চট্টগ্রাম বিভাগীয় ডিজিটাল উদ্ভাবনী মেলার উদ্বোধন
স্টাফ রিপোর্টার ঃ মন্ত্রী পরিষদ বিভাগের সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম বলেছেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের আধুনিক রূপ হচ্ছে ডিজিটাল বাংলাদেশ। তাঁরই সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তোলার লক্ষ্যে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। জাতির পিতার স্বপ্ন বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এটুআই প্রোগ্রামের সার্বিক সহযোগিতায় জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে ২০১০ সাল থেকে প্রতিবছর ডিজিটাল উদ্ভাবনী মেলার আয়োজন অব্যাহত রয়েছে। সরকারের ডিজিটাইজেশন কার্যক্রম এগিয়ে যাওয়ার ফলে মানুষ ঘরে বসেই ভূমি সংক্রান্ত সকল প্রকার সেবা গ্রহণ করছে। পাশাপাশি বিদেশে গমনেচ্ছু লোকজন বিভাগীয় ও আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের মাধ্যমে পাসপোর্ট ও ভিসা সংক্রান্ত সকল ধরনের সুযোগ সুবিধা ভোগ করছে। এতে করে মানুষ আর হয়রানির শিকার হচ্ছে না। এ মেলার মাধ্যমে জনগণ ডিজিটাল সিস্টেমের প্রতি যথেষ্ট আগ্রহী হচ্ছে। সরকারি সেবা জনগণের দৌরগোড়ায় দ্রুত পৌঁছে দেয়ার যে কার্যক্রম তা এ মেলার মাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছে। মেলায় বিভাগের ১১টি জেলা থেকে আগত ৭০টির অধিক স্টলের অংশগ্রহণ জনগণকে প্রণোদিত ও অনুপ্রাণিত করেছে। তরুণ প্রজন্মের ছেলে-মেয়েরাসহ এ মেলায় যারা আসবেন তারা সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের রূপ রেখা সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে পারবেন।
গতকাল শুক্রবার বিকেল ৩টায় নগরীর এম এ আজিজ স্টেডিয়াম সংলগ্ন জিমনেশিয়াম ইনডোরে অনুষ্ঠিত তিন দিনব্যাপী বিভাগীয় ডিজিটাল উদ্ভাবনী মেলার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের আন্তরিক প্রচেষ্টায় ডিজিটাল বাংলাদেশ নামক শব্দের মাধ্যমে দেশ উন্নয়নের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। তরুণ প্রজন্মের উদ্ভাবনী শক্তির মাধ্যমে ডিজিটাল বাংলাদেশের সমন্বিত উদ্যোগ বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলায় রূপান্তরিত হচ্ছে। বাংলাদেশ এখন নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশ থেকে মধ্যম আয়ের দেশে উত্তরণের পথে। সরকারের বহুমুখী উন্নয়নের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে হলে সকলকে ডিজিটাইজেশন কার্যক্রমে সামিল হতে হবে। তাহলে ২০২১ সালের আগে এ দেশ একটি মধ্যম আয়ের ও ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত রাষ্ট্র হিসেবে বিশ্বে পরিচিতি লাভ করবে।
মন্ত্রী পরিষদ সচিব আরো বলেন, এ মেলা আয়োজনের উদ্দেশ্য হচ্ছে ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে গৃহীত কার্যক্রম সম্পর্কে জনসাধারণকে অবহিত করা। ব্যাপক প্রচারে জনসাধারণের মাঝে উৎসাহী উদ্দীপনা সৃষ্টির মাধ্যমে ডিজিটাল উদ্যোগসমূহের সাথে বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর অংশগ্রহণ নিশ্চিতকরণ এবং বাংলাদেশকে আরো এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য রূপকল্প ২০২১ ও ২০৪১ বাস্তবায়ন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত বিশেষ অতিথিরা ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের উপর গুরুত্বারোপ করেন।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাবরিনা রহমান বাঁধনের সঞ্চালনায় ও বিভাগীয় কমিশনার মো. রুহুল আমীনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত তিন দিনব্যাপী বিভাগীয় ডিজিটাল উদ্বাবনী মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন। অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (উন্নয়ন) সৈয়দা সরোয়ার জাহান। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (বহিরাগমন ও নিরাপত্তা) মোস্তাফা কামাল উদ্দিন, প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের মহাপরিচালক (প্রশাসন) ও এটুআই প্রোগ্রামের প্রকল্প পরিচালক কবির বিন আনোয়ার, এটুআই প্রোগ্রামের পলিসি এডভাইজার আনির চৌধুরী ও চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক মেজবাহ উদ্দিন।
অনুষ্ঠানে অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার শংকর রঞ্জন সাহা, অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার মো. খলিলুর রহমান, বিভাগীয় পরিচালক (স্থানীয় সরকার) দীপক চক্রবর্তী, বন্দরের পরিচালক (প্রশাসন) জাফর আলম, রাউজান উপজেলা চেয়ারম্যান এহছানুল হায়দার চৌধুরী বাবুল, সিভিল সার্জন ডা. আজিজুর রহমান সিদ্দিকীসহ বিভাগের বিভিন্ন জেলার জেলা প্রশাসক, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকসহ পদস্থ কর্মকর্তা, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও উদ্ভাবকগণ উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানের পূর্বে জিমনেশিয়াম ইনডোরের সামনে বেলুন উড়িয়ে তিন দিনব্যাপী বিভাগীয় ডিজিটাল উদ্ভাবনী মেলার উদ্বোধন করেন মন্ত্রী পরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম। সবশেষে মন্ত্রী পরিষদ সচিব অন্যান্য অতিথিদের নিয়ে বিভাগের অধীন জেলা প্রশাসনের স্টল, বিভাগীয় পাসপোর্ট অফিস, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসসহ বিভিন্ন স্টল পরিদর্শন করেন। আগামীকাল ২৪ এপ্রিল ২০১৬ ইং রোববার বিকেলে তিন দিনব্যাপী ডিজিটাল উদ্ভাবনী মেলার সমাপনী ঘটবে। মেলা প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত সকলের জন্য উন্মুক্ত থাকবে।