রাঙ্গামাটির কাপ্তাই হ্রদের পানি শুকিয়ে যাওয়ায়
বেকার হয়ে পড়েছে কয়েক হাজার শ্রমজীবি মানুষ
॥ নিজস্ব প্রতিবেদক ॥
রাঙ্গামাটির কাপ্তাই হ্রদের পানি শুকিয়ে কয়েটি শিল্প কারখানার উৎপাদন হ্রাস যাওয়ায় কয়েক হাজার লোকের কর্মসংস্থান বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে বেকার হয়ে ঘরেই বসে দিন কাটাচ্ছে এইসব শ্রমিকরা। বেকার হয়ে পড়া এই শ্রমজীবী মানুষগুলোর দিন কাটছে অভাব অনটনে আর অন্যরা এই পেশা ছেড়ে অন্য পেশার কাজ খুঁজতে ছুটে যাচ্ছে বিভিন্ন স্থানে।
কাপ্তাই হ্রদের পানির ওপর নির্ভর করে চলে কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্র, মাছ উৎপাদন, বিউবো কাঁচামাল পারাপার কার্গো টলি, দেশের বৃহৎ কাগজ ফ্যাক্টরি কর্ণফুলী কাগজ মিলিসহ আরো বেশ কয়েকটি শিল্পকারখানা।
প্রতি বছর কাপ্তাই এলাকায় মার্চ হতে জুন পর্যন্ত বৃষ্টিপাত না হওয়ায় দেশের একমাত্র কৃত্রিম বৃহৎ পরিকল্পিত কাপ্তাই হ্রদটি ক্রমেই পানি শুকিয়ে মড়া খালে পরিণত হয়ে যাচ্ছে। ফলে কাপ্তাইয়ে অবস্থিত পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রসহ শিল্প কারখানাগুলো সঠিক ভাবে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করতে বেগ পেতে হচ্ছে।
আর পানি নির্ভর শিল্পকারখানার পাশাপাশি অত্র এলাকার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো দিন দিন বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়ে পড়েছে। ফলে সরকার এ সকল শিল্পকারখানা ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে রাজস্ব বঞ্চিত হচ্ছে।
বাঁশ ব্যবসায়ী আবুল কাশেম বলেন, আমাদের এখন দূর্দিন যাচ্ছে। কারণ পানি নেই ব্যবসাও নেই। পানির সাথে আমাদের জীবন জীবিকা জড়িত বলে তিনি জানান। মাছ ব্যবসায়ী নবী হোসেন বলেন, পানির ওপর নির্ভর করে চলে আমাদের মাছ ব্যবসা। আর এই ব্যবসার সাথে জড়িয়ে আছে আমার পরিবার। এখন হ্রদে পানি কম হওয়া মাছ নাই বললেই চলে। আর মাছ না থাকলে আমাদের ব্যবসা বন্ধ হয়ে যায়। আমাদের এখন পরিবার নিয়ে বেঁচে থাকায় দায় হয়ে পরেছে। সরকার যদি আমাদের সাহায্য সহযোগীতা না করে। তা হলে আমাদের বেঁচে থাকা আর মরা দুটাই সমান হয়ে যাবে।
এদিকে এলাকার সচেতন মহল বলছেন, কাপ্তাই হ্রদের গভীরতা একেবারে কমে গেছে। যদি হ্রদ খনন করা হত তাহলে এই মৌসুমে কিছু পরিমাণ পানি পাওয়া যেতো। দিন, দিন কাপ্তাই হ্রদের গভীরতা কমে গিয়ে হ্রদ ভরাট হয়ে যাচ্ছে। আর হ্রদ শুকিয়ে যাওয়ায় উপজেলাগুলোতেও যোগাযোগ মারাত্মক ব্যাহত হচ্ছে।যার ফলে প্রতি বছর এর মাশুলগুনতে হচ্ছে কয়েক হাজার মানুষকে। তাই দ্রুত সময়ের মধ্যে পরিকল্পিতভাবে এই কাপ্তাই হ্রদ খনন করা দরকার বলে মনে করেন সচেত মহল।
