॥ চাউচিং মারমা, রাজস্থলী ॥ রাঙ্গামাটির রাজস্থলী উপজেলার ঐতিহ্যবাহী একমাত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রাজস্থলী কলেজকে জাতীয়করণের দাবিতে ঘন্টাব্যাপী মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করেছে সহ¯্রাধিক শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকবৃন্দ।
গতকাল ৩১ জুলাই রবিবার সকালে উপজেলা সদরে আয়োজিত মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারিরা নিয়মতান্ত্রিকভাবে কলেজ জাতীয় করণের সকল যোগ্যতা থাকলেও রাজস্থলী উপজেলা কলেজকে জাতীয় করণ না করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন এলাকাবাসী ও ছাত্র-ছাত্রীরা।
দীর্ঘদিনের প্রতিষ্ঠিত কলেজকে জাতীয়করণ করা না হলে আগামীদিনে আরো কঠোর আন্দোলন কর্মসূচীর ঘোষণা দিয়েছে রাজস্থলী উপজেলার সর্বস্তরের জনসাধারণ ও শিক্ষার্থীরা। তারা প্রধানমন্ত্রীর কাছে হাজারো শিক্ষার্থীর উচ্চ শিক্ষা জীবন নিশ্চিত করতে রাজস্থলী কলেজকে জাতীয় করণের দাবী জানান।
রাঙ্গামাটি রাজস্থলী উপজেলা পরিষদ চত্বরে ঘন্টা ব্যাপী মাননবন্ধনে বক্তব্য রাখেন রাঙ্গামাটি জেলা পরিষদ সদস্য চানমুনি তঞ্চঙ্গ্যা, রাজস্থলী উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান অংনুচিং মারমা, কলেজের প্রতিষ্ঠাতা ও বর্তমান সভাপতি নিউচিং মারমা, ১ নং ঘলাছড়ি ইউনিয়নের নব নির্বাচিত চেয়ারম্যান সুকান্ত তঞ্চঙ্গ্যা,চেয়ারম্যান দ্বীপময় তালুকদার, জেলা বিএনপির সদস্য চথোয়াইপ্রু মারমা, বিএনপির সহ-সভাপতি মোঃ হাসেম, রাজস্থলী বাজার জামে মসজিদের ঈমাম মোঃ নুরুল হক, আওামীলীগ নেতা মোঃ ইদ্রিস মিঞা, আওয়ামীলীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক মোঃ শামসুল আলম, কলেজ ছাত্রী হ্লা খ্যাইনু মারমা, সাবেক মেম্বার চাইচিং মারমা সহ ছাত্র-ছাত্রী, অভিভাবকবৃন্দ এবং সাধারণ জনগন বক্তব্য রাখেন।
মানববন্ধনে রাজস্থলী উপজেলা কলেজ, রাজস্থলী তাইতং পাড়া সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়, ঘিলাছড়ি নি¤œমাধ্যমিক বিদ্যালয়, মাথুইপ্রু প্রুলাউ হেডম্যান স্মৃতি নি¤œমাধ্যমিক বিদ্যালয়, গাইন্ধ্যা উচ্চ বিদ্যালয় সহ আরো বেশ কয়েকটি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা মানবন্ধনে অংশ গ্রহণ করেন।
ক্ষুদ্র নৃ গোষ্ঠী অধ্যুষিত প্রত্যন্ত উপজেলা রাজস্থলীতে ১৯৮৫ সালে রাজস্থলী তাইতং পাড়া সরকারী উচ্চ বিদ্যালয় জাতীয় করণ করা হলেও দীর্ঘ সময় পরে ১৯৯৮ সালে জনগণের প্রাণে দাবীতে রাজস্থলী কলেজ স্থাপিত হয়। এই উপজেলা সেই সময়ের উপজেলা নির্বাহী অফিসার আখতার জামান, ২ নং গাইন্দ্যা ইউনিয়নের তৎকালীণ নির্বাচিত চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক নিউচিং মারমা, ১ নং ঘিলাছড়ি ইউনিয়নের তৎকালীন নির্বাচিত চেয়ারম্যান উপজেলা আওয়ামীলীগৈর সহ-সভাপতি রবার্ট ত্রিপুরা, রাজস্থলী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যৗান ক্যজচাই মারমা ও এলাকার সমাজ সচেবতন ব্যক্তিবর্গের উদ্যোগে এ কলেজের গোড়া পত্তন হয়। আমার অত্যন্ত আনন্দের সাথে এ তথ্যও এখানে জানাতে চাই যে, বীর মুক্তিযোদ্ধা সুশান্ত বড়–য়া এ কলেজের প্রতিষ্ঠিতা অধ্যক্ষ হিসাবে এ কলেজের সূচনা করেন এবং ২০১৫ সালে অবসর গ্রহণের দিন পর্যন্ত এ কলেজের অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করেছেন। জেলা পরিষদের তৎকালীণ চেয়ারম্যান চিংকিউ রোয়াজা ও জাতীয় সংসদের এমপি দীপংকর তালুকদার এ কলেজের তথা এলাকার শিক্ষার মানোন্নয়নের অত্যন্ত গুরুত্পূর্ণ ভ’মিকা রেখেছেন এবং এর বিকাশে উদার অনুদান প্রদান করেছেন।
কিন্তু পরিতাপের বিষয় এই যে, উপজেলা সদরে প্রতিষ্ঠিত হওয়া সত্ত্বেও এবং বিপুল পরিমান ছাত্র-ছাত্রী ও সার্বিক সুযোগ সুবিধা থাকা সত্বেও এই কলেজটি এখনও জাতীয়করণের লক্ষ্যে পর্যবেক্ষণের প্রাথমিক তালিকায় অন্তভর্’ক্ত না হওয়া এবং উপজেলা সদর থেকে ২২ কিলোমিটার দুরে বাঙ্গাল হালিয়া এর নাম প্রকাশিত হওয়ায় এলাকাবাসী অত্যন্ত ব্যথিত, দুঃখিত ও ক্ষুব্ধ।
নেতৃবৃন্দ দ্রুত এই কলেজে জাতীয় করণের জন্য জোর দাবী জানান।
