সংবাদপত্রের অনলাইন নিবন্ধন অগ্রাধিকার ভিত্তিতে :: সম্পাদক পরিষদের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে–তথ্যমন্ত্রী

মূলধারার সংবাদপত্রগুলোর অনলাইন পোর্টালের নিবন্ধন অগ্রাধিকার ভিত্তিতে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। একই সঙ্গে সংবাদপত্রের সরকারি বকেয়া বিল পরিশোধে আবারও তাগাদাপত্র দেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।

মঙ্গলবার (০১ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষ সম্পাদক পরিষদের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে তিনি এসব কথা জানান।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন সম্পাদক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ও দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিনের সম্পাদ নঈম নিজাম, প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান, কালের কণ্ঠের সম্পাদক ইমদাদুল হক মিলন, দৈনিক সংবাদের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক খন্দকার মুনিরুজ্জামান, ভোরের কাগজের সম্পাদক শ্যামল দত্ত প্রমুখ।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, সম্পাদক পরিষদের সঙ্গে আমাদের নিয়মিত বৈঠক হয়। আজ সে রকম একটি বৈঠক ছিল। আমরা সবসময় সংবাদপত্রের বিশেষ করে মিডিয়ার বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করি। আজ সে বিষয় নিয়েও আলোচনা হয়েছে। বিশেষ করে পত্রিকার অনলাইন ভার্সনগুলোকে সহসা রেজিস্ট্রেশন দেওয়া হয়। আমরাও মনে করি যেসমস্ত পত্র-পত্রিকাগুলো বের হয় বিশেষ করে প্রথম শ্রেণির পত্র-পত্রিকার অনলাইন ভার্সন রেজিস্ট্রেশন দেওয়ার ক্ষেত্রে খুব বেশি তদন্তের কিছু নেই। কারণ, এগুলো তদন্ত করেই পত্র-পত্রিকাগুলো বের হয়। আমরা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পত্রিকাগুলোর অনলাইন ভার্সনের রেজিস্ট্রেশনের ব্যবস্থা করব। মূলত আজকে এটিই আলোচনা হয়েছে।

তিনি বলেন, পত্র-পত্রিকার বিল বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে আটকে আছে, একেকটি পত্রিকার অনেক বিল। কোনো পত্রিকার ১০ কোটি, ১৫ কোটি, ২০ কোটি টাকা— একটি পত্রিকার ক্ষেত্রে এরকম। এরকম করে কয়েকশ’ কোটি টাকার বিল বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের দপ্তরে আটকে আছে। সে বিলগুলো যাতে বিভিন্ন দপ্তরগুলো ছাড় করে। আমরা আলোচনা করেছি তথ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বিভিন্ন দপ্তর-মন্ত্রণালয়ে একটি তাগাদাপত্র দেব। কারণ, ইতোপূর্বে কেবিনেট ডিভিশন থেকে সব মন্ত্রণালয় ও দপ্তরে পত্র-পত্রিকার বিল ছাড় করার জন্য তাগাদাপত্র দেওয়া হয়ছিল। সেটির আলোকে আমরাও একটি তাগাদাপত্র দিয়েছিলাম। সেটা দেওয়ার পরে কিছু বিল ছাড়ও হয়েছিল।

তথ্যমন্ত্রী আরও বলেন, যে পরিমাণ বিল বকেয়া আছে আর যে পরিমাণ ছাড় হয়েছে সেটি খুবই নগণ্য। সেজন্য আমরা আরও একটি তাগাদাপত্র দেব। আজকে সবার সঙ্গে আলোচনাক্রমে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

বকেয়া বিলগুলো কতোদিনের মধ্যে ছাড় হবে জানতে চাইলে তথ্যমন্ত্রী বলেন, সে বিষয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় বলতে পারে। তবে আমি মনে করি এ বিলগুলো সহসাই দিয়ে দেওয়া প্রয়োজন। এগুলো দিতে হবে। যেহেতু দিতে হবে, এখন করোনাকালে পত্র-পত্রিকা নানা সংকটে আছে। সুতরাং এখন দিলে সেটি কাজে বেশি লাগবে। সুতরাং দিয়ে দেওয়া প্রয়োজন।

বৈঠকে সম্পাদক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নঈম নিজাম বলেন, মূলত অনলাইন মিডিয়াটা নিয়ে সংকটটুকু ছিল। সে সমস্যাটা কীভাবে সমাধান করবে, নতুন আইনের পর সেটা কত দ্রুত করা যায় সে বিষয় নিয়ে আমাদের প্রস্তাব উপস্থাপন করার পর মন্ত্রী আশ্বস্ত করলেন— খুব দ্রুত এ সংকট নিরসন হবে। মূলধারার পত্র-পত্রিকাগুলোর অনলাইন দ্রুত নিবন্ধন দিয়ে দেওয়া হবে। কারণ, আমরা প্রথমত একটা আইনের মধ্য দিয়ে অনুমোদন নিয়ে থাকি সংবাদপত্রের। সেখানে নতুন করে আবার তদন্ত সম্পন্ন হলো। আবার দীর্ঘ সময় যাতে অতিক্রম করতে না হয় সে কারণে আমাদের প্রস্তাবনা ছিল দ্রুততম সময়ে করার জন্য। মন্ত্রী সেটা আশ্বস্ত করেছেন। দ্রুততম সময়ে আমাদের অনলাইনের অনুমোদন দিয়ে দেবেন।

তিনি বলেন, দ্বিতীয়ত হলো, সংবাদপত্র বা মিডিয়া সারা পৃথিবীতে একটা চ্যালেঞ্জের মধ্য দিয়ে অতিক্রম করছে। বাংলাদেশ এর বাইরে নয়। বাংলাদেশের সংবাদপত্র থেকে শুরু করে প্রতিটি মিডিয়া একটা কঠিন সময় অতিক্রম করছে। সেই জায়গাগুলো আমরা আলোচনা করেছি। তিনি (তথ্যমন্ত্রী) পজিটিভ দৃষ্টিভঙ্গি রাখেন। সেই জায়গা থেকে তিনি বললেন, যেখানে যে সংকট থাকে সেটা সমাধানে তিনি সচেষ্ট থাকবেন এবং আমাদের সহায়তা করবেন। আগামীতে মিডিয়ার অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে বর্তমান বিশ্ব বাস্তবতার আঙ্গিকে বাংলাদেশকেও একই রকমভাবে ব্যবস্থা নিতে হবে। একই সঙ্গে তথ্যমন্ত্রী আমাদের আশ্বস্ত করলেন বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে আটকে থাকা বিলগুলো দ্রুত ছাড় করার ব্যবস্থা নেবেন।

বৈঠকের শুরুতে তথ্যমন্ত্রী বলেন, করোনা মহামারির সময় মেইন স্ট্রিমের সমস্ত মিডিয়া অত্যন্ত দায়িত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। করোনাকালে সব ধরনের মিডিয়ারই নানা সংকট ছিল। তবে সংবাদপত্রের সংকট অনেকের চেয়ে বেশি ছিল। সংকট থাকা সত্ত্বেও সংবাদপত্রগুলো প্রকাশিত হয়েছে। পাশাপাশি সারাদেশে বিলিও হয়েছে।

মন্ত্রী আরও বলেন, আমরা দেখেছি যখনই দেশে কোনো সংকট দেখা দেয় তখন গুজব রটানোর চেষ্টা করা হয়। মানুষের মধ্যে ভয়ভীতি ছড়ানোর চেষ্টা করা হয়। কিন্তু এর বিরুদ্ধেও মেইন স্ট্রিমের গণমাধ্যম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। বড় কথা হচ্ছে, করোনাকালে গণমাধ্যম-সংবাদপত্র এবং সরকার একযোগে কাজ করেছে। এর ফলে এ সময় গুজব রটানোর চেষ্টা করা হলেও সেটি হালে পানি পায়নি।

Archive Calendar
Sat Sun Mon Tue Wed Thu Fri
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930