বান্দরবানের তুমব্রু থেকে আরো ১টি অবিস্ফোরিত রকেট লাঞ্চার উদ্ধার করেছে বিজিবি

॥ নাইক্ষ্যংছড়ি প্রতিনিধি ॥ বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম ইউনিয়নের তুমব্রু-ঘুমধুম মিয়ানমার সীমান্তে বসবাসকারী রয়েছে ৩০ হাজার জনগণ। এ এলাকায় গুলি ও বিস্ফোরণের শব্দ যেন সীমান্তবাসীর নিত্যদিনের সঙ্গী। দুই সাপ্তহের অধিক এখানে শুধু সন্ধ্যা বলা রাতে নয়,সকালে দুপুরে বিকাল, সবসমই ওপার (মিয়ানমার) থেকে আসা গোলাগুলির শব্দ কানে বাজে। যে কারনে ভয় এখন অভয় হয়ে দাঁড়িয়েছে! আর এদিকে, আবারও নাইক্ষ্যংছড়ির তুমব্রু সীমান্ত মায়ানমার থেকে ছোড়া আরো ১টি অবিস্ফোরিত রকেট লাঞ্চারের গোলা উদ্ধার করেছে বিজিবি।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঘুমধুম ইউপি চেয়ারম্যান এ কে এম জাহাঙ্গীর আজিজ। তিনি বলেন, দুই তিন ধরে ওপারের কোন গোলাগুলির শব্দ পাওয়া না গেলেও তবে কৃষকেরা ক্ষেত খামারে গিয়ে অবিস্ফোরিত রকেট লঞ্চার পাওয়া যাচ্ছে। এতে কৃষকেরা ক্ষেত খামারে যেতে ভয়ভীতি কাজ করছে। এ ভয়ভীতি কবে নাগাদ কমে যাবে তা আমরা নিশ্চিত করতে পারছি না। এরপরও কৃষকসহ সীমান্তবাসীকে সর্তক থাকার জন্য প্রতিনিয়ত জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
একাদিক সুত্রে জানাযায়, প্রতিদিনের মতো স্থানীয়রা ক্ষেতে কাজ করতে গিয়ে ১টি অবিস্ফোরিত রকেট লঞ্চার দেখতে পেয়ে বিজিবিকে খবর দেয়। সে সংবাদের ভিত্তিতে১০ ফেব্রুয়ারি (শনিবার) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে সীমান্তের পশ্চিম কুল এলাকা থেকে এগুলো উদ্ধার করেছে বিজিবি।কৃষকরা এখন আতঙ্কে ক্ষেতে খামারে দেখবাল আর চাষ করতে যেতে পারছেন না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক শিক্ষক এপারের সীমান্ত এলাকার চিত্র বর্ণনায় দিতে গিয়ে তিনি বলেন, মিয়ানমারের অভ্যন্তরে জান্তা সামরিক শাসক দলের সাথে সেই দেশের বিদ্রোহী গোষ্ঠীর সংঘাতময় পরিস্থিতিতে আমাদের সীমান্তের লাগোয়া জমি গুলিতে চাষ করতে গেলে প্রায় সময় এরকম অবিস্ফোরিত গোলা ও গুলি ও গোলির খোসা পাওয়া যাচ্ছে। কদিন আগে সীমান্তের ওপারে মায়ানমারের বিচ্ছিন্নতাবাদী আরাকান আর্মির সাথে বিজিপি ও রোহিঙ্গাদের সংগঠন আরসার মধ্যে সংঘর্ষের পর এই অবিষ্ফোরিত গোলাগুলো বাংলাদেশের অভ্যন্তরে এসে পড়ে।
সীমান্তের বাসিন্দারা বলছেন, সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারের দুই পক্ষের গোলাগুলি শব্দ শুনতে শুনতে কান সয়ে গেছে যেন!বরং গুলির শব্দ না শুনলেই অবাক লাগে।তারা আরও বলেন,মিয়ানমার থেকে ছোড়া অসংখ্য গোলা ও গুলি বাংলাদেশের ভূ-খ-ে এসে পড়েছে। যা এখন ক্ষেত-খামারে পাওয়া যাচ্ছে। এসব এলাকায় লাল পতাকা দিয়ে চিহ্নিত করে দিচ্ছে বিজিবি। সীমান্ত সড়ক বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে।
সূত্র জানান,এ নিয়ে তুমব্রু-ঘুমধুম সীমান্ত থেকে এ পর্যন্ত তিনটি রকেট লাঞ্চারের গোলা উদ্ধার করলো বিজিবি।এর আগে উদ্ধার করা ২টি গোলা নিষ্ক্রিয় করেছে বোম ডিসপোজাল ইউনিট। গোলাগুলো উদ্ধার হওয়ার পর এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
উল্লেখ্য, গত ৫ ফেব্রুয়ারি মায়ানমার থেকে বান্দরানের ঘুমধুমে ছুড়ে আসা মর্টারশেলের আঘাতে প্রাণ হারিয়েছেন এক বাংলাদেশি নারী ও এক রোহিঙ্গা। এদিকে বান্দরবান সীমান্ত থেকে ১০০ বিজিপি সদস্যকে উখিয়া সীমান্তে নিয়ে যাওয়া হলেও এখনো পর্যন্ত ১৩০ জন ঘুনধুম সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে অবস্থান করছে।

Archive Calendar
Sat Sun Mon Tue Wed Thu Fri
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031