রোহিঙ্গারা যাতে ধর্মীয় শিক্ষা পায় সেদিকে মনোযোগী হেফাজতে ইসলাম

মিয়ানমারে প্রজন্ম পর প্রজন্ম শিক্ষার অধিকারবঞ্চিত রোহিঙ্গারা এখন যাতে ধর্মীয় শিক্ষা পায় সেদিকে মনোযোগী হয়েছে হেফাজতে ইসলাম

শুক্রবার বিকালে চট্টগ্রামের লালদীঘি মাঠে রোহিঙ্গাদের নিয়ে এক সমাবেশে নেতাকর্মীদের এ বিষয়ে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন হেফাজতের আমির শাহ আহমদ শফী।

তিনি বলেন, “এদের (রোহিঙ্গা) নাস্তিক বানানোর চেষ্টা হচ্ছে, খুবই সতর্ক থাকুন। তাদের গ্রামে গ্রামে যেন মসজিদ মাদ্রাসা হয়, সেভাবে চেষ্টা করবেন।”

মিয়ানমারে নাগরিক অধিকারহীন রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর গত ২৫ সেপ্টেম্বর দেশটির সেনাবাহিনী নতুন করে দমন অভিযান শুরু করায় বাংলাদেশে পালিয়ে আসছে তারা। রাখাইনে ঘর-বাড়ি ছেড়ে এরইমধ্যে পাঁচ লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে।

কক্সবাজারের টেকনাফ ও উখিয়ায় নির্দিষ্ট এলাকায় তাদের থাকার ব্যবস্থা করেছে সরকার। জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থাসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা ও দেশ দেশান্তরী এই মানুষদের জরুরি প্রয়োজন মেটাতে সহায়তার হাত বাড়িয়েছে।

বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে রোহিঙ্গাদের স্বাস্থ্য সেবাও দেওয়া হচ্ছে। অধিক জন্মহারের এই জনগোষ্ঠীর নারীদের মধ্যে প্রজনন স্বাস্থ্য সম্পর্কে কোনো ধারণা নেই বলে স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম জানিয়েছেন।

এখন তাদের আরবি শিক্ষায় যাতে কোনো বিঘ্ন না ঘটে সে বিষয়ে প্রশাসনকে সতর্ক করেছেন হেফাজত নেতারা।

ওই সমাবেশে মাদ্রাসাভিত্তিক সংগঠনটির যুগ্ম মহা-সচিব মুফতি ফয়জুল্লাহ বলেন, “রোহিঙ্গাদের ক্যাম্পে মসজিদ মাদ্রাসা নির্মাণ করা হবে। কক্সবাজারের জেলা প্রশাসনকে বলতে চাই, মসজিদ-মাদ্রাসায় হাত দিলে তা ভেওে দেওয়া হবে।”

পাঠ্যবইয়ে থাকা বিপ্রদাশ বড়ুয়ার লেখা ‘মংডুর পথে’ ভ্রমণ কাহিনী বাদ দেওয়ার দাবি করেন তিনি।

‘আরাকানে মুসলিমদের ওপর গণহত্যা বন্ধ, মিয়নমার সরকারের ওপর চাপ প্রয়োগ এবং নাগরিক অধিকার নিয়ে রোহিঙ্গাদের আরকানে ফিরিয়ে নেওয়ার দাবিতে’ এই সমাবেশের আয়োজন করে হেফাজতে ইসলাম।

সমাবেশে সংগঠনের মহাসচিব জুনায়েদ বাবুনগরী বলেন, “অং সান সু চি একজন আন্তর্জাতিক জঙ্গি। তাকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। গণহত্যার দায়ে তাকে আন্তর্জাতিক আদালতে কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে হবে।”

সরকারের প্রতি কূটনৈতিকভাবে মিয়ানমারের ওপর চাপ প্রয়োগ এবং তাতে কাজ না হলে সম্পর্ক ছিন্নের দাবি করেন বাবুনগরী।

“তারপরও যদি না হয়, সু চির বিরুদ্ধে জিহাদের ডাক দিন। আমরা জিহাদের জন্য তৈরি আছি।”

জুনায়েদ বাবুনগরী বলেন, মুসলিম রোহিঙ্গাদের নাগরিক অধিকার ফিরিয়ে দিতে হবে। তাদের মিয়ানমারে ফিরিয়ে নিতে হবে।

“আল্লামা আহমদ শফী যদি জিহাদের ডাক দেন প্রয়োজনে কারা তৈরি আছেন হাত তুলুন।”

এ সময় সমাবেশে উপস্থিত নেতাকর্মীরা হাত তুলে তার বক্তব্যে সমর্থন জানান।

এরপর দোয়া পরিচালনার সময় হেফাজত আমির শফী বলেন, “সময় নাই কিছু বলার, আমিও অসুস্থ। আল্লাহ রোহিঙ্গা মুসলমানকে তুমি হেফাজত কর। রোহিঙ্গা নারী শিশুদের হেফাজত কর।”

সমাবেশে অন্যদের মধ্যে হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় জ্যেষ্ঠ নায়েবে আমির শাহ মহিবুল্লাহ বাবুনগরী, নায়েবে আমির আব্দুল মালেক হালিম, আবদুল হামিদ, নুর হোসাইন কাসেমী প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

Archive Calendar
Sat Sun Mon Tue Wed Thu Fri
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
31