বরকল উপজেলা হাসপাতালে ১৪ চিকিৎসকের মধ্যে কর্মস্থলে একজন ও নেই

বরকল উপজেলা হাসপাতালে ১৪ চিকিৎসকের
মধ্যে কর্মস্থলে একজন ও নেই

॥ পুলিন বিহারী চাকমা, বরকল ॥ গত কয়েক দিন ধরে চিকিৎসক ছাড়া চলছে রাঙ্গামাটির বরকল উপজেলা সদরের হাসপাতাল। ১০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে ডাক্তারের পদ রয়েছে ১৪টি। তার মধ্যে কাগজ পত্রে কর্মরত দেখানো হয়েছে ৫ জনকে। বাকী ১০ জন চিকিৎসকের পদ দীর্ঘ দিন ধরে শুন্য। কর্মস্থলে দেখানো ৫জন চিকিৎসকের মধ্যে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ সুইমিপ্রু রোয়াজা মাসের প্রায় সময় বিভিন্ন প্রশিক্ষণ ও মিটিংয়ে ব্যস্ত থাকেন। কর্মস্থলে থাকার কিংবা রোগী দেখার সময় সুযোগ তিনি পাননা। মেডিকেল অফিসার ডাঃ ধীমান চৌধুরী সম্প্রতি বদলী হয়ে চলে গেছেন। ডাঃ মামুন রেজা গত কয়েক মাস ধরে প্রশিক্ষণে রয়েছেন। গত কয়েকদিন আগে ডাঃ তারেক ভূইঁয়া জাহিন হাসপাতালে যোগদান করেছেন সেদিন প্রশিক্ষণে চলে যান। এর আগে ডাঃ শুভ্রসোম চাকমা পরীক্ষা দিতে চলে যান।
বর্তমানে উপজেলার হাসপাতালে ১৪জন ডাক্তারের মধ্যে কর্মস্থলে একজনও নেই। হাসপাতালের উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার দিয়ে নাম মাত্র প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে রোগীদের জেলা সদরের হাসপাতালে প্রেরণ করা হচ্ছে বলে হাসপাতাল সূত্র জানিয়েছে। এতে রোগীরা যেমনি চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে তেমনি হয়রানি ও আর্থিক ভাবে চরম ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে বলে ভুক্তভোগী রোগীদের অভিযোগ।
উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার উপেন্দ্র লাল চাকমা জানান, প্রায় সময় ডাক্তারদের প্রশিক্ষণও মিটিং থাকায় তারা কর্মস্থলে থাকতে পারেন না। আমাদেরই আন্তঃ বিভাগ ও বহি বিভাগের রোগীদের দেখাশুনা করতে হয়। তবে ডাক্তাররা যখন কর্মস্থলে থাকেন তখন তারা ও রোগী দেখেন। আমাদের সার্মথ্যর বাইরে রোগীদের ঝুঁকি নিতে পারিনা। তাই রাঙ্গামাটি জেনারেল হাসপাতালে পাঠায়।
আইমাছড়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান অমর কুমার চাকমা জানান, গত ২৬ জানুয়ারী রাতে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে তিনি হাসপাতালে এসেছেন। কিন্তু হাসপাতালে কোন ডাক্তার নেই। একজন উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার আমাকে দেখার পর রাঙ্গামাটি জেনারেল হাসপাতালে প্রেরণ করেন। আমি একজন জনপ্রতিনিধি হিসাবে ষ্পীড বোট (দ্রুতযান) ভাড়া করে জেলা সদরে আসা সম্ভব হয়েছে। কিন্তু একজন গরীব অসহায় রোগীর পক্ষে তা সম্ভব নয়। তাই স্বাস্থ্য বিভাগ কর্তৃপক্ষের উপজেলার মানুষদের স্বাস্থ্য সেবার ব্যাপারে সুদৃষ্টি দেয়া প্রয়োজন।
এব্যাপারে মুঠোফোনে যোগাযোগ করে জানতে চাইলে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ সুইমিপ্রু রোয়াজা কর্মস্থলে ডাক্তার না থাকার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, বর্তমানে চিকিৎসকরা কেউ প্রশিক্ষণে কেউ পরীক্ষা দিতে গেছেন। আবার কেউ বদলী হয়ে চলে গেছেন। তাছাড়াও ১০টি চিকিৎসকের পদ বর্তমানে শুন্য রয়েছে। আমার ও প্রায় সময় সরকারী প্রশিক্ষণ ও মিটিংয়ে থাকতে হয়। যার কারণে কর্মস্থলে চিকিৎসকের সংকট দেখা দেয়। প্রশিক্ষণ শেষে ফিরে এলে চিকিৎসক সংকট দুর করা সম্ভব হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান বিধান চাকমা বলেন, বরকল উপজেলার একটি মাত্র হাসপাতালে ১৪জন ডাক্তারের মধ্যে একজনও কর্মস্থলে না থাকা সেটা অত্যান্ত দূঃখজনক। যদি কোন প্রশিক্ষণ কিংবা মিটিং থাকে তাহলে হাসপাতাল শুন্য করে যাওয়া মোটেই ঠিক নয়। তবে এ ব্যাপারে স্বাস্থ্য বিভাগ কর্তৃপক্ষের সেই খেয়াল রাখা দরকার। যাতে করে এ উপজেলার মানুষ স্বাস্থ্য সেবা পায় বঞ্চিত না হয়।

Archive Calendar
Sat Sun Mon Tue Wed Thu Fri
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031