বাঁশখালীতে বিদ্যুৎ প্রকল্পের মতবিনিময় সভায় সংঘর্ষে নিহত-১

চট্টগ্রামঃ-চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে নির্মিত দেশের আলোচিত কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্প নিয়ে মতবিনিময় সভাযদুই গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনায় একজন নিহত ও অন্তত ২০ জন আহত হয়েছে। নিহতের নাম মো. আলী।চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ক্যাম্প ইনচার্জ এসআই জহিরুল ইসলাম এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
গুরুতর আহত অবস্থায় মো. আলী ও মো. ইউনুছ নামের দুইজনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ৯টার দিকে মো. আলী মারা যান।বাকিদের স্থানীয় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
উল্লেখ্য, এসএস পাওয়ার লিমিটেডের কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্প নিয়ে নৌবাহিনী ও প্রশাসনের সাথে স্থানীয় জনগণের মতবিনিময় সভার প্রাক্কালে দুই গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটে। বিপুল সংখ্যক পুলিশ নৌবাহিনী ও প্রশাসনের উপস্থিতিতে দুই গ্রুপের ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ায় উপস্থিত জনগণ আতঙ্কিত হড়ে পড়ে।
জানা গেছে, বিএনপি নেতা, গন্ডামারা সাবেক চেয়ারম্যান ও এস আলম কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্প বিরোধী আলোচিত নেতা মোহাম্মদ লেয়াকত আলী সম্প্রতি তার কিছু লোকজন নিয়ে বিদ্যুৎ প্রকল্পের পক্ষে এস আলম গ্রুপের সাথে হাত মিলিয়েছে। এ নিয়ে ফের গন্ডামারার জনগণ দুই গ্রুপে বিভক্ত হয়ে পড়েছে।
বুধবার (১ ফেব্রুয়ারী) কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্পের স্থানীয় জনগণের ক্ষতিপূরণ ও যথাযথ পাওনা পাওয়ার আশ্বাস প্রদানের জন্য এই মতবিনিময় সভার আয়োজন করলেও সভায় গন্ডামারার আলোচিত মোহাম্মদ লেয়াকত আলী গ্রুপের ও আওয়ামী লীগ সমর্থিত চেয়ারম্যান নুরুল মোস্তফা সংগ্রাম গ্রুপের লোকজনদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার কারণে মতবিনিময় সভার প্রকৃত তথ্য জানতে পারেনি স্থানীয় জনগণ।
তবে শেষ মুহূর্তে নৌবাহিনীর গোয়েন্দা বিভাগের প্রধান কমডোর এম. সোহাইল স্থানীয় জনগণকে তাদের ন্যায্য পাওনা যথাযথভাবে বুঝিয়ে দেবেন বলে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে বলেন।
সূত্র মতে, বেশ কিছুদিন যাবৎ কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্প এলাকায় স্থানীয় জনগণের পাওনা টাকা নিয়ে চরম উত্তেজনা বিরাজ করে আসছিল। এরই পরিপ্রেক্ষিতে স্থানীয় প্রশাসন ও নৌবাহিনীর পক্ষ থেকে স্থানীয় জনগণকে নিয়ে এক মতবিনিময় সভার আয়োজন করে প্রকল্প স্থানে। সকাল থেকেই বিপুল সংখ্যক পুলিশ ও নৌবাহিনীর কর্মকর্তারা এবং বাঁশখালীর প্রশাসনিক কর্মকর্তারা ওই স্থানে জড়ো হয়। এ সময় লেয়াকত আলী বিপুল সংখ্যক লোক নিয়েএসে মাঠের চার পাশে শোডাউন করলে নুরুল মোস্তফা সংগ্রাম গ্রুপের লোকজন তা বন্ধ করার জন্য দাবি জানান। এতে দুই গ্রুপ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।
লেয়াকত আলী গ্রুপ লোকজন সংগ্রাম গ্রুপ (প্রকল্প বিরোধী) লোকজনকে ধাওয়া করলে এ সময় ইট পাটকেল নিক্ষেপ বেশ কয়েকজন গুরুতর আহত হয়। তার মধ্যে একই পরিবারের ৪ ভাই, তারা হলেন, মো. আলী (৩০), মো. ইউনুছ (৪৫), জামাল হোসেন (৩৫), আবু সৈয়দ (২৫) তারা সকলই স্থানীয় পশ্চিম বড়ঘোনা এলাকার খলিলুর রহমানের ছেলে। এরমধ্যে মো. আলী ও মো. ইউনুছকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় চমেক হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
অপরদিকে এই ঘটনায় আহত হয় মোস্তাফিজুর রহমান (৪৫), কবির আহমদসহ (৩০) আরো প্রায় ১৫-২০ জন। সংঘর্ষ ও ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার পর এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশে এম এ মালেক মানিক, গন্ডামারার চেয়ারম্যান মাওলানা আরিফুল্লাহ, আওয়ামী লীগ নেতা নুরুল মোস্তফা সংগ্রাম, ঘটনার নায়ক মো. লেয়াকত আলী, নৌবাহিনীর গোয়েন্দা বিভাগের প্রধান কমডোর এম সোহাইল প্রমুখ।
এ ব্যাপারে বাঁশখালী থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আলমগীর হোসেন জানান, সামান্য গন্ডগোল হয়েছে। কয়েকজন আহত হয়েছে। ২ জনকে চট্টগ্রামে উন্নত চিকিৎসার জন্য নেওয়া হয়েছে।

Archive Calendar
Sat Sun Mon Tue Wed Thu Fri
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
31