পোশাকশ্রমিককে ধর্ষণ : তিনজন গ্রেপ্তার
টাঙ্গাইলের ধনবাড়ীতে একটি বাসে এক পোশাকশ্রমিককে গণধর্ষণের অভিযোগে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শুক্রবার ঢাকাগামী ‘বিনিময় পরিবহনের’ একটি যাত্রীবাহী বাসে ওই নারী শ্রমিক ধর্ষিত হয় বলে ধনবাড়ী থানার ওসি মো. মজিবর রহমান জানিয়েছেন।
গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিরা হলেন, বাসচালক হাবিবুর রহমান ওরফে নয়ন (৩৪), চালকের সহযোগী খালেক আলী ওরফে ভুট্টো (৩০) এবং বাসের তত্ত্বাবধায়ক (সুপারভাইজার) রেজাউল করিম। বাসটিও জব্দ করা হয়েছে।
এদিকে পোশাকশ্রমিককে ধর্ষণের আলামত পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা। গতকাল শনিবার টাঙ্গাইল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তাঁর ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ওই পোশাকশ্রমিক সাংবাদিকদের বলেন, গত বৃহস্পতিবার তিনি ধনবাড়ীর দত্তবাড়ি গ্রামে এক আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিলেন। গত শুক্রবার ভোরে সেখান থেকে তিনি গাজীপুরের শফিপুরে কর্মস্থলে ফিরতে ধনবাড়ী বাসস্ট্যান্ডে যান। সেখানে তিনি ঢাকাগামী একটি বাসে ওঠেন। কিন্তু ওই বাসে তিনি ছাড়া আর কোনো যাত্রী ছিল না। কিছু দূর যাওয়ার পর বাসচালক, চালকের সহযোগী ও তত্ত্বাবধায়ক গামছা দিয়ে তাঁর মুখ বেঁধে তাঁকে ধর্ষণ করেন। এরপর তাঁকে মধুপুর উপজেলা সদর থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে ময়মনসিংহ সড়কে নামিয়ে দেওয়া হয়। পরে তিনি স্বামীর সঙ্গে যোগাযোগ করেন। এরপর তিনি সেখান থেকে বাসে গাজীপুরের শফিপুরে চলে যান। পরে তাঁর স্বামী এ ঘটনা টাঙ্গাইলের কয়েকজন পরিবহন শ্রমিকনেতাকে জানান। শ্রমিকনেতারা তাঁদের টাঙ্গাইল পরিবহন শ্রমিক কার্যালয়ে ডেকে পাঠান। সেখানে নেতারা কয়েকজন পরিবহন শ্রমিককে হাজির করেন। তাঁদের মধ্য থেকে তিন ধর্ষককে চিহ্নিত করা হয়।
ওই পোশাক শ্রমিক জানান, শ্রমিকনেতারা বিষয়টি মামলা না করে সালিসি বৈঠকে মীমাংসার জন্য চাপ দেন। কিন্তু তিনি ও তাঁর স্বামী তা মানেননি। পরে তাঁকে টাঙ্গাইল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। পরে রাতেই তিন ধর্ষক ও ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার তৎপরতায় যুক্ত থাকা ছয় শ্রমিকনেতাকে আসামি করে তাঁর স্বামী ধনবাড়ী থানায় মামলা করেন। পরে পুলিশ বাসচালক, চালকের সহযোগী ও তত্ত্বাবধায়ককে গ্রেপ্তার করে।
টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার সালেহ মোহাম্মদ তানভীর বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার তিনজন ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। তাঁদের রিমান্ডে নিয়ে আরও ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
এদিকে ওই পোশাক শ্রমিকের ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্নকারী টাঙ্গাইল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের গাইনি বিভাগের চিকিৎসক রেহানা পারভিন বলেন, তাঁরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ধর্ষণের আলামত পেয়েছেন।