॥ ফাতেমা জান্নাত মুমু ॥ বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি মো. নিজামুল হক বলেছেন, ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠিগুলোর বিশেষ অধিকারকে অস্বীকার করা যাবেনা। তাদের অধিকারকেও সংরক্ষণে ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন। এছাড়া দেশের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠির মানুষদের সমাজে এগিয়ে আসার সুযোগ করে দেওয়ার মাধ্যমে শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
শুক্রবার সকাল ১০টায় পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের সম্মেলন কক্ষে তিন পার্বত্য জেলায় দেওয়ানী বিচার ব্যবস্থায় বিদ্যমান অসংগতি ও অস্পষ্টতা এবং তা নিরসনের প্রয়োজীয়তা শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে নিজামুল হক এ কথা বলেন।
রাঙ্গামাটি জেলা আইনজীবি সমিতির সভাপতি প্রতিম রায়ের সভাপতিত্বে এসময় উপস্থিত ছিলেন, জাতীয় মানবাধিতার কমিশন অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান, পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান ও জনসংহতি সমিতির সভাপতি জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা, রাঙ্গামাটি চাকমা সার্কেল চীপ ব্যারিষ্টার রাজা দেবাশীষ রায়, জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থার পরিচালক মো. মালিক আব্দুল্লাহ আল-আমিন, রাঙ্গামাটি জেলা ও দায়রা জজ মো. কাউসার, বান্দরবান জেলা ও দায়রা জজ মো. শফিকুর রহমান, রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসক সামসুল আরেফিন, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনক ওয়াছিম জামান তনময় প্রমুখ।
জাতীয় মানবাধিতার কমিশন অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান বলেন, পার্বত্যাঞ্চলের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের ভূমি অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। কারণ এ অঞ্চল শুধুমাত্র স্থানীয় পাহাড়ি জনগোষ্ঠীদের। কারণ পার্বত্যাঞ্চলে যেস্থান, তাদের যে ভূমি, সে ভূমির বিশেষ কিছু মর্যাদা রয়েছে। সে বিশেষ মর্যাদা যেন কোনভাবে ক্ষুন্ন না হয়। সে বিষয়ে নজর রাখার আহবান জানান তিনি।
সেমিনারে পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান ও জনসংহতি সমিতির সভাপতি জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তি যথাযত বাস্তবায়নের মধ্যে সব সমস্যার সমাধান। এ অঞ্চলের স্থানীয় পাহাড়ি-বাঙালী সমস্যাগুলো উত্তরণের জন্য কি কি ব্যবস্থাগ্রহণ করা যেতে পারে সে বিষয়ে এদেশের শাসকগোষ্ঠীরা সঠিকভাবে মুল্যায়ন করছেনা। তাই পার্বত্যাঞ্চলের সমস্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। তিনি বলেন, পার্বত্য চুক্তির সর্বশেষ আইন কার্যকর হওয়া প্রয়োজন। কিন্তু সবার সে আইনের দিকে অগ্রসর হয়নি। তাই পার্বত্যাঞ্চলের বুকে অপারেশন উত্তোরণ নামে সেনা শাসন অব্যাহত রয়েছে। যে অঞ্চলে সেনা শাসন থাকবে, সে অঞ্চলে কিভাবে বিচার ব্যবস্থা সুনিদিষ্ট দিকে অগ্রসর হবে। তিনি পার্বত্য চুক্তি বাস্তাবয়নের মাধ্যমে পাহাড়ি জাতিগোষ্ঠীর অধিকার নিশ্চিত করার আহবান জানান।
পরে পার্বত্য জেলায় দেওয়ানী বিচার ব্যবস্থায় বিদ্যমন অসংগতি ও অস্পষ্টতা এবং সেগুলো নিরসনে প্রয়োজীয়তা শীর্ষক সেমিনারে বেশকিছু সুপারিশ মালা গৃহিত হয়।
