ডেস্ক রির্পোটঃ-বান্দরবানের আলীকদম উপজেলার সাড়ে ৩৭ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। এ জন্য মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৭৪ কোটি টাকা।
আলীকদম-জালানিপাড়া-করুকপাতা-পোয়ামুহুরী সড়ক নির্মাণ নামে এ প্রকল্পটি অনুমোদনের জন্য জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) আগামী সভায় উপস্থাপন করা হতে পারে বলে পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে জানা গেছে। প্রকল্পটি অনুমোদন পেলে তা ২০১৯ সালের জুনের মধ্যে বাস্তবায়ন করবে সড়ক ও জনপথ অধিদফতর।
প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের পাশাপাশি এলাকার নিরাপত্তা জোরদারকরণ এবং স্থাস্থ্য ও শিক্ষার উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে বলে আশা কছেন সংশ্লিষ্টরা।
এ বিষয়ে পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্য জুয়েনা আজিজ পরিকল্পনা কমিশনের মতামত দিতে গিয়ে বলেন, আলীকদম-জালানিপাড়া-করুকপাতা-পোয়ামুহুরী সড়কটি নির্মিত হলে ওই এলাকার নিরাপত্তা জোরদারকরণ, স্থাস্থ্য ও শিক্ষার উন্নয়ন, কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি এবং পর্যটন শিল্পের বিকাশে সহায়ক হবে তাই প্রকল্পটি অনুমোদন যোগ্য।
সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্ব অংশে বান্দরবান জেলার অবস্থান। এ জেলার সঙ্গে অন্যান্য উপজেলার যোগাযোগ ব্যবস্থা নাজুক হওয়ার কারণে এ অঞ্চলের জনগণের জীবনমান আশানুরূপ নয় এবং গড় মাথাপিছু আয় জাতীয় আয় হতে কম। শিক্ষা সুবিধা ও স্থাপনার অপর্যাপ্ততার কারণে আলীকদম উপজেলার দক্ষিণে বসবাসরত উপজাতীয় জনগোষ্ঠীর সাক্ষরতার হার কম।
ক্লিনিক, হাসপাতাল ও ডাক্তারের অপ্রতুলতার কারণে মানুষ মৌলিক স্বাস্থ্য সুবিধা হতে বঞ্চিত। এসব মৌলিক চাহিদা পূরণের জন্য স্থানীয়রা আলীকদম উপজেলার ওপর নির্ভরশীল। বর্ষাকালে স্থানীয়দের উপজেলা সদরে পৌঁছতে দীর্ঘ সময় লাগে। প্রস্তাবিত সড়কটি নির্মিত হলে এ অঞ্চলের উপজাতীয় জনগোষ্ঠীর আর্থসামাজিক উন্নয়নের প্রধান নিয়ামক পর্যটন শিল্পের বিকাশ ঘটিয়ে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে সহায়ক হবে।
এ ক্ষেত্রে এই সড়কটি দুর্গম অঞ্চলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে এবং নিরাপত্তা অপারেশন কার্যক্রম পরিচালনা করতে সহায়ক ভূমিকা রাখবে।
এ প্রেক্ষিতে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ হতে ৩৭৯ কোটি ৩৭ লাখ টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য প্রস্তাব করা হয়। প্রকল্পটির ওপর ২০১৬ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটি (পিইসি) সভা অনুষ্ঠিত হয়। এই পিইসি সভার সিদ্ধান্তের আলোকে উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) পুনর্গঠনপূর্বক পরিকল্পনা কমিশনে প্রেরণ করা হয়।
তবে পুনর্গঠিত ডিপিপির প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয় ৩৭৪ কোটি ১ লাখ টাকা।
প্রকল্পের প্রধান কার্যক্রম গুলো হচ্ছে, ৮ লাখ ৭৬ হাজার ঘনমিটার পাহাড় কাটা, ৩ লাখ ঘনমিটার এবাটমেন্ট এবং উইং ওয়ালে ব্যাক ফিলিং, ৩৬ দশমিক ৫০ কিলোমিটার নতুন ফ্লেক্সিবল পেভমেন্ট নির্মাণ, ৯১৯ মিটার আরসিসি ব্রিজ নির্মাণ, ৭২ মিটার ১১টি আরসিসি বক্স কালভার্ট নির্মাণ, ৪৮ দশমিক ৩ কিলোমিটার সাইড ড্রেন নির্মাণ, ১৩১ দশমিক ৮৪ মিটার ৫৫টি ক্রস ড্রেন নির্মাণ, ১ হাজার ৮৫৪ মিটার রিটেইনিং ওয়াল, টো ওয়াল, ব্রেস্ট ওয়াল ইত্যাদি নির্মাণ, ৯৫ মিটার বল্লা প্যালাসাইডিং, ৩ হাজার ৭৪৭ দশমিক ৬৭ বর্গমিটার অফিস, ওয়ার্ক শেড, সিকিউরিটি পোস্ট, ক্যাম্প নির্মাণ, ৩টি মোটর ভেহিক্যাল, ৬টি প্ল্যান্ট , ইকুইপমেন্ট ক্রয়, ২০ হাজার ৬০০টি বৃক্ষ রোপণ এবং অফিস ইকুইপমেন্টসহ অন্যান্য কাজ সম্পাদন করা হবে।
