sat Sun Mon Tue Wed Thu Fri
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930