স্মরণকালের বৃহত্তম জানাযা শেষে : হাটহাজারীর মাদ্রাসার মসজিদ সংলগ্ন কবরস্থানে আল্লামা শাহ আহমদ শফীর দাফন সম্পন্ন

চট্টগ্রাম ব্যুরো :: বিশ্ব বরণ্য আলেমেদ্বীন হাটহাজারী মাদ্রাসার মহাপরিচালক,হেফাজত ইসলাম বাংলাদেশের আমির ও কওমি মাদ্রার শিক্ষা বোর্ডের (বেফাক) এর চেযারম্যান আল্লামা শাহ আহমদ শফীর জানাযা গতকাল শনিবার মাদ্রাসার মাঠ ও আশেপাশে সড়ক ও ভবনে অনুষ্ঠিত হয়। স্মরণকালের বৃহত্তম এ জানাযায় প্রায় চার লক্ষাধীক মুসল্লী অংশ গ্রহন করেন। জানাযায় ইমামতি করেন তাঁর বড় ছেলে মাওলানা মোহাম্মদ ইউছুপ। জানাযা শেষে হুজুরের লাশ মাদ্রাসার মসজিদ সংলগ্ন কবরস্থানে দাফন করা হয়। জানাযার পূর্বে সংক্ষিপ্ত আলোচনা অংশ গ্রহন করেন সাবেক মন্ত্রী ও হাটহাজারী থেকে নির্বাচিত সাংসদ ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, মাদ্রাসার সিনিয়র শিক্ষক ও হেফাজত ইসলাম বাংলাদেশে মহাসচিব আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী,মুফতি জসিম উদ্দিন, মাওলানা জাকারিয়া নোমান ফয়েজি ও মাওলানা মোহাম্মদ জুনায়েদ। ২টা ১১ মিনিটে জানাযার নামাজ শেষ হলে হাজার হাজার মুসল্লীকে পায়ে হেটে গন্তব্যে দিকে রাওনা হতে হয়েছে। মুসল্লীদের ঢলের কারণে মহাসড়কে গাড়ী চলাচল একেবারে বন্ধ হয়ে পড়ে। গতকাল শনিবার হুজুরের লাশবাহী গাড়ি মাদ্রাসা এসে পৌছানোর পূর্বে মাদ্রাসার সামনে চট্টগ্রাম-নাজিরহাট মহাসড়কে যানজটের আশংকার দক্ষিণে হাটহাজারী বাস স্টেশন ও উত্তরে হাটহাহারী মেডিকেল গেইট এলাকা এবং হাটহাজার- রাউজান মহানড়কের কলেজ গেইট এলাকায় জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে ব্যরিকেড দিযে গাড়ী চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। হুজুরের জানাযায় অংশ গ্রহনকারীদের যাতে কোন রকমের সমস্যা না হয় সে জন্য পর্যাপ্ত সংখ্যক পুলিশ, চার প্লাটুন বিজিবি এবং হাটহাজারীতে স্থাপিত র‌্যাব কার্যালয়ের দায়িত্বশীলেরা এবং মাদ্রাসার বিপুল সংখ্যক স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী দায়িত্ব পালন করেন। সকাল ৯.২৪ মিনিটে আল্লামা শাহ আহমদ শফীর লাশবাহী এম্বুলেন্স বিশাল গাড়ীর বহর নিয়ে হাটহাজারীতে পৌঁছান। লাশবাহী এম্বুলেন্সটি মাদ্রাসার ভিতরে প্রবেশ করলে ও যানাজায় অংশ গ্রহনের জন্য আগত গাড়ী গুলো উপজেলা সদরের বিভিন্ন সুবিধা জনক স্থানে পাকিং করে রাখা হয়। বড় হুজুরের ইন্তেকালের সংবাদ অবহিত হয়ে শুক্রবার রাত থেকে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে মুসল্লীরা জানাযায় অংশ গ্রহনের জন্য হাটহাজারীতে চলে আসেন। তাছাড়া ফজরের নামাযের পর থেকে ফটিকছড়ি-রাউজান-রাঙ্গুনিয়া উপজেলাসহ বৃহত্তর চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকায় থেকে হাজার হাজার লোকজন জানাযায় অংশ গ্রহনের জন্য আসতে শুরু করেন। বেলা বাড়ার সাথে সাথে জানাযায় অংশ গ্রহনকারী মুসল্লিদের ঢল ব্যাপক ভাবে বাড়তে থাকে। বাদ জোহর জানাযার সময় দেওয়া হলে ও ১০ টা থেকে জানাযায় অংশগ্রহনের জন্য আসা মুসল্লিরা প্রচন্ড গরমের মধ্যে মাদ্রাসার মাঠে কাতারে বন্ধী হয়ে দাড়িয়ে হুজরকে শেষ বারের মত এক নজর দেখার জন্য অসংখ্য মানুষ ভিড় করতে থাকে। ভিড় সামাল দেওয়ার জন্য মাদ্রাসার পক্ষ থেকে নিয়োজিত স্বেচ্ছাসেবক ও আইন শৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের হিমসীম খেতে হয়। মাদ্রাসা থেকে মাইকে বারবার লাশ দেখতে ভিড় না করার জন্য বলার পর ও কাউকে রোধ করা যায়নি। হুজুরের জানাযায় আগত মুসল্লীদের প্রচন্ডে গরমে পানির পিপাষা মিঠাতে বিভিন্ন সংগঠন স্বেচ্ছায় পানি খাওয়ানোর উদ্যোগ গ্রহন করেন। এমনকি অনেকে ক্ষুধার্থ মুসল্লীদের বিনামূল্যে খাবাব পরিবেশন করতে দেখা গেছে। মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে অনেকেই অস্থায়ী খাদ্যের দোকান খুলে বসেছে। মাদ্রাসার ভিতরের মাঠে জানাযায় অংশ গ্রহনকারী মুসল্লিদের স্থান সংকুলান না হাওয়ায় চট্টগ্রাম-নাজিরহাট ও হাটহাজারী-রাউজান মহাসড়ক স্থানীয় ডাক বাংলা সড়ক, হাটহাজারী রেল স্টেশন সড়ক, ফটিকা কামাল পাড়া, কাচাড়ী সড়ক,মাদ্রাসা সংলগ্ন হাতিনার দীঘি কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠে জানাযা অংশগ্রহন করতে মুসল্লিরা দাড়িয়ে পড়েন। জানাযায় অংশগ্রহনকারী মুসল্লিরা যাতে সঠিক ভাবে জানাযার নামাজ আদায় করতে পারেন সেজন্য মেডিকেল গেইট,বাস স্টেশন,কাচারী সড়ক, কলেজ গেইট প্রভৃতি এলাকায় একশ জোড়া মাইক লাগানো হয়। জানাযায় অংশগ্রহনকারী মুসল্লিদের সংখ্যা প্রশাসন ও অংশগ্রহনকারীদের অনেকেই ৪ লক্ষাধীক হবে বলে ধারণা করছেন। জানাযায় হাটহাজারী থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, বিভিন্ন এলাকার জনপ্রতিনিধিবৃন্দ, বিভাগ,জেলা ও উপজেলার প্রশাসেন উর্ধতম কর্মকর্তাবৃন্দ এবং দেশের বিভিন্ন স্থানের শীর্ষ ওলামায়ে একেরাম উপস্থিত ছিলেন।

Archive Calendar
Sat Sun Mon Tue Wed Thu Fri
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031