বান্দরবানে কৃষি জমিতে জৈব সার ব্যাবহার
করে ক্যাপসিকামের বাম্পার ফলন
এনামুল হক কাশেমী ॥
বান্দরবান জেলায় কৃষি জমিতে বাড়ছে স্থানীয়ভাবে তৈরিকৃত জৈব সারের ব্যবহার। জেলা সদরের বিভিন্ন এলাকার কৃষকরাই তৈরি করছেন এসব জৈব সার। জমিতে প্রয়োগের পাশাপাশি এসব সার অন্যদের কাছে বিক্রি করেও লাভবান হচ্ছেন বহুকৃষক। কোনো প্রকার রাসায়নিকের ব্যবহার ছাড়া প্রাকৃতিকভাবে উৎপাদিত এসব সার ব্যবহার করে উৎপাদন করা হচ্ছে বিষমুক্ত ফসল। স্থানীয় কৃষি বিভাগের পরামর্শে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান (তরঙ্গ) স্থানীয় কৃষকদের রাসায়নিক সারের পরিবর্তে জৈব সারের উৎপাদন, প্রশিক্ষণ ও বিপননে সহযোগিতা করে আসছে।
বান্দরবান সদর উপজেলার অনেক কৃষকই এখন জমিতে রাসায়নিক সারের পরিবর্তে জৈব সার ব্যবহারে আগ্রহী হচ্ছেন। কৃষক নিজেই তৈরি করছে এই ভর্মি কম্পোষ্ট বা কেঁচো সার। কৃষক এবং সংশ্লিষ্টরা জানান, সাইলো ফিড, গোবর, কেঁচো, কচুরিপানা এবং বাসাবাড়িতে ব্যবহৃত শাকসব্জির উচ্ছিষ্টাংশ ব্যবহার করে মাত্র এক থেকে দেড় মাসে সহজেই তৈরি করা হয় এ সার। উৎপাদিত সার চাহিদা মিটিয়ে অনেক কৃষকই অন্যের কাছে বিক্রি করে বাড়তি আয় করছেন।
সদর উপজেলার অধিকাংশ কৃষক এখন জৈব সারের ব্যবহারের মধ্য দিয়ে কৃষি পন্য উৎপাদনে ব্যস্ত। জেলার কুহালং , টাইগার পাড়া,লাইমিপাড়া এবং গোয়ালিখোলার কৃষকেরা এই জৈবসারের ব্যবহারের ফলে সফলতা পেতে শুরু করেছে। আর জৈব সার ব্যবহার করে কৃষকেরা আম,পেঁপে,ক্যাপসিকাম,শীম,মরিচ, টমোটো ,আলু, বেগুনসহ বিভিন্ন শাকসবজি চাষ করছে।
স্বচ্ছাসেবী সংগঠন তরঙ্গের সহযোগিতায় ও কৃষি অফিসের পরামর্শে গত ২০১৪ সাল থেকে প্রমোশন অব বান্দরবান এগোবেইজড প্রোডাক্ট নামে একটি প্রকল্প চালু হয় । আর এই প্রকল্পের আওতায় জেলার ২৩টি পাড়ায় শুরু হয় এই জৈব সারের ব্যবহার।
পাহাড়ের দুর্গম যোগাযোগ ব্যবস্থায় ভার্মি কম্পোষ্ট বা কেঁচো সার ব্যবহার করে উৎপাদন খরচ কমাতে পারে কৃষক। এই সার ব্যবহারে মাটির গুনাগুন অক্ষুন্ন থাকার পাশাপাশি উর্বরতাও বৃদ্ধি পায় বলে জানায় কৃষি বিভাগ। তাছাড়া রাসায়নিক সারের ব্যবহার কমিয়ে জৈব সারের ব্যবহারকে ব্যাপকভাবে পরিচিত করে তুলতে কৃষকদের নিয়মিত পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছে কৃষি বিভাগ। ।
জৈবসারের ব্যবহারের মাধ্যমে একদিকে যেমন ক্ষতিকর রাসায়নিক সারের ব্যবহার কমছে, অন্যদিকে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হচ্ছে কৃষক। রক্ষা হচ্ছে পরিবেশের ভারসাম্য। তবে প্রান্তিক কৃষকের কাছে জৈব সার ব্যবহার উৎপাদন ও বিপননকে পরিচিত করে তুলতে আরও বেশি প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করার দাবি স্থানীয় কৃষখদের।