চট্টগ্রাম ব্যুরো :: চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক মোহাম্মদ খোরশেদ আলম সুজন বলেছেন, ১৯৭১ সনের ১৭ ডিসেম্ব^র সকাল সোয়া ৯টায় চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে পাকিস্তানি পতাকা নামিয়ে প্রথম স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করা হয়। তাই এটি আমাদের আবেগ ও গৌরব গাঁথা স্থান। এখান থেকেই আমরা স্বাধীন বাংলার স্বাধ পাই। অথচ তৎকালীন বিএনপি সরকার এই স্মৃতিমাখা স্থানটি পরবর্তী প্রজন্মের মন থেকে মুছে ফেলার হীন মানসে এখানে বিনোদন কেন্দ্র তথা শিশুপার্ক নামের জঞ্জাল সৃষ্টি করেছিলেন। আজ অপরাহ্নে নগরীর টাইগারপাসস্থ চসিক নগরভবনে প্রশাসক দপ্তরে চট্টগ্রামে পুরানো সার্কিট হাউসের আঙ্গিনা থেকে শিশু পার্ক অপসারণ বিষয়ে শিশুপার্ক ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ভায়া মিডিয়া বিজনেস সার্ভিসেস লিঃ কর্তৃপক্ষের সাথে বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি আরো বলেন আমার মনে আছে সেদিন ছিল শীতের সকাল। মেঘমুক্ত নীল আকাশের নিচে সূর্যালোকে অলস ঢেউয়ের মতো দুলেছিল বাংলার লাল-সবুজ পতাকা। শহরের প্রতিটি প্রান্ত থেকে হাজার হাজার মানুষ, মুক্তিযোদ্ধা, জনতার বাঁধভাঙা স্রোতের মতো ছুটে আসছিলেন সার্কিট হাউসের দিকে। তাদের কণ্ঠে ছিল বিজয়ের জয়ধ্বনি। স্বাধীন সার্বভৌম পতাকাকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্যালুড এখানেই জানানো হয়েছে। অথচ এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ জায়গাকে আমরা হারাতে বসেছি। তিনি বলেন,আমিও চাই চট্টগ্রামে বিনোদন কেন্দ্র গড়ে উঠুক যাতে নাগরিক ও শিশু কিশোররা সুস্থ বিনোদন পান। তবে এমন ঐতিহাসিক জায়গাকে আড়াল করার প্রয়াসে শিশুপার্ক আমরা চাইনা। আমরা দেখেছি এখানে বসে অনেক অসামাজিক ও অনৈতিক কর্মকা-ও পরিচালিত হচ্ছে। তিনি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও এই ঐতিহাসিক পার্ক রক্ষায় সম্মতি জ্ঞাপণ করেছেন। সেই লক্ষ্যে আমি এই উদ্যোগ নিয়েছি। তিনি বলেন শিশুপার্ক কর্তৃপক্ষের সাথে মনোমালিন্য কিংবা জোর পূর্বক তাদের উচ্ছেদের পক্ষে আমি নই। এতে তারা ব্যবসায়িক ক্ষতির সম্মুখিন হবে। তবে কিভাবে সম্ভব তা যাচাই বাছাই ও সমন্বীত ও সমঝোতার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। প্রশাসক বলেন, আমি প্রশাসক থাকার পূর্বে “নাগরিক উদ্যোগ” এর ব্যানারে অনেকবার এর প্রতিবাদ ও লেখালেখি করেছি। এখন হয়তো সুযোগ হয়েছে এই স্থানটিকে তার হারানো গৌরব ফিরিয়ে দেয়ার। তাই আমি চেষ্টা করছি। এতে সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন। ভায়া মিডিয়া বিজনেস সার্ভিসেস লি. এর এমডি মোস্তাফিজুর রহমান জানান এমন স্মৃতি বিজড়িত একটি জায়গাকে রক্ষায় আমিও ভূমিকা রাখতে চাই। আমার পক্ষ থেকে যতটুকু সম্ভব ছাড় দেয়া হবে। তবে আমাদের বিনিয়োগকৃত অর্থের একটি বিহিত সুরাহা করতে পারলে আমাদের আর আপত্তি থাকার কথা নয়। বৈঠকে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা পুনর্বাসন সোসাইটি চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিটির সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার হাজী এনামুল হক চৌধুরী, চসিক প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মুফিদুল আলম, এস্টেট অফিসার মোঃ কামরুল ইসলাম,ভায়া মিডিয়া বিজনেস সার্ভিসেস লিঃ এর জিএম নাছির উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।
