বাংলাদেশে একটি মানুষও গৃহহারা থাকবে না : প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক :: তিনি বলেন, “আমরা আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে যেমন ঘর করে দিচ্ছি, পাশাপাশি যাদের জমি আছে তাদের ঘর করে দেওয়ার জন্য গৃহায়ন তহবিল নামে বাংলাদেশ ব্যাংকের একটা তহবিল করা আছে, সেখান থেকে যেকোনো প্রতিষ্ঠান টাকা নিয়ে ঘর করতে পারে। আর আমরা নিজেরাও আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমেও যাদের জমি আছে, ভিটা আছে, কিন্তু ঘর নাই তাদের ঘর করে দিচ্ছি। শেখ হাসিনা বলেন, “জাতির পিতার জন্মশতবর্ষে আমাদের লক্ষ্য বাংলাদেশে একটি মানুষও গৃহহারা থাকবে না। প্রত্যেকটা মানুষকে আমি যেভাবে পারি গরিবানা হালে একটা চালা হলেও সেটা আমরা করে দেব। এটাই আমাদের লক্ষ্য।”দেশের বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রস্তুতি সরকারের রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “এবার একটু বন্যার প্রকোপটা বেশি দেখা যাচ্ছে। এটা হচ্ছে শ্রাবণ মাস, এরপর ভাদ্র মাসের দিকে আরো পানি আসবে। অর্থাৎ অগাস্ট থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আমাদের আরো বন্যা হওয়ার সম্ভাবনা থাকতে পারে। আমাদের সেই প্রস্তুতি আছে, এটা মোকাবেলা করার।“কিন্তু বন্যায় যারা ক্ষতিগ্রস্ত বা নদীভাঙনে যারা গৃহহারা হচ্ছেন তাদেরকেও আমরা ঘরবাড়ি করে তাদের জীবনযাপনের ব্যবস্থা করে দেব। সেটাও আমাদের লক্ষ্য রয়েছে। বাজেটে আমরা আলাদাভাবে টাকাই রেখে দিয়েছি যে গৃহহীন মানুষের ঘর করে দেওয়ার জন্য, যাতে একটি মানুষও গৃহহারা না থাকে।” কক্সবাজারকে পর্যটন শহর হিসেবে গড়ে তোলার পরিকল্পনার কথা জানিয়ে সরকার প্রধান বলেন, “কক্সবাজার হচ্ছে আমাদের একটা পর্যটন এলাকা। আমরা জাতির পিতার আদর্শ নিয়ে কক্সবাজারকে সুন্দরভাবে গড়ে তুলতে চাই একটা পর্যটন শহর হিসেবে।”তিনি বলেন, “আমাদের যেই সি-বিচ আছে সারা বিশ্বের মধ্যে সব থেকে লম্বা সমুদ্র সৈকত। এত সুন্দর, এত দীর্ঘ এবং এমন বালুকাময় সি-বিচ কিন্তু পৃথিবীর আর কোনো দেশে নাই। একটা চমৎকার জিনিস। সেটা আমাদের দেশের মানুষ এবং বিশ্বব্যাপী সবাই যেন উপভোগ করতে পারে সেই লক্ষ্য নিয়ে এই অঞ্চলের উন্নয়নের জন্য আমরা পদক্ষেপ নিই। কক্সবাজারের উন্নয়নে বহুমুখী কর্মপরিকল্পনার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “একদিকে যেমন আমাদের পর্যটন কেন্দ্রগুলো হবে ২/৩টি, সেই সাথে সাথে মানুষের জীবন-জীবিকার ব্যবস্থাও আমরা করে দিচ্ছি। সেখানে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলও করে দেব।” আর খুরুশকূলে আলাদা একটা সুন্দর শহর গড়ে উঠবে উল্লেখ করে ফ্ল্যাট পাওয়া পরিবারগুলোর উদ্দেশে তিনি বলেন, “আপনারা এতদিন যেভাবে ছিলেন কষ্টের মধ্যে আমি নিজে গিয়েছি,দেখেছি সেটা, এখন আপনারা সুন্দরভাবে বসবাস করতে পারবেন। আপনাদের ছেলে-মেয়েরাও বড় হবে, মানুষ হবে সেটাই আমরা চাই। সেদিকে লক্ষ্য রেখেই ব্যবস্থা নিয়েছি। “আজকে যেই ঘরবাড়িগুলো করে দেওয়া হল, মনে রাখবেন এটা আপনাদের নিজেরই। সেভাবে যতœ নিয়ে ব্যবহার করবেন। সুন্দরভাবে যাতে থাকে সেদিকে দেখবেন। আর এখানে নদীর কূল ধরে সবুজ বেষ্টনি করে দেওয়া হবে। কোনো রকম ঝড় জলোচ্ছাসে যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয় এবং আপনারাও ব্যাপকভাবে বৃক্ষরোপণ করবেন। পুকুর কেটে দেওয়া হয়েছে। আর তাছাড়া জীবন-জীবিকার সুযোগ আমরা সৃষ্টি করে দেব। সেভাবেই সবাইকে পুনর্বাসন করতে চাই।” করোনাভাইরাস দেশের অগ্রগতিতে বাধার সৃষ্টি করেছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সবাইকে স্বস্থ্যবিষয়ক নির্দেশনাগুলো মেনে চলারও আহ্বান জানান। জাতির পিতাকে নির্মমভাবে হত্যার পর ছয় বছর নির্বাসিত জীবন শেষে আওয়ামী লীগ সভাপতির দায়িত্ব নিয়ে দেশে ফেরার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “আমাদেরকেও উদ্বাস্তু হিসেবে থাকতে হয়েছিল। অর্থাৎ আমরা রিফিউজি হিসেবেই ছিলাম। কাজেই রিফিউজি হিসেবে থাকার যন্ত্রণা সেটাও আমাদের জানা আছে।” গণভবন প্রান্তে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আহমদ কায়কাউস, সেনা প্রধান আজিজ আহমেদ, প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়াসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। কক্সবাজার প্রান্তে ছিলেন স্থানীয় সংসদ সদস্য, চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার এবিএম আজাদ, কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেনসহ মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তারা।

Archive Calendar
Sat Sun Mon Tue Wed Thu Fri
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930