পার্বত্য চট্টগ্রামের ক্ষুদ্র নৃ গোষ্ঠী মারমাদের সামাজিক উৎসব সাংগ্রাই আজ শেষ হয়েছে। বর্ষবরণের আনুষ্ঠানিকতায় বৃহস্পতিবার (২০এপ্রিল) রাঙ্গামাটি সদর উপজেলা মারমা সম্প্রদায়ের উদ্যোগে শহরের আসামবস্তী নারিকেল বাগান এলাকায় পুরাতন বছরকে বিদায় আর নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে উৎসবে মেতে উঠে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের সাবেক প্রতিমন্ত্রী দীপংকর তালুকদার। ঐতিহ্যবাহী মংঘন্টা বাজিয়ে উৎসবের উদ্বোধন করেন রাঙ্গামাটি জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বৃষ কেতু চাকমা। পরে ফিতা কেটে জলকেলি উৎসবের শুভ উদ্বোধন করা হয়। এর পর বাঁশি বাজার সাথে সাথে শুরু হয় পানি ভর্তি করে রাখা ঐতিহ্যবাহী পানি খেলা।
জলকেলি উৎসবের মাধ্যমে মারমা যুবক-যুবতীদের একে অন্যের সহচর্যে আসার সুযোগ সৃষ্টি হয়। এসময় তারা তাদের প্রিয় মানুষটিকে বেছে নেওয়ার কাজটিও সফলভাবে করে নেয়। সাংগ্রাই উৎসবের সবচেয়ে আকর্ষণীয় পানি খেলা দেখার জন্য হাজারো নারী-পুরুষ-শিশু-কিশোর উৎসবস্থলে সমবেত হয়ে মিলন মেলায় পরিণত হয়। পানি খেলা মূলত অবিবাহিত তরুন-তরুনীরা একে অপরকে পানি ছিটিয়ে ভিজিয়ে দেয়। এতে বিগত বছরের সকল পাপ ও জরাজীর্ণ ধুয়ে-মুছে যায় বলে তাদের বিশ্বাস।
জলকেলি উৎসবের অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, রাঙ্গামাটি জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান চিংকিউ রোয়াজা, রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ সদস্য মোঃ মুছা মাতব্বর, রেমলিয়ানা পাংখোয়া, রাঙ্গামাটি উপজেলা মারমা সংস্কৃতি সংস্থার জল উৎসব কমিটির আহ্বায়ক মিন্টু মারমা, সাধারণ সম্পাদক মইনুচিং মারমা’সহ অন্যান্য অতিথিরা উপস্থিত ছিলেন।
মারমা সম্প্রদায় জলোৎসবের মাধ্যমে পুরাতন বছরকে বিদায় আর নতুন বছরকে বরণ করে। মারমা তরুণ-তরুনীরা একে অপরকে জল ছিটিয়ে পুরাতন বছরের সমস্ত গ্লানি, দুঃখ, বেদনা ও অপশক্তিকে ধুয়ে মুছে দূর করে। এই আনন্দে মেতে উঠে পাহাড়ি-বাঙালী সবাই। সমবেত হয় দূর-দুরান্ত থেকে আগত পর্যটক ও বিভিন্ন সম্প্রদায়ের হাজারো নারী-পুরুষ। পরে সম্প্রীতির মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
