রোহিঙ্গাদের ওপর নিষ্ঠুর নির্যাতনের ভিডিওচিত্র, ব্যবস্থা নেবে মিয়ানমার
সামাজিক মাধ্যমে ফেসবুকে এবং হোয়াটসঅ্যাপের মেসেজিং অ্যাপের মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী পুলিশের (বিজিপি) নিষ্ঠুর নির্যাতনের একটি ভিডিওচিত্র ছড়িয়ে পড়েছে।
রাখাইন রাজ্যে গত অক্টোবর ৮ অক্টোবর থেকে রোহিঙ্গা মুসলমানদের ওপর গণহত্যা-গণধর্ষণ-গণগ্রেফতার শুরু করে মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় বাহিনী। এসব নির্যাতনের প্রমাণ সম্বলিত একাধিক ভিডিও বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হলে তা ভুয়া বলে দাবি করেছিল মিয়ানমার সরকার। তবে বিজিপির একজন সদস্যের তোলা এই ভিডিওকে আমলে নিতে বাধ্য হয়েছে মিয়ানমার। তারা এ ঘটনার ব্যাপারে পদক্ষে নেয়ার কথা জানিয়েছে।
মালয়েশিয়াভিত্তিক রোহিঙ্গাভিশন টিভি জানিয়েছে, গত নভেম্বরের শুরুতে রাখাইনের রাতেডং এলাকার ‘কুয়েতানকাউক’ গ্রামে, যা স্থানীয়ভাবে ডাউনসে ফারা নামে পরিচিত, এ ঘটনা ঘটে।
ওই এলাকায় গত ৪ থেকে ৬ নভেম্বর পর্যন্ত বিজিপি ও সেনাবাহিনীর যৌথ অভিযান চলে। এরমধ্যে ৫ নভেম্বর পরিচালিত নির্যাতনের চিত্রই ভিডিও করেন একজন বিজিপি সদস্য। পরে গত ২৯ ডিসেম্বর এই ভিডিওচিত্র প্রথমকে হোয়াটসঅ্যাপে প্রচার করা হয়। এক পর্যায়ে ভিডিওটি ফেসবুকেও ছড়িয়ে পড়ে তা দ্রুত ভাইরাল হয়ে যায়। ভিডিওটিতে দেখা গেছে, অভিযান চালানোর নাম করে বিজিপি সদস্যরা রোহিঙ্গা মুসলমানদের মারতে মারতে একটি খোলা জায়গায় এনে জড়ো করছে। সেখানে অন্তত ৬০ জন রোহিঙ্গাকে মাথায় হাত তুলে এবং সামনে পা ছড়িয়ে বসিয়ে রাখা হয়েছে। এতে আরও দেখা যায়, বিজিপি সদস্যরা আটক রোহিঙ্গাদের ইচ্ছেমতো পেটাচ্ছে এবং বুকে-মুখে ঘুষি-লাথি দিচ্ছে। আটক রোহিঙ্গাদের দেখে নিরাপরাধ বেসামরিক মানুষ মনে হলেও নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা তাদের সঙ্গে অপমানজনক আচরণ করে এবং জাতিগতভাবে দুর্ব্যবহার করে। বিবিসি জানিয়েছে, এক বিবৃতিতে ভিডিওতে দেখানো নির্যাতনের ঘটনা স্বীকার করেছে মিয়ানমার সরকার। তারা জানিয়েছে, গত নভেম্বরে রাখাইন স্টেটে সংঘর্ষের দুইদিন পরেই এ ঘটনা ঘটেছে। ওই ঘটনায় একজন পুলিশ কর্মকর্তা নিহত হয়। এর আগে রাখাইনে নিরাপত্তা বাহিনী আইন মেনেই কাজ করছে বলে দাবি করলেও নির্যাতনের নতুন ভিডিওর প্রেক্ষাপটে পদক্ষেপ নেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে তারা।