শান্তি চুক্তির ১৯তম বর্ষপূর্তিতে রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের র্যালী,আলোচনা সভা, ফুটবল ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান
অস্ত্র দেখিয়ে চুক্তি বাস্তবায়ন কখনোই সম্ভব নয়—-দীপংকর তালুকদার
পাহাড়ে অবৈধ অস্ত্র যতদিন উদ্ধার করা হবে না ততদিন এই পার্বত্য অঞ্চলে অশান্তি চলতেই থাকবে। আর অস্ত্র দেখিয়ে চুক্তি বাস্তবায়ন কখনোই সম্ভব নয়। তাই অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের প্রাক্তন প্রতিমন্ত্রী ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কার্য নির্বাহী কমিটির সদস্য দীপংকর তালুকদার।
পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির ১৯তম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে শুক্রবার (২ডিসেম্বর) রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের উদ্যোগে র্যালী উত্তর আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, পাহাড়ের অবৈধ অস্ত্রবাজদের বিরুদ্ধে প্রশাসনকে আরো সৌচ্চার হতে হবে এবং সাধারন জনগনকে এগিয়ে আসতে হবে। তিনি বলেন, চুক্তি বাস্তবায়নের জন্য সরকারের সাথে আলাপ আলোচনায় আসুন।
সকালে শান্তির পায়রা উড়িয়ে র্যালীটি রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ প্রাঙ্গণ থেকে শুরু হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে পৌরসভা প্রাঙ্গণে গিয়ে শেষ হয়ে আলোচনা সভায় মিলিত হয়।
রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বৃষ কেতু চাকমার সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের প্রাক্তন প্রতিমন্ত্রী ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কার্য নির্বাহী কমিটির সদস্য দীপংকর তালুকদার এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে ৩৩ নং মহিলা আসনের সংসদ সদস্য ফিরোজা বেগম চিনু, রাঙ্গামাটি রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোঃ সানাউল হক এসজিপি,পিএসসি, রাঙ্গামাটি জোন কমান্ডার লেঃ কর্নেল রিদুয়ান, রাঙ্গামাটি ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক প্রকাশ কান্তি চৌধুরী, রাঙ্গামাটি অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শহিদ উল্লাহ, রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ সদস্য ত্রিদীপ কান্তি দাশ, সবির কুমার চাকমা, রেমলিয়ানা পাংখোয়া, জ্ঞানেন্দু বিকাশ চাকমা ও রাঙ্গামাটি পৌরসভা মেয়র আকবর হোসেন চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন। স্বাগত বক্তব্য দেন রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ সদস্য অংসুইপ্রু চৌধুরী।
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে দীপংকর তালুকদার বলেন, চুক্তি বাস্তবায়ন এর জন্য সরকার নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছে। ৭২টি ধারার মধ্যে ৪৮ টি ধারা বাস্তবায়িত হয়েছে বাকী ধারাগুলো চলমান রয়েছে। সরকারকে সময় দিতে হবে, গালিগালাজ, অসহযোগ আন্দোলন করে কখনো চুক্তি বাস্তবায়ন সম্ভব নয়।
আলোচনা সভায় সাংসদ ফিরোজা বেগম চিনু বলেন, আঞ্চলিক রাজনৈতিক দলগুলো পাহাড়ে উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান মেডিকেল কলেজ, বিজ্ঞান প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, যোগাযোগ ব্যবস্থাসহ সার্বিক উন্নয়নে বাঁধা দিয়ে পার্বত্য অঞ্চলের শিক্ষার্থীদের উচ্চ শিক্ষা গ্রহণে বাঁধা সৃষ্টি করছে। তিনি বলেন, সরকারের সব সুযোগ সুবিধা ভোগ করে সরকারের উন্নয়নের কাজে বাঁধা দেওয়া যুক্তিযুক্ত নয়। তিনি সংঘর্ষ না করে আঞ্চলিক দলগুলোকে চুক্তি বাস্তবায়নে সহযোগিতা করার আহ্বান জানান।
সভায় জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বৃষ কেতু চাকমা বলেন, বর্তমান সরকার পাহাড়ের গণ মানুষের কথা চিন্তা করে আন্তরিকতার সাথে আঞ্চলিক রাজনৈতিক দল জনসংহতি সমিতি জেএসএস)’র সাথে শান্তি চুক্তি করেছে। আওয়ামীলীগ সরকার চুক্তি করেছে আওয়ামীলীগ সরকারই বাস্তবায়ন করবে। এতে হতাশ হওয়ার কিছুই নেই।
এদিকে শান্তিচুক্তির ১৯তম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে বিকেল ৩টায় রাঙ্গামাটি চিংহ্লা মং মারী স্টেডিয়ামে প্রীতি ফুটবল ম্যাচ ও সন্ধ্যা ৬টায় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
