॥ নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার সাজেক ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী দূর্গম ৩টি গ্রামে হামে আক্রান্ত হয়ে প্রায় তিন সপ্তাহের ব্যবধানে ৫শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ২৫-২৬ ফেব্রুয়ারী ২ জনের মুত্্ুয হয়। আর ১৫-১৬-১৭ মার্চ ৩জনসহ সর্বমোট ৫জনের মৃত্যু হয়।
সাজেক ইউনিয়নের ৭নং ও ৮নং ওয়ার্ডের লঙথিয়ান পাড়া, অরুন পাড়া, কমলাপুর, কাইশ্যো পাড়া এলাকায় এখনো প্রায় বয়স্ক লোকসহ শতাধিক শিশু হামে আক্রান্ত বলে জানা যায়।
ইতিমধ্যে রাঙ্গামাটি স্বাস্থ্য বিভাগের একটি জরুরী টিম বাঘাইছড়ির সাজেক ইউনিয়নে চিকিৎসা সেবা প্রদান করছে। নিহতরা হলেন, সাগরিকা ত্রিপুরা (১১), সুজন কুমার (৯) কহেন ত্রিপুরা (১০), বিধান ত্রিপুরা (১২) রেজিনা ত্রিপুরা (৮)।
এব্যপারে রাঙ্গামাটি সিভিল সার্জন বিপাশ খীসা জানান, বাঘাইছড়ি উপজেলার দূর্গম সাজেকে প্রায় ৩ সপ্তাহের ব্যবধানে ৫জন শিশুর মৃত্যু হয়েছে। গত ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারী হামে আক্রান্ত হয়ে ২জনের মৃত্যু হয়। এর এক সপ্তাহের ব্যবধানে ১৫ হতে ১৭ মার্চে হামে আক্রান্ত হয়ে ৩জনের মৃত্যু ঘটে। এতে বাঘাইছড়ি উপজেলার দূর্গম সাজেক ইউনিয়নের ৩টি গ্রামে হামে আক্রান্ত হয়ে ৫জন শিশুর মৃত্যু হয়। ইতিমধ্যে আমরা রাঙ্গামাটি স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে জরুরী চিকিৎসা সেবা প্রদানের জন্য মেডিকেল টিম পাঠিয়েছি। এখনো পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে।
সাজেক ৯নং ওয়ার্ডের সিয়ালদাহ এলাকার ইউপি সদস্য ও কারবারি জুপ্পুুইথাংক ত্রিপুরা বলেন, বেশ কিছুদিন যাবৎ এই হামের প্রার্দুরভাব দেখা দিয়েছে। এতে করে এই শিশুদের মৃত্যু ঘটনা ঘটেছে।
সাজেক ইউপি চেয়ারম্যান নেলসন চাকমা নয়ন শিশু মৃত্যুর বিষয়টি শিকার করে বলেন, দূর্গম অঞ্চল হওয়ায় আক্রান্তদের চিকিৎসা সেবা দিতে কিছু সমস্যা হচ্ছে। ইতি মধ্যে বাঘাইছড়ি উপজেলা স্ব্যাস্থ কমপ্লেক্স ও বিজিবির ২ টি মেডিকেল টীম ঘটনাস্থলে পৌছে চিকিৎসা কার্যক্রম শুরু করেছে। তবে সেনাবাহিনী হেলিকপ্টারের সহযোগীতায় আক্রান্তদের উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা না করলে মৃতের সংখ্যা বাড়তে পারে বলে জানান তিনি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আহসান হাবিব জিতু বলেন, গত কয়েকদিন ধরে দুর্গম ও সীমান্তবর্তী শিয়ালদহ এলাকার তিনটি গ্রামের শিশুদের হামে আক্রান্ত হওয়ার খবর পাচ্ছিলাম। বিষয়টি স্বাস্থ্য বিভাগকে জানানোর সাথে সাথেই তারা পদক্ষেপ নিয়েছে। তবে গ্রামগুলি অত্যন্ত দূরে এবং দীর্ঘ পাঁয়ে হাটা পথে হওয়ায় সঠিক সময়ে সঠিক চিকিৎসা সেবা পৌঁছানো কঠিন হচ্ছে। শুক্রবার (২০ মার্চ) আরেকটি মেডিকেল টীম যাচ্ছে, তবে একটি চেলেঞ্জিং বিষয় হচ্ছে আক্রান্ত রোগীরা নিয়মিত মেডিসিন সেবন করছেনা এবং তাদের উন্নত চিকিৎসার জন্য আনতে চায়লে তারা আসতেছেনা তারপরেও আমরা বিজিবি সাথে যোগাযোগ করে সেখানে বিজিবির দুইটি মেডিকেল টিম সেখানে পাঠিয়েছি এবং তবে সেখানকার পরিস্থিতি বিবেচনা করে প্রয়োজনে আক্রান্ত শিশুদের দীঘিনালা অথবা খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হবে চিকিৎসার জন্য। আর উন্নত চিকিৎসার জন্য সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টারের সহায়তা নেয়ার চেষ্টা করছি, আশা করি অল্প সময়ের মধ্যে সমস্যাটি কেটে যাবে।
এবিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ইসতেখার আহম্মদ বলেন, সাজেকের দূর্গম এলাকায় হাম রোগে আক্রান্ত হয়ে প্রথম শিশু কন্যার মৃত্যুর খবর পেয়ে আমাদের মেডিকেল টিম সেখানে যায় এবং চিকিৎসা সেবা প্রদান করে এবং আমি নিজেও পায়ে হেঁটে সেখানে যায়। এছাড়াও আক্রান্তদের নমুনা সংগ্রহ করে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে হাম রোগ কিনা নিশ্চিত হতে। নিশ্চিতের পর সব জানা যাবে। তবে আমাদের মেডিকেল টিম পুরো দমে চিকিৎসা সেবায় কাজ করছে। তবে এলাকাটি এত দূর্গম যে সাজেকরে ৯নং পাড়া থেকে পায়ে ঁেহটে যেতে একদিন সময় লাগে।
