বান্দরবানে বিশ্ব ম্যালেরিয়া দিবসে আলোচনা সভা
মোঃ শাফায়েত হোসেন ॥
বিশ্ব ম্যালেরিয়া দিবসে বান্দরবানে স্বাস্থ্য বিভাগ ও বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাকসহ সহযোগী সংস্থার উদ্যোগে দিবসটি নানা আয়োজনে পালিত হয়েছে। ম্যালেরিয়ার ঝুকি থেকে মৃত্যুর হার কমিয়ে আনার জন্য পার্বত্য জেলা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের উদ্যোগে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাকসহ এনজিও সরকারের স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাথে একযোগে কাজ করছে।বান্দরবান,রাংগামাটি এবং খাগড়াছড়িসহ ১৩টি ম্যালেরিয়াপ্রবণ জেলায় ম্যালেরিয়ায় মৃত্যুর হার কমিয়ে আনার লক্ষ্য নিয়েই জাতীয় ম্যালেরিয়া নিয়ন্ত্রণ প্রকল্পের কার্যক্রম আরও জোরদার করা হচ্ছে।
এদিকে বিশ্ব ম্যালেরিয়া দিবসে বান্দরবানে সোমবার সকালে এক বর্ণাঢ্য র্যালি বের হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে এবং সিভিল সার্জন কার্যালয়ে এসে শেষ হয়। পরে সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সভা কক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্টিত হয়।সিভিল সার্জন ড: উদয় শংকর চাকমার সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ক্য শৈ হ্লা। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(রাজস্ব) মোঃ হারুন-অর-রশিদ,অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অর্নিবাণ চাকমা,ডেপুটি সিভিল সার্জন অং শৈ প্রু মারমা। এসময় অন্যান্যদের মধো প্রেসক্লাব সভাপতি আমিনুল ইসলাম বাচ্চু, ডাঃ উম্মুল বানিন টুম্পা, ব্র্যাক ম্যালিরিয়া নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচী সেক্টর স্পেশালিস্ট মোঃ ফজলুল হক,জেলা ব্রাক প্রতিনিধি মোঃ ওমর ফারুক, ব্রাক বান্দরবান জেলা ব্যবস্থাপক জুয়েল চাকমা ও জয়নাল আবেদীন প্রমুখ।
এদিকে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ক্যশৈহ্লা বলেন,ম্যালেরিয়া প্রবণ জেলার মধ্যে পাহাড়ি জেলা অতিঝূঁকিপূর্ণ। এ পার্বত্য জেলায় সরকারি ব্যবস্থাপনায় ব্য্রাকসহ বেসরকারি সংস্থার সহায়তায় ম্যালেরিয়া নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম চলছে।পাহাড়ে ম্যালেলিয়া জীবানুবাহী মশার বিচরণ করা হছেছে। ভয়ানক মশার কামড়ে প্রতিবছরই পাহাড়ে অসংখ্য লোক প্রাণ হারায় অকালে। তবে আগে ছেয়ে পাহাড়ে ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত এবং মৃত্যুর হার অনেক কমে আসছে। সাধারণ মানুষ ক্রমেই সচেতন হয়ে উঠছেন,তারা খুঁজে পেয়েছেন ম্যালেরিয়া থেকে মুক্ত থাকার নানাকৌশল এবং মানুষ দিন দিন সচেতন হচ্ছে।
সিভিল সার্জন ড: উদয় শংকর চাকমা বলেন,বান্দরবান জেলা সীমান্তবর্তী জেলা হওয়ায় এখানে ম্যালেরিয়ায় আক্রান্তের হার ও ঝুকি অন্যান্য জেলা হতে অনেক বেশী। তাই রাতারাতি হয়তো ম্যালেরিয়া রোগ নির্মুল করা সম্ভব নয়,তবে সকলের আন্তরিক প্রচেষ্টায় তার প্রতিরোধ করা সম্ভব। এ ক্ষেত্রে ৫ বছরের নীচের শিশু ও গর্ভবতী মায়েরা বেশী ঝুকির মধ্যে রয়েছে এবং এদের কীটনাশকযুক্ত মশারী ব্যাবহার নিশ্চিত করতে হবে। এটা ধরে রাখতে হবে এবং কীটনাশক যুক্ত মশারী বিতরন কালে সাথে সাথে মশারী ব্যবহারের নিয়ম গুলো জানিয়ে দেয়া হয়েছে।
আলোচনা সভার তথ্য মতে,জেলার ৭টি উপজেলায় ল্যাবরেটরির সংখ্যা ১৭ টি,স্বাস্থ্য সেবিকার সংখ্যা ৫০৪জন,স্বাস্থ্য কর্মীর সংখ্যা ১২৪ জন।এছাড়াও ২০১৩ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত ম্যালেরিয়া রোগ নিয়ন্ত্রণে ২ লক্ষ ৪৫ হাজার ৩শত কীটনাশক যুক্ত মশারী বিতরণ করা হয়।