পাট শ্রমিকদের জন্য হাজার কোটি টাকা
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশ পাটকল করপোরেশনকে (বিজেএমসি) এক হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছেন। এ টাকা দিয়ে সারা দেশের সব রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলের কর্মীদের বকেয়া পাওনা পরিশোধ করা হবে বলে জানিয়েছেন বস্ত্র ও পাট প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম।
গতকাল সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর সচিবালয়ে নিজের দপ্তরে প্রতিমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, “বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, পহেলা বৈশাখে বোনাস পেয়ে সারা দেশের মানুষ আনন্দ উৎসব করবে, আর আমার পাট শ্রমিকরা তাদের ন্যায্য পাওনা না পেয়ে থালা-বাসন নিয়ে বসে থাকবে- এটা মানতে পারছি না।”
প্রতিমন্ত্রী বলেন, শ্রমিকদের সকল বকেয়া পরিশোধ এবং পাট কেনার জন্য প্রধানমন্ত্রী মন্ত্রিসভার বৈঠকে বিজেএমসির নামে এক হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়ার কথা বলেন।
এ বরাদ্দ পাওয়ায় বিজেএমসি-এর দীর্ঘ দিনের অচলাবস্থার নিরসন হবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি। এগুলো দীর্ঘ দিনের পাওনা। ২০০৮, ২০০৯ ও ২০১০ সালের কিছু পাওনা আছে। গত তিন বছরের পাওনা বেশি। এর মধ্যে গ্র্যাচুইটির টাকা পাওনা আছে পৌনে তিনশ কোটি টাকা, প্রভিডেন্ট ফান্ডের আছে প্রায় ৩০০ কোটি টাকা। শ্রমিকদের গত ৮ সপ্তাহের মজুরি পাওনা আছে ৪৮ কোটি টাকা।
অর্থ মন্ত্রণালয় বরাদ্দের টাকা ছাড় করলেই সব পাওনা পরিশোধ করা হবে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, “শুধু খুলনা এলাকার শ্রমিকরা নয়, দেশের সব মিলের শ্রমিকদের বকেয়া দিয়ে দেওয়া হবে।”
বকেয়া মজুরি পরিশোধসহ পাঁচ দফা দাবিতে খুলনা অঞ্চলের রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলগুলোর শ্রমিকরা গত বেশ কিছুদিন ধরে আন্দোলন চালিয়ে আসছেন। সোমবার সকাল থেকে শুরু হয়েছে তাদের সকাল-সন্ধ্যা রাজপথ-রেলপথ অবরোধ, যা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন শ্রমিকরা।
প্রতিমন্ত্রী জানান, বিজেএমসির আওতাধীন ২৭টি পাটকলের সবগুলোই এখন চালু। এসব পাটকলের ৭০ হাজার শ্রমিকের মধ্যে ৩২ হাজার স্থায়ী।
টাকা ছাড় দিতে প্রক্রিয়াগত সময় বেশি লাগে বলে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় নিজস্ব তহবিল থেকে ৪৮ কোটি টাকা মজুরি পরিশোধ করে দেবে। এর মধ্যে আট কোটি টাকা গত সপ্তাহেই দেওয়া হয়েছে।
বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী ইমাজ উদ্দিন প্রামানিক এবং মন্ত্রণালয়ের সচিব এম কাদের সরকারসহ কর্মকর্তারা সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।